৬০ তম বাণীপুর লোক উৎসব শুরু হল রবিবার। এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায় উৎসবের সূচনা করেন বিশিষ্ট লেটো শিল্পী মমতা সরকার। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। উৎসব চলবে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
উৎসবে মেলার মূল মঞ্চের নামকরণ হয়েছে প্রয়াত সুচিত্রা সেন এবং মান্না দে-র নামে। এ ছাড়া প্রয়াত চিত্রপরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের নামেও একটি মঞ্চ হয়েছে। অন্যবারের চেয়ে এ বারের মেলার পার্থক্য, এই প্রথম মেলার ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ২৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া আদিবাসী ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সফলদের হাতে এ দিন পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কারও ছিল অভিনব, ছাগল-মুরগি। দেওয়া হয়েছে সাইকেলও। মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস বলেন, “আদিবাসীদের উন্নয়ন ছাড়া প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রতীকী হলেও আদিবাসী মানুষদের হাতে ছাগল, মুরগি তুলে দিয়ে পশুপালনের জন্য তাঁদের উৎসাহিত করা হল।” এ বার মূল মঞ্চের স্থায়ীকরণও করা হয়। উদ্বোধন করেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু। |
এ দিন দুপুরে স্থানীয় সবুজ সঙ্ঘের মাঠ থেকে মেলার মাঠ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের শোভাযাত্রা বেরোয়। পুরুলিয়ার ছৌ থেকে গরুর গাড়ি, ঢাক, বহুরূপী নিয়ে শোভাযাত্রা দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিলেন। উৎসব উপলক্ষে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়েছে। লেটোশিল্পী মমতাদেবী বলেন, “লেটো গান ক্রমশ শেষ হয়ে যাচ্ছে। লেটোশিল্পীরা অনাহারে মরছেন। আমাকে সম্মান জ্ঞাপন বস্তুত লেটো শিল্পীদেরই সম্মান জ্ঞাপন। এখানে এসে আনন্দ পেলাম। সরকার আর্থিক সাহায্য করলে উপকৃত হবেন লেটোশিল্পীরা।”
উৎসবে দেখা গেল মান্না দে ও সুচিত্রা সেনের নামাঙ্কিত মঞ্চটি সাজানো হয়েছে তাঁদের ছবি ও সিনেমার ক্লিপিংস দিয়ে। আমন্ত্রিত অতিথিদের বাংলাদেশের ইলিশ দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। উৎসবে বিভিন্ন দিনে থাকছে পটের গান, বেণিপুতুল নাচ, বাউল, যাত্রা, নাটক, সাঁওতালি নৃত্য, লোকনাট্য, রায়বেঁশে, কবিগান, পুতুলনাচ, ঢাক বাজানো, মতুয়া সঙ্গীত, জাদু প্রদর্শনী ইত্যাদি। থাকছে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। এ ছাড়া ১০০ দিনের প্রকল্প, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধ-সহ নানা বিষয়ে সচেতনতা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। উৎসবে উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত সিনেমা দেখানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। |