সকালে গ্রামের পুকুরে মাছ ধরার সময় জালে আটকে গেল ভারি কিছু। অবাক জেলেরা জাল তুলে দেখেন তাতে জড়িয়ে রয়েছে এক মহিলার দেহ। দীপালি গড়াই (২৪) নামে এই মহিলা সোমবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। কান্দির বিপ্রশেখর গ্রামের বাসিন্দা দীপালিদেবীর কোমরে একটি চাদরের সঙ্গে দু’টি ইট ও গামছা দিয়ে একটি অ্যালুমিনিয়ামের বালতি বাঁধা ছিল। ওই মহিলার পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে জলে ফেলে দিয়েছিল শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মৃতার স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির চার জনকে গ্রেফতার
মৃতা দীপালি গড়াই। |
করেছে।
দীপালিদেবীর দেহ উদ্ধারের খবর জানাজানি হওয়ার পরেই তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা ঢাকা দেন বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। পরে পুলিশ অবশ্য মৃতার বাপের বাড়ির লোকেদের সহযোগিতায় গ্রামেরই বিভিন্ন জায়গা থেকে মহিলার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে গ্রেফতার করেছে। তবে দীপালিদেবীর জা-কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাতেক আগে খড়গ্রামের পোট্টাগ্রামের বাসিন্দা দীপালিদেবীর সঙ্গে বিয়ে হয় বড়ঞার অজয় গড়াইয়ের। তাঁদের একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পরপর সব ঠিক থাকলেও বছর তিনেক আগে পেশায় মুদি অজয়বাবুর সঙ্গে এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানার পর বাধা দেন দীপালিদেবী। তা নিয়ে সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। গত সোমবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন দীপালিদেবী। এ বিষয়ে মঙ্গলবার বড়ঞা থানায় অভিযোগও দায়ের করেছিলেন অজয়বাবু। |
ঘটনার পর মৃতার বাপের বাড়ির লোকেরা অজয়বাবুর বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর করে। দীপালিদেবীর বাবা জগন্নাথ সাহা বলেন, “জামাইয়ের অবৈধ সম্পর্কে বাধা দিয়েছিল মেয়ে। তাতেই শ্বশুরবাড়ির লোকেদের হাতে মরতে হল আমার মেয়েটাকে।” মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগে শ্বশুরবাড়ির চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”
|