দুই সন্তানের মা এক বিধবা মহিলাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল তাঁর চার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। শনিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থানার বড়ুল গ্রাম থেকে হেঁটে নিশ্চিন্তপুরে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন ওই মহিলা। সে সময়েই তাঁকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলে সেই দিন রাতেই বহরমপুর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তরা পলাতক। জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও মারধরের মামলা দায়ের করে পুলিশ তদন্ত করছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।”
শীতের সন্ধ্যায় আহত অবস্থায় ওই মহিলা মাঠের মধ্যে পড়েছিলেন। তাঁকে ওই অবস্থায় দেখতে পান তাঁর আর এক প্রতিবেশী মিনারুল শেখ। তিনি ওই মহিলাকে নিজের ভ্যানে তুলে গ্রামে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেন। মিনারুলের বাড়ি ওই মহিলার বাড়ির কাছেই মাঠপাড়ায়। তাঁর একটি মুদিখানার দোকানও রয়েছে।
ওই মহিলার বাড়ির লোকজনই তারপরে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশ সূত্রে দাবি, সেই সময় ওই মহিলা নিজে কোনও কথা বলতে পারছিলেন না, তবে তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ও কাপড় ছেঁড়া দেখে তাঁর বাড়ির লোকজন মনে করেন তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। তবে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। সেই মতো চিকিৎসাও চলছে। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ছ’য়েক আগে ওই মহিলার স্বামী মারা গিয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ওই মহিলার ছেলের সঙ্গে প্রতিবেশী একটি পরিবারের একটি মেয়ের সম্পর্ককে কেন্দ্র করেই গোলমালের সূত্রপাত। বেশ কয়েকদিন ধরেই এই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ চলছিল। তারই জেরে ওই দিন মহিলাকে মারধর করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।
তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে ওই রাতেই সেখানে যান জেলা পুলিশ সুপার। তিনি ওই মহিলার সঙ্গেও কথা বলেন। পুলিশ সুপারের দাবি, “ওই মহিলা নিজেও জানিয়েছেন, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়নি। তবে মারধর করা হয়েছে। তবে কোনও মহিলাকে মারধর করা হলে আইন অনুযায়ী তা শ্লীলতাহানিও। সেই কারণেই এই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করা হয়েছে।” এ দিন হাসপাতালে ওই মহিলা দাবি করেন, “রাস্তা থেকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে প্রতিবেশী চার জন আমাকে মারধর করেছে।” |