|
|
|
|
বেলপাহাড়িতে মিলল অস্ত্র, মানচিত্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
জঙ্গলমহলের ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা এলাকায় মাওবাদী তৎপরতার খবর কিছু দিন ধরেই গোয়েন্দাদের কাছে ছিল। তাতে কার্যত সিলমোহর দিল বেলপাহাড়ির জঙ্গলে সিআরপি-র তল্লাশি অভিযান। শনিবার সিআরপি-র ১৬৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের ওই অভিযানে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া বেলপাহাড়ির লবণির জঙ্গল থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক, এলাকার মানচিত্র এবং মাওবাদী পুস্তিকা উদ্ধার হয়েছে।
সিআরপি-র অনুমান, ঝাড়খণ্ড সীমানা দিয়ে এ রাজ্যের জঙ্গলমহলে ঢুকে বড় ধরনের হামলা চালানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে মাওবাদীরা। ভিন্ রাজ্যের স্কোয়াড সদস্যদের ‘রেকি’ করতে এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। সে জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে ‘স্ট্র্যাটেজিক লোকেশন ম্যাপ’। |
 |
উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। —নিজস্ব চিত্র। |
সিআরপি-র ১৬৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের কম্যান্ডান্ট রামলখন রাম বলেন, “সিআরপি ও পুলিশের তল্লাশির ফলে মাওবাদীরা জঙ্গলমহলে সুবিধে করতে পারছে না। তবে গোলমাল পাকাতে সীমানা এলাকায় অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রাখছে। শনিবার লবণির জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্রশস্ত্র ও মাওবাদী পুস্তিকার সঙ্গে আমরা এলাকার একটি মানচিত্রও পেয়েছি।”
রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর যৌথ বাহিনীর গুলিতে নিহত হন মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেনজি। এ রাজ্যে মাওবাদীদের শক্তিক্ষয়ের সেই শুরু। ক্রমে সুচিত্রা মাহাতো, জাগরী বাস্কের মতো প্রথম সারির মাওবাদী নেতা-নেত্রীরা আত্মসমর্পণ করেন। জঙ্গলমহলের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসংযোগ বাড়াতে পুলিশের উদ্যোগে শুরু হয় ফুটবল প্রতিযোগিতার মতো নানা কর্মসূচি। এই পরিস্থিতিতে জঙ্গলমহলে মাওবাদী সক্রিয়তা থিতিয়ে যায়। কিষেনজির মৃত্যুর পরে আর কোনও নাশকতার ঘটনা ঘটেনি।
তবে নতুন করে অস্ত্রশস্ত্র-ম্যাপ-মাওবাদী পুস্তিকা উদ্ধার হওয়ায় নড়েচড়ে বসছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী তথা ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের জোয়ারে জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরেছে। নতুন করে অশান্তির চেষ্টা জনসংযোগ এবং উন্নয়ন দিয়েই রুখে দিতে হবে। আমি নিজে ওখানে যাব।” গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কিষেণজির মৃত্যুর দু’বছর পরে সংগঠন বাড়াতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে মাওবাদীরা। রাতে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া এলাকায় তাদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। জঙ্গলমহলের সব ক’টি পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। বেশির ভাগ গ্রাম পঞ্চায়েতও তাদের দখলে। লোকসভা ভোটের আগে মাওবাদীরা জনমত গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে ।
শনিবার বিকেলে বেলপাহাড়ির খট্টাধরা সিআরপি ক্যাম্পের অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ডান্ট সৌরভ সিংহ যাদবের নেতৃত্বে ১৬৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানেরা লবণির জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। সঙ্গে ছিল বেলপাহাড়ি থানার পুলিশ। সিআরপি জানিয়েছে, জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় মাটি খুঁড়ে একটি কার্বাইন, দু’টি ম্যাগাজিন, এক নলা বন্দুক, ৫০০ গ্রাম বিস্ফোরক, ৩ কিলো স্প্লিন্টার, ডিটোনেটার সমেত তার, হাইভোল্ট ব্যাটারি উদ্ধার হয়। এ ছাড়াও জলপাইরঙা পোশাক, মাওবাদী পুস্তিকা ও মানচিত্রও মিলেছে। |
|
|
 |
|
|