দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের উপরে যৌন নিগ্রহ ও ধর্ষণ চালিয়ে গিয়েছেন যাজকরা। আর তাঁদের ‘মদত’ দিয়ে গিয়েছে ভ্যাটিক্যান। এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি তদন্ত রিপোর্টে এমন বিতর্কিত তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। যে কারণে ভ্যাটিকানের তুমুল সমালোচনা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিটি বলেছে, যে সব যাজক শিশু নিগ্রহে অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন, তাঁদের অবিলম্বে সরিয়ে দিতে হবে।
একই সঙ্গে সমকামিতা, গর্ভনিরোধক ব্যবহার এবং গর্ভপাত নিয়ে ভ্যাটিকানের অবস্থানের সমালোচনাও করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ওই রিপোর্ট দেখে ভ্যাটিকান জানিয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। কিন্তু এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে, ভ্যাটিকানের অন্দরে রাষ্ট্রপুঞ্জের এই নাক গলানোয় মোটেই খুশি নয় তারা। ভ্যাটিকানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মানুষের সম্মান রক্ষার প্রশ্নে ক্যাথলিক গির্জার উপরে এই খবরদারি দেখে আমরা ব্যথিত। শিশু অধিকার রক্ষার প্রশ্নে আমরা বদ্ধপরিকর।
হাজার হাজার শিশুকে দিনের পর দিন নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে ভ্যাটিকানে। সেই অপরাধ সংক্রান্ত যা যা নথি ভ্যাটিকানের কাছে রয়েছে, তা প্রকাশ্যে আনা উচিত বলে মনে করছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এতে যারা অপরাধী, তারা তো শাস্তি পাবেই। তা ছাড়া, যারা এত দিন ধরে অপরাধ গোপন করে এসেছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের অভিযোগ, শিশুদের বিরুদ্ধে যত যৌন অপরাধ হয়, ভ্যাটিকানের দৌলতে তার খুব কম সংখ্যকই জানা যায়। সেই সব অপরাধ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় কোনও পদক্ষেপও করতে দেখা যায় না ভ্যাটিকানকে। উল্টে অভিযুক্তকে অন্য দেশে পাঠিয়ে অপরাধ গোপন করার নজির রয়েছে। তা ছাড়া তাদের এমন কিছু নীতি রয়েছে, যেগুলি এই ধরনের অপরাধে প্রশ্রয়ই দিয়ে এসেছে।
অথচ গত ডিসেম্বরেই শিশু নিগ্রহের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ভ্যাটিকানের নিজস্ব কমিশন তৈরির কথা জানিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। রাষ্ট্রপুঞ্জ চায়, এ বার সেই কমিশন কিছু নিয়ম বেঁধে দিক।
যদি এ ধরনের অপরাধের খবর মেলে, তা বাধ্যতামূলক ভাবে পুলিশকে জানাতে হবে। শিশু অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রপুঞ্জের কনভেনশনের নিয়ম বাস্তবায়নে ভ্যাটিকান কী করেছে, তা জানতে গত মাসে একটা গোটা দিন সেখানকার অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরা। তার পরেই বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
২০১৭ সালের মধ্যে সব সুপারিশ কার্যকর হল কিনা, খতিয়ে দেখবে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
|