লাইনচ্যুত ও ফাটলের গেরোয় বিপর্যস্ত রেল চলাচল
নিজস্ব সংবাদদাতা
|
বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেল শিয়ালদহমুখী ডাউন রানাঘাট লোকাল। ঘটনাটি ঘটে শনিবার ভোর সাড়ে ছ’টা নাগাদ। রেল সূত্রে খবর, এ দিন দমদম স্টেশন ছাড়ার পরেই প্রায় ২০০ মিটার দূরত্বে ট্রেনটির সাতটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে যায়। যদিও এই ঘটনায় কেউ আহত হননি। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন পূর্ব রেলের আধিকারিকেরা। শুরু হয়েছে উদ্ধারকার্য। সপ্তাহের শুরু হয়েছিল টিটাগড়ে ১২ ঘণ্টা রেল অবরোধ দিয়ে, শেষ দিনেও বেলাইন ট্রেন দুর্ভোগে ফেলল অসংখ্য যাত্রীকে। এই ঘটনার জের এসে পড়ে সড়কপথেও। বি টি রোড ও যশোহর রোডের বিভিন্ন জায়গায় বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকেন যাত্রীরা। বাদুড়ঝোলা হয়েই বাসে উঠতে বাধ্য হন সাধারণ মানুষ। বহু জায়গায় অটোর জন্যও দীর্ঘ লাইন পড়ে। সকাল থেকেই বিভিন্ন স্টেশনে আটকে রয়েছে রাজধানী-সহ বহু দূরপাল্লার ট্রেন। বহু ট্রেন দেরিতে চলছে। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনার। |
দমদমে লাইনচ্যুত লোকাল ট্রেনের ছবি তুলেছেন শৌভিক দে। |
এ দিন সকালে দমদম স্টেশন ছাড়ার পরেই প্রচণ্ড শব্দ ও ঝাঁকুনি অনুভব করেন যাত্রীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান হঠাত্ই চারিদিক ধুলোয় ভরে যায়। ট্রেনটির সাতটি কামরার চাকাই লাইন থেকে বেরিয়ে যায়। এই ভাবে বেশ কিছু দূর ঘষটে এগিয়ে যায় ট্রেনটি। যাত্রীদের চিত্কারে ট্রেন থামিয়ে দেন চালক। আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক যাত্রী। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রিলিফ ট্রেন নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় উদ্ধারকারী দল। অসুস্থ যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিত্সার পরে দমদম স্টেশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পূর্ব রেল। লাইনের ফিস প্লেট খুলে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন রেল কর্তৃপক্ষ। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মেরামতির কাজ চলায় এখনও পর্যন্ত ১ ও ২ নম্বর লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র ৩ ও ৪ নম্বর লাইন দিয়ে ট্রেন চালানো হচ্ছে। |
|
|
ব্যারাকপুরে যাত্রী দুর্ভোগের ছবি তুললেন সজল চট্টোপাধ্যায়। |
|
পূর্ব রেল সূত্রে খবর, ঘটনার জেরে শিয়ালদহ মেন শাখায় ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত। শুধু মেন শাখা নয়, এ দিনের দুর্ঘটনা যেখানে ঘটেছে সেই জায়গা পেরিয়ে যেতে হয় ডানকুনি এবং বনগাঁ শাখার ট্রেনকেও। ফলে, মেন শাখা-সহ অন্য দু’টি শাখাতেও ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। একটা সময়ের পর ডাউন লাইনে রেকের অভাবে বনগাঁ শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যার জেরে ওই শাখার বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীরা অসুবিধায় পড়েন। সকালের দিকে বারাসত স্টেশনে যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
অন্য দিকে
হালিশহরের কাছে রেললাইনে ফাটল দেখা দেয়। ফলে সাময়িক ভাবে নৈহাটি থেকে স্বল্প দূরত্বের ট্রেন চালানোর ভাবনাও রেলকে বাতিল করতে হয়। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, ফাটল সারানোর কাজ চলছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিস্থিতির তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে রাত ন’টা বাজবে।
|
তরুণীকে ধাক্কা, গালিগালাজ, অটো-দৌরাত্ম্য চলছেই |
ফের লাগামছাড়া অটো-দৌরাত্ম্যের শিকার হলেন এক তরুণী। গত এক সপ্তাহে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় এই নিয়ে অন্তত তিন বার অটোচালকদের অভব্য আচরণের ঘটনা সামনে এসেছে। অটো-দৌরাত্ম্য রুখতে পথে নেমেছেন খোদ পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র। তাতেও যে অটোচালকদের হুঁশ বিন্দুমাত্র ফেরেনি তার প্রমাণ মিলল মহানগরীতে।
শনিবার সকালে যশোহর রোডের লেকটাউন মোড়ে এক তরুণীকে ধাক্কা মারে একটি অটো। অভিযোগ তরুণী প্রতিবাদ করলে তাঁকে কটূ কথা বলে অটোচালক। এমনকী, গালিগালাজ করে তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ জানান সেক্টর ফাইভে কর্মরত ওই তরুণী। তাঁর সঙ্গীকেও গালাগালি ও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার পর লেকটাউন থানায় অটোচালকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী ও তাঁর সঙ্গী। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অটোচালক রোশন ঝাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অটোর লাগামছাড়া দৌরাত্ম্যে নাজেহাল কলকাতার মানুষ। এর আগে খুচরো দিতে না পারায় তারাতলায় এক মহিলাকে চড় মেরেছিলেন এক অটোচালক। পার্ক সার্কাসে এক মহিলাকে রড দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেন আর এক চালক। অটোর ধাক্কায় গড়িয়ার রামগড়ে সম্প্রতি এক বৃদ্ধেরও মৃত্যু হয়েছে।
|
মাছকাটার বঁটির উপর পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম যুবক
নিজস্ব সংবাদদাতা |
মাছ নিয়ে দরদাম করার সময় আচমকাই বঁটির উপর পড়ে গিয়ে গলার নলি প্রায় দু’ভাগ হয়ে গেল এক যুবকের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। বিকাশ বড়ুয়া নামের বছর তেইশের ওই যুবকের বাড়ি মহেশতলা থানার আক্রায়।
শনিবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ আক্রা বাজারে গিয়েছিলেন বিকাশ। তিনি একটি শাড়ির কারখানায় কাজ করেন। আগামিকাল তাঁর বাবার মৃত্যুবার্ষিকী। সে জন্য মাছ কেনার কথা ছিল বলে জানিয়েছেন বিকাশের মা রূপালি বড়ুয়া। কিন্তু মাছ কিনতে গিয়ে যে এমন ভয়ানক ব্যাপার ঘটবে তা ভাবতেই পারছেন না তিনি। বললেন, “সুস্থ ছেলে পাঠালাম বাজারে। আর এ কী হল!” যে দোকানে এ দিন বিকাশ দাঁড়িয়েছিলেন তার মালিক ও মাছ ব্যবসায়ী মহম্মদ নাসিম বলেন, “সকালবেলা এসে স্বাভাবিক ভাবেই উনি মাছের দরদাম করছিলেন। হঠাৎই ঘুরে পড়ে গেলেন আমার এই মাছকাটা বঁটির উপর। গলাটা দু’ফালা হয়ে যায়। ছটফট করতে থাকে তাঁর গোটা শরীর।”
ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ পর পুলিশে খবর দেন ব্যবসায়ীরা। বিকাশকে প্রথমে বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানে তাঁর গলায় অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে বিকাশের মৃগী রোগ আছে। সে কারণেই তিনি হঠাৎ করে পড়ে যান। রূপালিদেবীও জানিয়েছেন, মাঝে মাঝে কাঁপুনি দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যেত বিকাশ। তবে সেটা মৃগী রোগ কি না তা জানেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
|
সহপাঠীকে ছুরি মারার অভিযোগে ধৃত ছাত্র
নিজস্ব সংবাদদাতা |
স্কুলের বাইরে সহপাঠীকে ছুরি মারার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এক ছাত্রকে। শনিবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে ওই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানায়, ছুরির আঘাতে জখম ছাত্র দ্বাদশ শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগে পড়ে। বাড়ি তপসিয়ায়। তার বাঁ পায়ের ঊরুতে আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওই ছাত্রের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তার এক সহপাঠীকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের বাড়ি ইলিয়ট রোডে। তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
স্কুল সূত্রের খবর, এ দিন পার্ক লেনের ওই স্কুলে টেস্ট পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে রাস্তায় বেরিয়ে অভিযোগকারী ছাত্র দেখে, অন্য ছাত্রটি সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সে পরীক্ষা দিতে যায়নি বলে স্কুল-কর্তৃপক্ষের দাবি। অভিযোগকারী ছাত্রের দাবি, তাকে দেখতে পেয়েই ছুরি বার করে তেড়ে আসে তার ওই সহপাঠী। প্রথমে অশ্রাব্য গালিগালাজ। তার পরে আচমকাই তার পেটের দিকে ছুরি চালায় সে। নিমেষে নিজেকে সরিয়ে নেয় ওই ছাত্র। কিন্তু তত ক্ষণে তার ঊরুতে ছুরি বসে গিয়েছে।
|
বিজেপি-র বিরুদ্ধে বিষের বীজ বপনের অভিযোগ সনিয়ার
সংবাদ সংস্থা |
বিষের বীজ বপন করছে বিজেপি, শনিবার এ ভাবেই প্রতিপক্ষ দলকে আক্রমণ করলেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী। এ দিন কর্নাটকের গুলবর্গায় কংগ্রেসের জনসভায় সনিয়া বলেন, “দেশের মিশ্র সংস্কৃতির প্রতীক এই অঞ্চল সুফি সন্তদের কর্মভূমি। আমি বিশ্বাস করি, যারা বিষের বীজ বপন করে, ধর্ম নিরপেক্ষতায় আস্থা না রেখে যারা ক্ষমতা দখলের আশায় হিংসার আশ্রয় নেয়, আপনারা তাদের প্রশ্রয় দেবেন না।” সনিয়া আরও অভিযোগ করেন, বিজেপি-সহ অন্য বিরোধী দলগুলির একমাত্র লক্ষ্য যে কোনও উপায়ে ক্ষমতার দখল নেওয়া। মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদীর নাম না করে এ দিনের সভায় সনিয়া বলেন, “যাঁরা সারা ক্ষণ নিজেদের ঢাক পেটাতে ব্যস্ত, তাঁদের জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনারা কখনও দেশের ভাল কাজে সামিল হয়েছেন?” যদিও এ প্রশ্নের উত্তর সনিয়া নিজেই দিয়ে বলেছেন, “একেবারেই না।” পাশাপাশি তিনি ‘ক্ষমতালোভী এই মানুষগুলির মতলব’ বুঝে নিতে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন।
সনিয়ার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপির মুখপাত্র রাজীব প্রতাপ রুডি বলেন, “এ সব বলে কংগ্রেসের উপর মানুষের আস্থা বাড়বে না। ২০০৭ সালে গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিকে ‘মৃত্যুর সওদাগর’ বলে কংগ্রেস যেমন মুছে গিয়েছিল, ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে তাদের একই রকম অবস্থা হবে।” |