দামোদর নদের চর থেকে বালি তোলা হচ্ছে। এর ফলে এলাকার একাংশ নদের গর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সোনামুখী ব্লকের লালবাবা ও উত্তর মানা চরের বাসিন্দারা। তাঁদের ক্ষোভ, “আমাদের এলাকার দক্ষিণে বিশাল দামোদর এবং উত্তরে দামোদরের শাখা নদী নারাঙ্গি সিলামপুরের কাছে একসঙ্গে মিশে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সামান্য জল বাড়লে আমাদের দুই কূল বন্যার কবলে পড়ে। এর ফলে আমাদের ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি করে।” লালবাবার চরের বাসিন্দা হরিপদ চৌধুরী, দশরথ যাদবদের অভিযোগ, “আমরা সরকারের পাট্টা দেওয়া জমির উপর চাষবাস করে সংসার চালাই। কিন্তু উত্তর চরের উপর বালিখাদ হওয়ায় নদীর জল ধেয়ে এসে চাষজমি ও বাড়ি ঘরদোর ভাসিয়ে দিচ্ছে। এই অবস্থায় বালি তোলা বন্ধ হওয়া জরুরি।” সমস্যার কথা ইতিমধ্যে সোনামুখীর বিডিও, বিষ্ণুপুর মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে জানিয়েছেন তাঁরা। |
গ্রামবাসীর আশঙ্কা যে অমূলক নয়, এলাকায় গিয়ে তার প্রমাণ মিলেছে। বাসিন্দারা আঙুল তুলে একটি বালি খাদ দেখালেন। বছর বছর বন্যার কারণে ইতিমধ্যেই নদের গর্ভে চলে গিয়েছে বিঘের পর বিঘে জমি। গ্রামবাসী হরিপদবাবু বলেন, “সব মিলিয়ে ৩০০ বিঘা জমি খেয়েছে নদ। আমারই ১০০ বিঘা জমি চলে গিয়েছে নদের গর্ভে।” ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন রাজেন্দ্র চৌধুরী, রামসেক সাউ, জয়রাম যাদব প্রমুখ। যদিও বিষ্ণুপুর মহকুমার ভূমি সংস্কার ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “ওখানে বেআইনি কিছু হচ্ছে না। সরকারি নিয়মে পাড় থেকে ২০ মিটার দূরে বালি তোলা। ওখানে তোলা হচ্ছে দেড় হাজার মিটার দূর থেকে।” রবীন্দ্রনাথবাবুর এই দাবি মানতে নারাজ গ্রামবাসীরা। তাঁদের কথায়, “ওই বালি খাদ থেকে ১০০ মিটারের কম দূরত্বে আলু, গম, সর্ষের চাষ হচ্ছে। প্রতিবাদ করেও বালি তোলা বন্ধ করা যায়নি।” সোনামুখীর বিডিও বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত হয়েছে। জল বাড়লে ওখানে বন্যার অন্যতম কারণ বালিখাদ। সমস্যাটির কথা আমরা ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের জানিয়েছি।” |