|
|
|
|
বিভ্রান্তির মধ্যেই ফর্ম পূরণে সময় বৃদ্ধি এসএসসির
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র পরীক্ষায় বসার ফর্ম নিয়ে বিভ্রান্তির অভিযোগে সোমবারেই সল্টলেকে কমিশনের দফতরের সামনে এক দফা বিক্ষোভ হয়েছিল। প্রার্থীদের নানান অভাব-অভিযোগে জেরবার কমিশন-কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষক বাছাই পরীক্ষা বা টেট-এর ফর্ম তোলা ও জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে দিয়েছেন। কথা ছিল, ৮ ফেব্রুয়ারি, শনিবার পর্যন্ত ওই ফর্ম তোলা ও জমা দেওয়া যাবে। বুধবার সেই সময়সীমা বাড়িয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে।
প্রার্থীদের অভিযোগ, ফর্ম বা আবেদনপত্র সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও কোথাও পাওয়া গেলেও কী ভাবে তা পূরণ করতে হবে, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। এই পরীক্ষার নিয়মাবলি ঠিক কেমন, তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না কমিশনের ওয়েবসাইটেও। এসএসসি-র দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও লাভ হচ্ছে না। সব মিলিয়ে তাঁদের বিভ্রান্তি চরমে। এই সব অভাব-অভিযোগ জানানো হচ্ছে সোমবার থেকেই। বিক্ষোভও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই কমিশন বুধবার টেট-এর ফর্ম তোলা ও জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি করেছে। কিন্তু তাতেও বিভ্রান্তির নিরসন হয়নি বলে অনেক প্রার্থীর অভিযোগ। বিভ্রান্তি কাটাতে এবং নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এ দিনও তাঁরা কমিশনের অফিসে হাজির হন।
প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য টেট-এর বন্দোবস্ত আছে। সেই পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। আর পঞ্চম থেকে অষ্টম পর্যন্ত চারটি শ্রেণিতে পড়ানোর শিক্ষক বাছাইয়ের জন্য টেট নেয় এসএসসি। ওই পরীক্ষা ১৫০ নম্বরের। দু’টি পরীক্ষার ক্ষেত্রেই ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন বা এনসিটিই-র নিয়মবিধি মেনে চলতে হয়। এসএসসি-কর্তৃপক্ষ এ বছর থেকেই পরীক্ষার পদ্ধতি কিছুটা বদলে ফেলেছেন। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত টেট এবং নবম থেকে দ্বাদশের জন্য আরএলএসটি-র ব্যবস্থা হয়েছে। টেট-এ বসার ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক পাশ পাঠ্যক্রমে ৫০ শতাংশ নম্বর পাওয়া। তবে অনার্স ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরাও চাইলে এই পরীক্ষা দিতে পারেন।
এসএসসি-র চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য গত ২৯ জানুয়ারি জানিয়েছিলেন, তাঁদের টেট হবে ৯ মার্চ। রাজ্যের ৮৪৭টি ডাকঘর থেকে ফর্ম দেওয়া হবে। কিন্তু অনেক ডাকঘরেই সেই ফর্ম মিলছে না বলে প্রার্থীদের অভিযোগ। সোমবার নিজেদের অভিযোগ জানাতে এবং বিভ্রান্তি কাটাতে এসএসসি-র অফিসে গিয়েছিলেন অনেক প্রার্থী। তাঁদের সমস্যার কথা বুঝতে পেরেই ফর্ম তোলা ও জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এ দিন কমিশনের তরফে জানানো হয়।
এসএসসি সূত্রে জানানো হয়, এনসিটিই-র নিয়মবিধি অনুযায়ী পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে শিক্ষকতার জন্য টেট-এ বসতে হলে বিএড থাকা বাধ্যতামূলক। তবে এ বছরই বিএড ডিগ্রিহীন প্রার্থীরা শেষ বারের মতো টেট-এ বসতে পারছেন। তবে তাঁদের ক্ষেত্রে একটা শর্তও থাকছে। সেটা হল, পরে ওই সব প্রার্থীকে বিএড করে নিতে হবে। পরের বার থেকে শুধু বিএড ডিগ্রিধারীরাই এই পরীক্ষা দিতে পারবেন বলে জানিয়ে দিয়েছে এসএসসি। তাদের দাবি, সময়সীমা বাড়ানোয় ফর্ম তোলা ও জমা দেওয়া নিয়ে সমস্যা মিটে যাবে। কেটে যাবে প্রার্থীদের বিভ্রান্তিও।
নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত চারটি শ্রেণিতে পড়ানোর শিক্ষক নিয়োগের জন্য কমিশন যে-পরীক্ষা নেবে, তার নাম আরএলএসটি। ওই পরীক্ষায় অবশ্য এনসিটিই-র নিয়মবিধি মানতে হয় না। তবে আরএলএসটি দিতে পারবেন শুধু অনার্স ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা। এই পরীক্ষার জন্য বিএড বাধ্যতামূলক নয়। কমিশন-কর্তৃপক্ষ এ দিন জানান, টেট-এর আবেদনপত্রের রং লাল আর আরএলএসটি-র আবেদনপত্র নীল। দু’টি পরীক্ষার আবেদনপত্র যাতে মিলে গিয়ে কোনও রকম বিভ্রান্তি না-ঘটায়, সেই জন্যই রঙের রকমফের ঘটানো হয়েছে। নীল আবেদনপত্রটিও এখন তোলা যেতে পারে। তবে এখনই সেটি জমা দিতে হবে না। আরএলএসটি-র বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরে এই আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। এপ্রিলে ওই পরীক্ষার দিন ঘোষণা করার কথা।
|
|
|
|
|
|