|
|
|
|
ডিজাইনার ডাক্তার
হাসপাতাল পরিচালনার ভার এক হাতে। অন্য হাতে স্কেচবুক। শাড়ির নকশা করছেন
ডা. রূপালি বসু। আজ শুরু প্রদর্শনী। খোঁজ দিচ্ছেন অরিজিৎ চক্রবর্তী। |
ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার, হয়ে গেলেন সিইও। কিংবা কলেজের ডাকসাইটে অধ্যাপক চলে এলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায়। এমনকী ডাক্তারি ছেড়ে সিনেমা পরিচালনায়। কেরিয়ারের এমন বাঁক তো দেখাই যায়।
কিন্তু হাসপাতাল পরিচালনা আর স্কেচবুক একসঙ্গে সামলানো চট করে চোখে পড়ে কি? নাকি বায়োলজির ড্রয়িংয়ের অভিজ্ঞতাটা স্কেচ করার সময় কাজে লাগছে? প্রশ্নটা যে এখন মাঝেমাঝেই শুনতে হচ্ছে অ্যাপেলো গ্লেনেগলস্-এর সিইও ডা. রূপালি বসুকে, হাসিতে তা স্পষ্ট। আজ এবং কাল তাজ বেঙ্গলের ওরিয়েন্ট হলে প্রদর্শিত হবে তাঁর ডিজাইন করা শাড়ি।
বছর দুই ধরে নানা জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছেন শাড়ির ফেব্রিক পিওর সিল্ক, শিফন, তসর, ক্রেপস। তার পর হাতে এমব্রয়ডার করা হয়েছে শাড়িগুলো। কয়েকটা শাড়ির নকশা গুজরাট থেকে করালেও, বেশির ভাগ শাড়িতে হাত লাগিয়েছেন বারাসত, হাওড়ার কারিগরেরা।
ডিজাইনার শড়ির প্রদর্শনী তো হয়েই থাকে, রূপালির সংগ্রহের চমকটা কোথায়? বললেন, “বেশ কিছু শাড়ি তৈরি হয়েছে জেন ওয়াইয়ের জন্য। পার্টি বা ক্লাবে শাড়ি পরে যাওয়া তো এখন ‘ইন’। বিশেষ করে, ওদের জন্যই একটা সেকশন রাখছি, ‘কাট পেস্ট’।” জেন ওয়াইকে টানতে জেন ওয়াইয়ের ভাষা? হাসতে হাসতে বললেন, “খানিকটা তাই। এই শাড়িগুলোতে বিভিন্ন ধরনের শাড়ি কেটে, অন্য একটা শাড়িতে জুড়ে দিয়েছি। মানে বেনারসির পাড় জুড়ে দিয়েছি শিফনের বডিতে। ফলে হাল্কা হয়েছে। অল্প বয়সিদের ক্যারি করতেও সুবিধা হবে।”
কিন্তু হাসপাতাল পরিচালনার ব্যস্ত শিডিউলের মধ্যে ডিজাইনের স্কেচ করার সময় বের করেন কী ভাবে? “ওটা শিখেছি ডাক্তারি পড়তে পড়তেই। কত বার টানা দু’দিন কাজ করেছি তখন। এখনও প্রায় আঠারো ঘণ্টা কাজ করি, তার ফাঁকেই সময় বের করে নিই। বোর্ড মিটিংয়ের মাঝে হয়তো মিনিট পনেরো সময় পেলাম। সেই সময়ে একটা শাড়ির স্কেচ করে নিলাম,” বলছিলেন রূপালি।
কী দরকার এক সফল ডাক্তার, এক সফল সিইও-র সম্পূর্ণ অন্য একটা পেশায় উঁকি দেওয়ার? উত্তর পেতে দেরি হল না, “ইচ্ছেটা অনেক আগে থেকেই ছিল। নিজের জন্য শাড়ির ডিজাইন করতাম। অনেকে আমার কাছ থেকে টিপস্ও নিত। তবে শাড়ির এগজিবশন করার ইচ্ছেটা বন্ধুদের চাপেই।” কালেকশনের সবক’টা শাড়িই তাঁর ভাষায় ‘রেডি টু ওয়্যার’। নতুন করে ফলস লাগানোর কোনও ঝক্কি নেই। যদিও ব্লাউজ বা অন্য কোনও অ্যাকসেসরিজ এখনই ডিজাইন করছেন না। সেগুলো ‘নিজেদের পছন্দ মতো’ কিনে বা বানিয়ে নিক ক্রেতারা, সেটাই তিনি চান।
কলকাতায় এখন তো ভাল ডিজাইনারের অভাব নেই। সেক্ষেত্রে তাঁর ইউএসপিটা কী? “ঝুলুরি,” সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিলেন রূপালি। বললেন, “শাড়ির প্রান্ত থেকে গোছা গোছা সুতো বেরিয়ে থাকবে। এটা আমার নিজের খুব পছন্দের। আমার কালেকশনেও তাই রেখেছি। আমি নাম দিয়েছি ঝুলুরি। ওটাই আমার ট্রেডমার্ক।” এই সব শাড়ির দাম পাঁচ হাজার থেকে পনেরো হাজারের মধ্যে। রূপালির মতে কর্পোরেট কর্মী থেকে শিক্ষিকা সবাই কিনতে পারবেন, শাড়ির দামটা এমনই।
ডাক্তারি, অ্যাডমিনস্ট্রেশন সামলে শাড়ির কালেকশন। এরপর কি নিজের শাড়ির লেবেল? “এই এগজিবিশনের রেসপন্সটা দেখি,” একটু ভেবে উত্তর দিলেন ডাক্তার কাম সিইও কাম ডিজাইনার রূপালি বসু। |
|
|
|
|
|