চার বছর আগে জেলায় ৩১০টি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল তৈরি করার অনুমোদন মিলেছিল। বরাদ্দ হয়েছিল প্রয়োজনীয় অর্থও। তারপরেও জেলায় স্কুল তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় হওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কোচবিহারে।
জেলা সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭-০৮-০৯-১০ আর্থিক বছরে জেলায় পর্যায়ক্রমে ৩১০টি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল গড়ার অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। সর্বশিক্ষা মিশনের বার্ষিক বাজেটে এ জন্য আর্থিক বরাদ্দ অনুমোদন হয়। গত বছর ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত জেলায় মাত্র ২৪১ টি নতুন উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। এই বছরের জানুয়ারিতে রাজ্য শিক্ষা দফতর আরও ৩৯ স্কুল চালুর ব্যাপারে ছাড়পত্র দেওয়ায় ওই সংখ্যা বেড়ে ২৮০ হবে। তাও অবশ্য লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩০ স্কুল কম থাকছে। নতুন অনুমোদন পাওয়া ৩৯ স্কুলেও পঠন পাঠন শুরু হয়নি। সব মিলিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৬৯টি স্কুল কম। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্পের আধিকারিক আমিনুল আহসান বলেন, “দ্রুত সদ্য অনুমোদিত ৩৯টি স্কুলেই পঠনপাঠন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। আগামী মার্চে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাকি ৩০টি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল চালু করা যাবে বলে আশা করছি।”
পরিকল্পনা অনুযায়ী জেলায় প্রতি ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুপাতে একটি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল তৈরির রুপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। সেই সঙ্গে ২০১০ সালে চালু হওয়া শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী জনবসতি ও স্কুল চালুর জন্য চাহিদা অনুযায়ী প্রতি ২ কিমি অন্তর উচ্চ প্রাথমিক স্কুল গড়ার কথা বলা হয়। অথচ তার পরেও তিন দফার শুরুর প্রথম বছরে ২০০টি, পরের বছর অর্থাৎ ২০০৮-০৯এ ৮০ ও ২০০৯-১০ সালে ৩০টি মিলিয়ে ৩১০ টি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। মিশনের এক আধিকারিকের কথায়, “প্রাথমিক ভাবে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক অনুমোদন দিলেও আনুষঙ্গিক কিছু পদ্ধতি মেনে স্কুল চালু করতে হয়। জমির ব্যবস্থা করা, রাজ্য শিক্ষা দফতরের ছাড়পত্র আদায়, শিক্ষক নিয়োগ থেকে এলাকা ভিত্তিক নির্দিষ্ট করে প্রস্তাব পাঠানোর মত কাজ করতে বহুক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়। তাই সময় বেশি লেগেছে।” ২০০৯-১০ সালে কেন্দ্রের অনুমোদন পাওয়া ৩০ স্কুল চালুর বিষয়ে এখনও ছাড়পত্র মেলেনি বলে জানা গিয়েছে।
যে সব নতুন স্কুল তৈরিতে রাজ্য সরকার ছাড়পত্র দিয়েছে সেই তালিকায় নাটাবাড়ির জুনিয়র গার্লস হাইস্কুল রয়েছে। বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “স্কুলগুলির যাতে সমস্যা না হয় তা দেখা হবে।” চালু হওয়ার ছাড়পত্র মেলা ৩৯ স্কুলের তালিকায় কোচবিহার সদরের চান্দামারি জুনিয়র গার্লস, গয়ারগাড়ি জুনিয়র হাইস্কুল, হলদিবাড়ির বনচাঁদ জুনিয়র হাইস্কুল, তুফানগঞ্জের চৌকুঠি বলরামপুর জুনিয়র হাইস্কুলের নাম রয়েছে। যদিও স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন কবে শুরু হবে তা নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশে সংশয় আছে। কোচবিহার ডিআই (মাধ্যমিক) মহাদেব শৈব বলেছেন, “মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ এলে অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে চলতি শিক্ষাবর্ষেই ওই ৩৯টি স্কুলে ক্লাস চালুর ব্যবস্থা হবে।” কবে সেই অনুমোদন আসে, তারই অপেক্ষায় বাসিন্দা ও শিক্ষানুরাগীরা। |