|
|
|
|
ফর্ম না পেয়ে অবরোধ, পুলিশের লাঠি এগরায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা |
স্কুল সার্ভিস কমিশনের ফর্ম নিয়ে ফের ধুন্ধুমার এগরায়। সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে ঠায় দাঁড়িয়েও মিলল না স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর শিক্ষক নিয়োগের ফর্ম। উত্তেজিত কর্মপ্রার্থীরা এগরা-কাঁথি রাস্তা অবরোধ করায় নাকাল হলেন নিত্যযাত্রীরা। অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠি চার্জেরও অভিযোগ উঠল। লাটে ওঠে পোস্ট অফিসের স্বাভাবিক কাজকর্মও। |
|
এগরা-কাঁথি রাস্তা অবরোধ কর্মপ্রার্থীদের। |
এগরা মহকুমার অধীনে পাঁচটি ব্লক রয়েছে। এগরার প্রধান পোস্ট অফিস ছাড়াও এগরা মহকুমায় অমর্ষি, বালিঘাই, পানিপারুল ও পটাশপুর পোস্ট অফিস থেকেও এসএসসির ফর্ম দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এগরা পোস্ট অফিস ছাড়া আর কোথাও সেভাবে ফর্ম বিলি করাই হয়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এগরা পোস্ট অফিসে ফর্ম তোলার ভিড় বেড়ে গিয়েছে। ফর্ম তোলা ও জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামী মঙ্গলবার। মাঝে রবিবার পোস্ট অফিস বন্ধ থাকায় হাতে সময় কম। তাই শুক্রবার ভোর থেকে এগরা মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তের কর্মপ্রার্থীরা ফর্মের জন্য লাইনে দাঁড়ান। অনেকে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পোস্ট অফিসের সামনে ফর্মের জন্য লাইন রাখতে চলে আসেন। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টায় পোস্ট অফিস খোলার পর এসএসসির ফর্ম নেই বলে ঘোষণা করা হয়। পালপাড়ার এক কর্মপ্রার্থী অসীম দাস বলেন, “ভোর ৬টা থেকে ফর্মের জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। পোস্ট অফিস খোলার পর নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় ফর্ম পাওয়া যাবে না।”
পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষের কাছে কখন ফের ফর্ম পাওয়া যাবে জিজ্ঞাসা করা হলে কোনও সদুত্তর মেলেনি। ওই ঘটনায় উত্তেজিত কর্মপ্রার্থীরা এগরা-কাঁথি রাস্তা অবরোধ করেন। অবরোধ তোলার জন্য পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধ চলার পর এগরা পুরসভার পুরপ্রধান স্বপন নায়েক, স্থানীয় তৃণমূল নেতা জয়ন্ত সাউ, এগরা থানার ওসি মদনমোহন রায় ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়। পুরপ্রধান বলেন, “ফর্ম তুলতে যারা এসেছিলেন, তাঁদের ৬৫০টি পুরসভার স্ট্যাম্প লাগানো কুপন দেওয়া হয়েছে। পরে ওই কুপন দেখিয়ে তাঁরা ফর্ম তুলতে পারবে।” যদিও ওই কুপনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এগরা পোস্ট অফিসের আধিকারিক গীতা বাকরা। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে ফর্ম না থাকায় তা দেওয়া যায়নি। ফর্ম এলেই ফের দেওয়া হবে। তবে পুরপ্রধানের দেওয়া কুপনের ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।”
কর্মপ্রার্থীদের উপর পুলিশের লাঠিচালনার ঘটনার নিন্দা করেন জয়ন্ত সাউ। পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত এক কর্মপ্রার্থী বলেন, “অন্যায়ভাবে ওরা ফর্ম দেয়নি। পরিবর্তে পুলিশের লাঠিও খেতে হল।” অনলাইনে ফর্ম তোলা প্রসঙ্গে পটাশপুরের এক কর্মপ্রার্থী বলেন, “অনলাইনে ফর্ম তোলার বিষয়ে কিছুই জানতাম না। এখানে এসে বিষয়টি শুনলাম। এখন কী করব জানিনা।” এই ঘটনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পোস্ট অফিসের স্বাভাবিক কাজকর্মও। |
|
অবরোধ সরাতে পুলিশের লাঠিচার্জ। ছবি: কৌশিক মিশ্র। |
গীতা বাকরা বলেন, “পোস্ট অফিসের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা ফর্ম নেই বলে নোটিস লাগিয়ে দিই। কোনও কাজও করা যাচ্ছে না। এমনকী সরকারি চিঠিপত্র নিয়ে যেতে ওরা বাধা দেওয়ায় সব পড়ে রয়েছে।” তিনি জানান, ফর্ম তোলা ও জমা নেওয়ার দিন আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হবে বলে শুনেছি। তবে কোনও লিখিত নির্দেশিকা আসেনি।” পোস্ট অফিসের কাঁথি ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার অসিত মোহান্তি বলেন, “আমাদের কাছে কোনও ফর্ম নেই। ফর্ম এলেই সব অফিসে পাঠানো হবে।” ফর্ম নিয়ে অশান্তির জন্য তিনি কমিশনের কম ফর্ম পাঠানোকেই দায়ি করেন। জেলা শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মামুদ হোসেন বলেন, “কমিশন পর্যাপ্ত সংখ্যক ফর্ম না পাঠানোয় হয়রানির শিকার হচ্ছেন কর্মপ্রার্থীরা। এবিষয়ে কমিশন ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।”
মোবাইলে বারবার চেষ্টা করেও এসএসসির পশ্চিমাঞ্চল রিজিয়নের চেয়ারম্যান সুজিত চট্ট্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |
|
|
|
|
|