|
|
|
|
নন্দীগ্রামে নিহত তৃণমূল উপপ্রধান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
নন্দীগ্রামে আততায়ীর গুলিতে খুন হয়ে গেলেন শাসক দলের ডাকাবুকো নেতা সমর মাইতি (৪২)। নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের বয়াল ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান সমরবাবুর বাড়ি স্থানীয় রামচক গ্রামে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে তেরপেখ্যা বাজারের কাছে তাঁকে গুলি করা হয়।
তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী ওই খুনের পিছনে ‘সিপিএমের দুষ্কৃতীরা জড়িত’ বলে দাবি করেছেন। কিন্তু সমরবাবুর বাবা তথা নন্দীগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলেরই সহ-সভাপতি বাদল মাইতি বলেন, “ওখানে নির্দলের নাম করে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা শেখ নাজিমউদ্দিনের নেতৃত্বে দলেরই বেশ কিছু লোক হুমকি দিচ্ছিল। ওরাই ছেলেকে খুন করেছে। সিপিএমের কোনও ব্যাপার নেই।” পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “ঘটনাস্থলে একটা পাইপগান মিলেছে। আমরা তদন্ত শুরু করে দিয়েছি।” |
|
তমলুক হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ সমর মাইতি। পার্থপ্রতিম দাসের ছবি। |
এ দিন পাশের নারায়ণচক গ্রামে সরস্বতী পুজোর একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ ছিল সমরবাবুর। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ হলদি নদীর ধারে নিজের ইটভাটা থেকে বেরিয়ে মোটর সাইকেলে ওই গ্রামেই যাচ্ছিলেন তিনি। তেরপেখ্যা বাজারের কাছে একটি সমবায় সমিতির সামনের গলি থেকে বেরিয়ে আততায়ীরা তাঁকে গুলি করে পালায়। একটি গুলি বাম চোখে লাগে, একটি ডানদিকে কোমরের নীচে। প্রথমে রেয়াপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। রাত ৯টা নাগাদ তমলুক জেলা হাসপাতালে আনা হয় যখন, ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
গত পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রামের বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরা নির্দল হয়ে লড়েছিলেন। বয়াল ২ পঞ্চায়েতে তৃণমূল জিতে গেলেও পাশের বয়াল ১ পঞ্চায়েতে নির্দল প্রার্থীরাই ছ’টি আসনে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়। চারটি আসনে প্রতীকে জেতেন তৃণমূল প্রার্থীরা। কিন্তু বোর্ড গঠনের আগে সংঘর্ষের ঘটনায় নাম জড়িয়ে যাওয়ায় এলাকা ছাড়েন পাঁচ নির্দল প্রার্থী। সেই সুযোগে বোর্ড গড়ে নেয় তৃণমূল। পরে ওই নির্দল প্রার্থীরা গ্রামে ফিরে পঞ্চায়েতের কাজে বাধা দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর গোলমাল চলছিলই। নির্দল প্রার্থীদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বয়াল ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা শেখ নাজিমউদ্দিন। আর তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন সমরবাবু।
বয়াল ২ অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মনোজকুমার সামন্ত বলেন, “শেখ নাজিমউদ্দিন আগে আমাদের দলে থাকলেও পরে সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। ওরাই সমরবাবুকে খুন করেছে।” নন্দীগ্রামের সিপিএম নেতা তথা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক গুড়িয়া অবশ্য বলেন, “ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে অনুমান।” |
|
|
|
|
|