তৃণমূলের সভার পরেই পুলিশের জালে সেই বরুণ
লাকায় শাসক দল সমাবেশ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধরা পড়ল আমতা-গণধর্ষণ মামলার মূল অভিযুক্ত বরুণ মাকাল।
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার রাতে হাওড়ার শ্যামপুরে গাদিয়াড়ার কাছে শিবপুর গ্রাম থেকে বরুণকে ধরা হয়। এখানেই এক আত্মীয়ার বাড়িতে লুকিয়ে ছিল সে। এর ফলে আমতার গ্রামে দুই বধূর ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত আট জনকেই গ্রেফতার করা গেল। রবিবার বরুণকে উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে তাকে দশ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আদালতে লক-আপের ভিতরে বরুণ হাতজোড় করে দাঁড়িয়েছিল। তার হয়ে এ দিন কোনও আইনজীবীও ছিলেন না আদালতে। হাওড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুখেন্দু হীরা বলেন, “আগে ধরা সাত জনকে প্রাথমিক ভাবে জেরা করে জানা গিয়েছে, বরুণই সবাইকে জুটিয়ে এই হামলা চালিয়েছিল। তদন্তের স্বার্থে এখন এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।” তৃণমূলের হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি তথা বিধায়ক পুলক রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, পুলিশ যেন তদন্তে কোনও ফাঁক না রাখে। আমরাও পুলিশকে বারবার জানিয়েছিলাম, অভিযুক্তরা যেন ছাড়া না পায়। শেষ পর্যন্ত সকলেই তো ধরা পড়ল। অথচ বিরোধীরা লাগাতার অপপ্রচার করছিলেন।”
রবিবার উলুবেড়িয়া আদালতের পথে বরুণ মাকাল। সুব্রত জানার তোলা ছবি।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি বরুণ ও তাঁর দলবল রাত ১টা আমতার গ্রামে এক বধূ ও তাঁর জেঠশাশুড়িকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। দুই নির্যাতিতাই বর্তমানে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। পরিবারের পক্ষ থেকে বরুণ-সহ আট জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, মারধর এবং লুঠপাটের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সাত জন ধরা পড়লেও পলাতক ছিল মূল অভিযুক্ত বরুণ।
বরুণ এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত হওয়ায় দলের অন্দরে এই ঘটনায় অস্বস্তি ছড়ায়। বছর পঁচিশের ওই যুবক গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে ভোটেও দাঁড়িয়েছিল। যদিও ভোটে সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থীর কাছে হেরে যায় সে। নির্যাতিতা বধূর স্বামী অভিযোগ করেছিলেন, তৃণমূলই বরুণকে লুকিয়ে রেখেছে। সিপিএম এবং বিজেপিও একই অভিযোগ এনেছিল এবং দু’দলই নির্যাতিত পরিবারকে নিজেদের সমর্থক বলে দাবি করেছিল।
শনিবার আমতা সিটিসি বাসস্ট্যান্ডে সভা করে তৃণমূলের নেতারা জানিয়ে দেন, অভিযুক্তদের কাউকে ছাড়া হবে না। একই সঙ্গে নির্যাতিতার পরিবারের দুই সদস্য ওই মঞ্চে হাজির থেকে দাবি করেন, তাঁদের পরিবার বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে, গণধর্ষিতা দুই মহিলার নাম ওই সভায় প্রকাশ্যে ঘোষণা করে বিতর্কের মুখে পড়েন তৃণমূলের নেতারা।
এই সমাবেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ধরা পড়ল বরুণ। পুলিশ জানিয়েছে, বরুণ পালিয়ে গিয়ে প্রথমে আশ্রয় নিয়েছিল বাগনানের মুকুন্দদিঘিতে তার বান্ধবীর বাড়িতে। পুলিশ সেখানে হানা দেওয়ার আগেই সে চম্পট দেয় সেখান থেকে। শিবপুরে এক আত্মীয়ার বাড়িতে গত দু’দিন ধরে ছিল। পুলিশের দাবি, শনিবার রাত আড়াইটে নাগাদ সেখানে হানা দিয়ে তাকে ধরা হয়। রবিরার সকালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বরুণ দাবি করে, “আমি নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.