বধূকে টেনে নয়ানজুলিতে, বাঁচালেন পাড়ার মহিলারা
ড় রাস্তার পাশে নয়ানজুলিতে এক বধূকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল পাড়ারই যুবক। জানলা দিয়ে তা দেখতে পেয়ে এক মহিলা ছুটে আসেন। তাঁর চিৎকারে জড়ো হয়ে যান পাড়ার অন্য মেয়ে-বৌরাও। বেগতিক বুঝে ছেলেটি পালিয়েছিল। পরে ফোনে ‘মা অসুস্থ’ বলে ডেকে এনে গ্রামবাসীই তাকে গ্রেফতার করান।
বুধবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে ভাদুড়িয়া গ্রামের ঘটনা। এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে রবিউল বিশ্বাস নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।” বৃহস্পতিবার বসিরহাট এসিজেএম আদালতে তোলা হলে তাকে তিন দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। শাঁড়াপুল প্রাথমিক হাসপাতালে ওই বধূর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশি টহলদারিও রয়েছে।
গত বছরই ভাদুড়িয়ার বছর ষোলোর ওই মেয়েটির বিয়ে হয় স্বরূপনগরের দত্তপাড়া গ্রামে। এ বছর তার মাধ্যমিক দেওয়ার কথা। পড়াশোনা করার জন্য বেশ কিছু দিন বাপের বাড়িতে থাকছিল সে। বুধবার শ্বশুরমশাই তাকে নিতে আসেন। সে সময়ে তার মা পাশের গ্রামে মামার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে দেখা না করে সে শ্বশুরবাড়ি যায় কী করে? রাত ১০টা নাগাদ মেয়েটি মাকে ডাকতে বাড়ি থেকে বেরোয়।
রক্ষাকারী মহিলারা। ছবি: নির্মল বসু।
মেয়েটির অভিযোগ, “কিছুটা যাওয়ার পরেই রবিউল আমার মুখে টর্চ মারে। প্রতিবাদ করলে সে আমার মুখ চেপে ধরে পাশে একটি নির্জন বাগানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি ওকে চড় মেরে হাত ছাড়িয়ে বড় রাস্তার দিকে দৌড়ই। রবিউলও পিছু নেয়। বড় রাস্তার পাশে একটা খানার কাছে আমাকে ফেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। আমি চিৎকার শুরু করি।”
রাস্তার পাশেই বাড়ি কণিকা দাসের। জানলা দিয়ে ঘটনাটি দেখে তিনি ছুটে বেরিয়ে আসেন। তাঁর কথায়, “চিৎকার ও দৌড়োদৌড়ি দেখে প্রথমে মনে হয়েছিল, কেউ কাউকে খুনের চেষ্টা করছে। বেরিয়ে দেখি, পাড়ার একটা মেয়েকে রাস্তার পাশে ফেলে নির্যাতন করার চেষ্টা করছে পাড়ারই একটি ছেলে।” তাঁকে এগিয়ে আসতে দেখেই রবিউল খুনের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। কণিকাদেবী বলেন, “তাতে আমার মাথা আরও গরম হয়ে যায়। আমি চিৎকার করতে শুরু করি। তা শুনে আশপাশের বাড়ি থেকে মহিলারা বেরিয়ে আসেন। ধরা পড়বে বুঝে রবিউল পালায়।”
তত ক্ষণে গ্রামের পুরুষেরাও বেরিয়ে এসেছেন। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ছেলেটি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালাতে পারে, এই আশঙ্কাও ছিল। শেষে পরিচিত এক জনকে দিয়ে রবিউলের মোবাইলে ফোন করিয়ে বলা হয়, তার মা অসুস্থ। সে যেন তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসে। ভোরে ভাদুড়িয়া সর্দারপাড়ায় ফিরতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। আক্রান্ত বধূ বলেন, “স্কুলে যাওয়ার পথেও ছেলেটিকে দেখেছি। ওর চাউনি দেখে ভয় লাগত। মাকে জানিয়েওছিলাম। আজ পাড়ার সবাই জড়ো না হলে কী হত, জানি না।”
গত ২ ফেব্রুয়ারি স্বরূপনগরেরই একটি পার্কে নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তার প্রেমিক ও তার তিন সঙ্গীর বিরুদ্ধে। একের পর এক এই ধরনের ঘটনায় এলাকার মহিলারা ক্ষুব্ধ। কণিকাদেবী বলেন, “মেয়েদের আরও সতর্ক তো হতেই হবে, শয়তানদের ধরতে আরও সক্রিয় হওয়াও দরকার।” মেয়েটির শ্বশুর বলেন, “কণিকাদেবী ও অন্য মহিলারা মিলে যে ভাবে বৌমাকে রক্ষা করেছেন, ওঁদের অজস্র ধন্যবাদ।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.