ক্রেতাকে শোরুমে ফেরাতে মরিয়া লড়াই এক্সপোয়
বিএমডব্লিউ-র মঞ্চে সচিন তেন্ডুলকর। জাগুয়ার-ল্যান্ড রোভারের ডেরায় প্রিয়ঙ্কা চোপরা। দিলীপ ছাবরিয়ার ‘ডিজাইনার’ গাড়ির পাশে করিনা কপূর। দেশের বৃহত্তম গাড়ি প্রদর্শনী ‘অটো এক্সপো’-র প্রথম দিনে তার জৌলুস আর তারাদের পা পড়া দেখে কে বলবে গত বছরটা কী কুৎসিত কেটেছে দেশের গাড়ি শিল্পের!
বুধবার প্রদর্শনীর পর্দা উঠতেই একগুচ্ছ নতুন এবং কল্পিত গাড়ি (কনসেপ্ট কার) সকলের সামনে তুলে ধরল মারুতি-সুজুকি, জেনারেল মোটরস সমেত ৩০টি দেশি-বিদেশি সংস্থা। সারা দিনই ভিড় ঘিরে থাকল পিয়াজ্জিও স্কুটার থেকে আড়াই কোটির মার্সিডিজ এমএল ৫০০ গার্ড-কে। অথচ ভারতে গাড়ি নির্মাতাদের সংগঠন সিয়াম (যারা এই প্রদর্শনীরও আয়োজক)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৩ সালে এই দেশেই কিনা যাত্রী-গাড়ির বিক্রি কমেছে ৭.২৩%। স্মরণকালে যা কখনও ঘটেনি। বাণিজ্যিক গাড়িও কমেছে ১৫%।
আর এই সমস্ত দেখেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই এক্সপো শুধু গাড়ি-প্রদর্শনী নয়, ক্রেতাকে শো-রুমে ফেরানোর মরিয়া চেষ্টাও। তাঁদের মতে, ক্রেতা টানার চেষ্টা পৃথিবীর যে গাড়ি প্রদর্শনীতেই পুরো মাত্রায় থাকে। আগের বছরগুলোতে এখানেও ছিল। কিন্তু এ বারের লড়াই যেন আরও কঠিন। আরও অনেক বেশি দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকে শুরু করা। যেখানে শুধু নতুন ক্রেতা টানলে চলবে না। ফেরাতে হবে পুরনো ক্রেতাকেও। জ্বালানির চড়া দর, দেশের অর্থনীতির টালমাটাল দশা আর ষাট পেরোনো ডলারের জেরে নতুন ও পুরনো ক্রেতা, উভয়েই মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন গাড়ি কেনা থেকে।
বিএমডব্লিউ-র হাইব্রিড গাড়ি আই৮। প্রদর্শনে সচিন তেন্ডুলকর।
গাড়ি শিল্পের টালমাটাল সময়ে এই প্রদর্শনী তাই আক্ষরিক অর্থেই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। অনেকটা পঞ্চাশেই পাঁচ উইকেট খুইয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টার মতো। লক্ষ্য, যদি প্রযুক্তির কোনও নতুন চকমকিতে কিছুটা অন্তত চাহিদা বাড়ে। যদি ক্রেতাদের হাতছানি দেয় নতুন কোনও মডেল। সব মিলিয়ে, যেন কিছুটা হলেও ছন্দে ফেরে গাড়ি শিল্প।
ভারতে জেনারেল মোটরসের অন্যতম কর্তা পি বালেন্দ্রনের মতে, লোকসভা ভোটের পর স্থায়ী সরকার তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত অর্থনীতির উন্নতির আশা ক্ষীণ। একই কথা বলেছেন মহীন্দ্রা গোষ্ঠীর কর্ণধার আনন্দ মহীন্দ্রাও। তাই সেই বাস্তব মেনে প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে সামান্য হলেও পরিস্থিতি বদলাতে চাইছে গাড়ি সংস্থাগুলি।
বালেন্দ্রনের কথায়, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৈচিত্র আনতে না-পারলে, স্থিতাবস্থা আসে। সেই বৈচিত্র আর নিজের ব্র্যান্ড তুলে ধরার মঞ্চই হল অটো এক্সপো।” টাটা মোটরসের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান টিম লিভারটনও বলছেন, পছন্দের জ্বালানিতে গাড়ি চালানোর সুবিধা এবং তার সাশ্রয়ের পাশাপাশি ক্রেতার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে গাড়ির নক্শা ও বিভিন্ন পরিষেবা। তাই এখন সে দিকেও কড়া নজর দিচ্ছেন তাঁরা।
কিন্তু এই চেষ্টার মধ্যেও অবশ্য খামতি খুঁজে পাচ্ছেন কেউ কেউ। তাঁদের মতে, বুধবার দিনভর একের পর এক নতুন গাড়ির আবরণ উন্মোচিত হল ঠিকই। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা চালু গাড়িতে কিছু নয়া পরিষেবার সংযোজন। আনকোরা নতুন গাড়ি তুলনায় কম। তবে বরাবর ছোট গাড়ির বাজার হিসেবে পরিচিত ভারতে এই প্রদর্শনীতে এ বার আবার নজর বেশি সেডান, এসইউভি বা এমইউভি-র মতো বড় গাড়ির দিকে।
প্রতি বারের মতো এ বারও এক্সপোয় ঘুরতে দেখা গেল রতন টাটাকে। অবসরের গ্রহে ঢুকে পড়ার পর এ বার এখানে সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেলেন তিনি। তবে খুঁটিয়ে দেখলেন নিজের সংস্থার গাড়ি ও তার যন্ত্রাংশ। অনেকের মতে যা প্রদর্শনীর আসল মেজাজ। নিজের প্রযুক্তি খুঁটিয়ে দেখে বাজার ধরতে ঝাঁপ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.