লক্ষ্য ছোট শহর, গ্রাম
বাজার বাড়াতে অনলাইন ভ্রমণ সংস্থার হাতিয়ার আঞ্চলিক ভাষা
নোয়াপাড়া যা, নিউ ইয়র্কও তা-ই।
মুঠোবন্দি মোবাইলে ইন্টারনেট সেঁধিয়ে যাওয়া এই দুনিয়ায় দু’জায়গাতেই একই ভাবে পৌঁছে যাওয়া উচিত তথ্য, পণ্য আর পরিষেবা। অনলাইনে বরাত দিয়ে কেনাকাটা সেরে ফেলার কথা মফস্সল এমনকী প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষেরও। যদি না ওয়েবসাইটে ইংরেজি পড়ার খামতি তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
তাই এই সমস্যার উত্তর খুঁজেই আপাতত বিশ্বজোড়া অনলাইন বাজার ধরার ঘুঁটি সাজাচ্ছে দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলি। স্রেফ ইংরেজি না-জানা যাতে নেট-প্রযুক্তি ব্যবহারে বাধা হয়ে না-দাঁড়ায়, তা নিশ্চিত করতেই ভারতে দিন দিন আরও বেশি করে আঞ্চলিক ভাষার দিকে ঝুঁকছে তারা। আঞ্চলিক ভাষা-ভাষীদের নিজেদের গ্রাহক করতে অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন পরীক্ষা চালাচ্ছে গুগ্ল। আঞ্চলিক ভাষায় ই-মেল চালাচালিতে জোর দিয়েছে ইয়াহু ইন্ডিয়া। এ বার সেই পথেই পা বাড়াচ্ছে দেশের বৃহত্তম ভ্রমণ পোর্টাল ‘মেক মাই ট্রিপ ডট কম’-ও। ইতিমধ্যেই বাংলা-সহ চারটি ভাষার অ্যাপ (মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন) তৈরির কাজে হাত দিয়েছে তারা।
রেল-বিমানের টিকিট কেনা থেকে হোটেল বুকিং বা প্যাকেজ ট্যুর অনলাইনে বেড়ানো সংক্রান্ত হরেক পরিষেবা দেওয়া এই সংস্থাটি অ্যাপ তৈরি করছে বাংলা, গুজরাতি, তামিল এবং হিন্দিতে। হিন্দি তো এমনিতেই রাষ্ট্রভাষা। তাতে কথাও বলেন দেশের এক বিরাট সংখ্যক মানুষ। তার বাইরে বাকি তিন ভাষা-ভাষীদের আবার সময়-সুযোগ পেলেই ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ার ব্যাপারে যথেষ্ট খ্যাতি। তাই ভেবেচিন্তেই প্রাথমিক ভাবে এই চার ভাষাকে বাছা হয়েছে বলে সংস্থার দাবি।
বছরে ৪২% হারে ব্যবসা বাড়াতে থাকা মেক মাই ট্রিপ-এর প্রধান দীপ কালরা জানান, মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারের হাত ধরে বদলে যাচ্ছে অনলাইন ব্যবসার মুখই। এক লহমায় দুনিয়ার যাবতীয় তথ্য চলে আসছে হাতের মুঠোয়। কোনও বাধা থাকছে না সিঙ্গুরে বসেই সিঙ্গাপুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা ছকতে। তাই সব সংস্থাই চেষ্টা করছে ওই প্রযুক্তির ব্যবহার যতটা সম্ভব সহজ করে তুলতে। যাতে তার ভরপুর ফায়দা তুলতে পারেন ছোট-মাঝারি শহর, এমনকী গ্রামের মানুষও।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন এ দেশে মোবাইলে নেট ব্যবহার করেন অন্তত এক কোটি মানুষ। কালরা জানাচ্ছেন, মেক মাই ট্রিপের ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারেন যাঁরা, তাঁদের ২০ শতাংশই তা করেন মোবাইল থেকে। ১৩% লেনদেনও হয় মোবাইলে। বছর দেড়েক আগেও যা ভাবা যেত না। থ্রিজি প্রযুক্তি এসে পড়ার পর আগামী তিন বছরে এই ব্যবসা ৫০% বাড়বে বলে তাঁর দাবি।
কিন্তু তার জন্য আঞ্চলিক ভাষায় জোর কেন?
সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের মতে, ছোট শহর বা গ্রামের মানুষ মানেই যে তাঁর রেস্তর জোর কম, এমনটা নয়। অনেক সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে (এমনকী বিদেশেও) বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। তার জন্য তথ্য খোঁজেন ইন্টারনেটে। কিন্তু সে পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ইংরেজিতে তেমন স্বচ্ছন্দ না-হওয়ার সমস্যা।
কালরা-ও বলছেন, “রেল বা বিমানের টিকিট কাটার জন্য তবুও অল্প ইংরেজি জ্ঞানেই কাজ চলে। কিন্তু হোটেল বুকিংয়ের আগে মাতৃভাষায় তার বিবরণ, সুযোগ-সুবিধা, সেখানে আগে পা রাখা বিভিন্ন জনের মতামত (রিভিউ) জানতে চান অনেকে। সে কথা মাথায় রেখেই আঞ্চলিক ভাষার অ্যাপে এই জোর।” তিনি জানান, আপাতত ১০% হোটেল বুকিং অনলাইনে হয়। বিমানের টিকিট কেনার পর ব্যবসার নিরিখে যা সব থেকে বেশি। আঞ্চলিক ভাষার অ্যাপ বাজারে এলে তা বহু গুণ বাড়বে বলে তাঁর দাবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.