জঙ্গলমহলে এ বার ক্রীড়াচর্চার কেন্দ্র
ছেলেমেয়েদের খেলাধুলোয় উৎসাহ দিতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা সীমানা ঘেঁষা ২১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্রীড়া চর্চা কেন্দ্র গড়তে উদ্যোগী হল রাজ্য ক্রীড়া দফতর। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলোয় উৎসাহ দিতে জঙ্গলমহলে প্রতিযোগিতার আয়োজন হচ্ছে। তাতে উৎসাহিতও হচ্ছে স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। কিন্তু সর্বত্র ক্রীড়াচর্চার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। ফলে মহিলা খেলোয়াড়দের চরম সমস্যায় পড়তে হয়। জেলার প্রশাসনিক কর্তারা এই সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন। তা জানার পর মুখ্যমন্ত্রী ক্রীড়া চর্চা কেন্দ্র তৈরি করার নির্দেশ দেন। রাজ্য ক্রীড়া দফতর প্রাথমিক ভাবে জেলার সীমানা এলাকার ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা ঘেঁষা ২১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে এমনই ক্রীড়া চর্চা কেন্দ্র তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি বলেন, “প্রথমে জেলার সীমানা এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে ক্রীড়া চর্চা কেন্দ্র তৈরি করা হবে। ধীরে ধীরে এই ধরনের কেন্দ্র যাতে বাড়ানো যায় সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ করা হবে।”
ক্রীড়া চর্চায় যুবক-যুবতীদের উৎসাহিত করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জঙ্গলমহল কাপ শুরু হয়েছে। এবারের জঙ্গলমহল কাপে ১৭৩৪টি ক্লাবের প্রায় ৩০ হাজার খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সেই সব খেলোয়াড়দের হাতে পুরষ্কার তুলে দিতে এসে ঘোষণা করেছিলেন, এই কাপ তিনি শুরু করলেন। কিন্তু আগামী দিনে তা যেন বন্ধ না হয়ে যায়। খেলোয়াড়দের মধ্যেও এই নিয়ে উৎসাহ তুঙ্গে। কিন্তু পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে খেলোয়াড়দের অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয়। বিশেষত, মহিলাদের ক্ষেত্রে অসুবিধাটা একটু বেশি। খেলার মাঠে পোশাক পরিবর্তনের কোনও জায়গা নেই। নেই শৌচাগারও। এমনকি অনেকক্ষেত্রে পানীয় জলেরও ব্যবস্থা থাকে না। তাই এবার খেলার মাঠের কাছেই ৩ থেকে ৫ ডেসিমেল জায়গার মধ্যে একটি করে ঘর করা হচ্ছে। যার নাম দেওয়া হচ্ছে ‘কমিউনিটি হল কাম রিক্রিয়েশন সেন্টার’। যেখানে খেলার সরঞ্জাম রাখার ব্যবস্থা থাকবে, থাকবে পোশাক পরিবর্তনের জায়গা, পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা শৌচাগার। প্রতিটির জন্য ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
জেলার মাওবাদী উপদ্রুত ব্লকগুলির মধ্যে সীমানা এলাকায় রয়েছে গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের অমরদা, সাতমা, শিরশা ও কেন্দুগাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত, জামবনি ব্লকের চিল্কিগড়, ধড়সা, গিধনি, লালবাঁধ, কেন্দুগাড়ি, বিনপুর ২ ব্লকের সন্ধ্যাপাড়া, বাঁশপাহাড়ি, এড়গোদা, শিমুলপাল, গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকের চর্চিতা, নোটা, তপসিয়া এবং নয়াগ্রামের আড়রা, চান্দাবিলা, বড় নেগুই, চন্দ্ররেখা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই জমি দেখার কাজ শেষ। শীঘ্রই কাজ শুরু হয়ে যাবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু একটি বাড়ি তৈরি করে দেওয়াই নয়। ধীরে ধীরে সেখানে ক্রীড়া সরঞ্জাম দেওয়া, পানীয় জলের স্থায়ী ব্যবস্থা করা, এমনকী পরবর্তীকালে ওই কেন্দ্রে একটি করে যাতে টিভি দেওয়া যায় সেই পরিকল্পনাও রয়েছে। কারণ, জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র মানুষের বাড়িতে টিভি নেই। বড় বড় খেলাগুলি যাতে সকলেই দেখতে পান সে জন্যই এই পরিকল্পনা। প্রথমে সীমানা এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি দিয়ে কাজ শুরু হচ্ছে। ধীরে ধীরে জঙ্গলমহলের অন্য গ্রাম পঞ্চায়েতেও যাতে এই ধরনের ক্রীড়া চর্চা কেন্দ্র করা যায় তার পরিকল্পনাও রয়েছে।
এই ক্রীড়া চর্চা কেন্দ্র করার পর খেলোয়াড়রা কতটা উপকৃত হচ্ছেন, সেটা দেখার পর আরও নতুন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। জঙ্গলমহলের খেলোয়াড়েরা অবশ্য এই ধরনের উদ্যোগে বেজায় খুশি। জঙ্গলমহলের খেলোয়াড় সুনীত মুর্র্মু, ছবি মুর্মুদের কথায়, “পোশাক পরিবর্তন ও শৌচাগার করার উপযুক্ত জায়গা পেলেই আমাদের খুব উপকার হবে। পানীয় জলের ব্যবস্থা বা অন্য আরও সুবিধে পেলে তো আরও ভাল। জঙ্গলমহল কাপের কারণে এমনিতেই খেলার প্রতি উৎসাহ বেড়েছে। ক্রীড়া চর্চা কেন্দ্র তৈরি হলে আরও অনেকেই উৎসাহিত হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.