কালিয়াচক কলেজ নির্বাচনকে ঘিরে গুলি-বোমা ছোড়ার ঘটনার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ফের ওই এলাকাতেই আবার বোমা-গুলি নিয়ে তাণ্ডব চালানো হল। গত ২৭ জানুয়ারি মালদহে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে কালিয়াচক কলেজের সামনে গুলির লড়াই চলে।
রবিবার ওই এলাকা থেকে চার কিলোমিটার দূরে নওদা যদুপুর পঞ্চায়েতের ভাগলপুর এলাকায় সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই বোমা-গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। জাতীয় সড়কের দু’পাশ থেকে দুই গোষ্ঠী একে অপরের দিকে গুলি-বোমা ছুড়তে থাকে। জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। শেষ পর্যন্ত র্যাফ নামিয়ে বেলা ১১টা নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে প্রশাসন। |
তৃণমূলের অভিযোগ, কংগ্রেসের সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা এ দিন তাঁদের কর্মী সমর্থকদের আক্রমণ করায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে বোমা-গুলিতে কেউ হতাহত হননি বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে। তৃণমূলের অভিযোগ, পুলিশ লাঠি চালানোয় তাঁদের পাঁচ কর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, গোটা ঘটনার জন্য দায়ী তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠী।
এ দিন দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে শতাধিক রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের দাবি, “জাকির শেখ নামে এক কংগ্রেস কর্মী ও তাঁর দলবলই এই ঘটনার জন্য দায়ী। জাকির সম্প্রতি তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে।” মন্ত্রী বলেন, “পুলিশ কিন্তু তৃণমূল কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে।” তাঁর দাবি, পুলিশের গুলি থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ। দোষী পুলিশ অফিসারদের শনাক্ত করে তাঁদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তিনি। |
তবে দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “কংগ্রেস এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। বকুল শেখের ভয়ে নওদা যদুপুরে কংগ্রেস এ বার প্রার্থীই দিতে পারেনি। তৃণমূল নিজেদের গোষ্ঠী সংঘর্ষ ধামাচাপা দিতে কংগ্রেসের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। জাকিরও তৃণমূলের সদস্য।”
জাকির নিজেও দাবি করেন, “আমি তৃণমূল সদস্য। বকুল শেখই এ দিন হামলা করেছে।” বকুল শেখের অবশ্য অভিযোগ, জাকিরই এদিন দলীয় কর্মী ও গ্রামবাসীদের উপর হামলা করেছেন।
পুলিশ এ দিন কোনও গুলি চালায়নি বলে দাবি করেছেন জেলার পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দু’টি গোষ্ঠী একে অপরকে লক্ষ্য করে যথেচ্ছ বোমা, গুলি ছুড়েছে। পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে পুলিশ কোনও গুলি চালায়নি।” পুলিশ সুপার জানান, এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে। |