রাজ্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দার্জিলিঙের উন্নয়নের সামিল হলেও পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে তাঁরা যে সরেননি, সে কথা ফের জনসভায় জানিয়ে দিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। শনিবার ডুয়ার্সের নাগরাকাটার শিপচুতে দলীয় সভায় মোর্চা সভাপতি এ কথা জানান। তিনি বলেন, “আমরা পাহাড়ের সার্বিক উন্নয়ন চাই। সে জন্য জিটিএ গড়া হয়েছে। রাজ্য সরকার সাহায্য করছে বলে আমরাও সহযোগিতা করছি। তা বলে কারও ‘একনায়কতন্ত্র’ মেনে নেব না।”
২০১১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গোর্খাল্যান্ডের দাবিতেই শিপচুতে মোর্চার অবস্থানকে কেন্দ্র করে গোলমাল বাধে। পুলিশ এবং মোর্চার সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় তিন মোর্চা সমথর্র্কের মৃত্যু হয়। নিহত সমর্থক বিনীতা রাই, নীতা খাওয়াস এবং বিকি লামা স্মৃতিতে প্রতিবছরই ‘বলিদান দিবস’ পালন করে মোর্চা। এ দিন সেই সমাবেশেই গুরুঙ্গ বলেন, “আমরা উন্নয়নে মন দিয়েছি বলে গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সরিনি। মনে রাখতে হবে, গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সামনে রেখেই আমাদের দলের জন্ম। সেটা কোনও দিন ছাড়তে পারব না।” তবে, গুরুঙ্গ এ দিন পাহাড়ে একের পর এক বোর্ড গঠনের প্রসঙ্গ টেনে নাম না করে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন। গুরুঙ্গের দাবি, “এ ভাবে আলাদা বোর্ড গড়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা সকলকে নিয়ে উন্নয়ন করে দেখাব। বিভাজনের রাজনীতি করা চলবে না।” |
মোর্চার অন্দরের খবর, সামগ্রিক প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে দলের সভাপতি সহ শীর্ষ নেতারা পাল্টা প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে ঠিক হয়, তাঁরা যে গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সরেননি, সেটা স্পষ্ট করে সর্বত্র জানানো হবে। তাতে গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে আন্দোলনের রাশ যাতে পাহাড়ের অন্য কোনও দল সহজে নিতে পারবে না। উপরন্তু, এখনই যাতে হুটহাট আন্দোলন না-হয়, সেই ব্যাপারেও পাহাড়ের যুব সমাজকে সতর্ক করার সিদ্ধান্তও নেন মোর্চা নেতারা। এ দিন মোর্চা সভাপতি বলেছেন, “কেউ আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের কথা বললেই হুটহাট নামার দরকার নেই। মনে রাখতে হবে, হিসেব করে, সুনির্দিষ্ট কৌশল নিয়ে না এগোলে কাজের কাজ এগোবে না। বরং নানা ভাবে ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। আমরা আগে পাহাড়ের সামগ্রিক উন্নয়ন করে নিই। যথা সময়ে আলাদা গোর্খাল্যান্ডের জন্য যা করণীয় তা-ই করব।”
সেই প্রসঙ্গ তুলে শিপচুর সমাবেশ থেকে মোর্চা সভাপতি জানিয়ে দেন, তাঁরা জিটিএ-তে তরাই-ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির দাবি থেকেও সরেননি। তাঁর কথায়, “জিটিএ-এর আওতায় তরাই-ডুয়ার্সকে আনার জন্য আমরা লাগাতার প্রচেষ্টা চালাব।” শিপচুর মঞ্চে ছিলেন নাগরাকাটার কংগ্রেস বিধায়ক যোশেফ মুণ্ডাও। কেন? যোশেফ বলছেন, “নিছকই সৌজন্য।” |