গাছের গুঁড়ি ফেলে কন্যাযাত্রীর বাস, শববাহী গাড়িতে লুঠপাট
রাস্তার উপরে গাছের গুঁড়ি ফেলে একটি কন্যাযাত্রীর বাস ও একটি শববাহী গাড়িতে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। ‘অপারেশন’ শেষ হওয়ার পরে ওই দুষ্কৃতীরা শববাহী গাড়ির শ্মশানযাত্রীদের দিয়েই রাস্তা থেকে গুঁড়ি সরানোর কাজও করিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার গভীর রাতে রানাঘাট-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে জালালখালি এলাকার ওই ঘটনার পরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কন্যাযাত্রীরা জেলা পুলিশ সুপারের বাংলোর সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার পরে বহুবার ১০০ নম্বরে ফোন করেও সাড়া মেলেনি। তাঁদের দাবি, গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত এই রাজ্য সড়কে পুলিশের কোনও টহলদারি গাড়িও ছিল না। জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র অবশ্য বলেন, “অন্য দিনের মতো এদিনও ওই রাস্তায় পুলিশের গাড়ি টহল দিচ্ছিল। পুলিশের গাড়ি চলে যাওয়ার পরেই দুষ্কৃতীরা হামলা করে।” পুলিশ সুপার বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে দুষ্কৃতীরা রাস্তার উপরে নজর রেখেছিল। তবে আমরাও ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। যদি কোনও পুলিশকর্মীর গাফিলতি ধরা পড়ে, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও গাড়ির যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সেই রাতে রানাঘাট-কৃষ্ণনগর ভায়া বাদকুল্লা বাইপাস রাস্তায় খামারশিমুলিয়া ও জালালখালির মাঝখানে জনবিরল জায়গায় একটি কালভার্টের সামনে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখে দুষ্কৃতীরা। বাধা পেয়ে সেখানেই এক এক করে দাঁড়িয়ে পড়ে শববাহী গাড়ি, কন্যাযাত্রীদের বাস ও অন্য বেশ কয়েকটি গাড়ি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কমল ঘোষাল বলেন, “এক পরিজনের মৃতদেহ নিয়ে আমরা নবদ্বীপ শ্মশানে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি দেখে গাড়িটি থামাতেই পাশের ঝোপ থেকে কয়েক জন দুষ্কৃতী বেরিয়ে এসে আমাদের মারধর করে। সোনার আংটি, মোবাইল ফোন সহ বেশ কয়েক হাজার টাকা লুঠ করে।” শ্মশানযাত্রী অঞ্জন গোস্বামী, দীপক চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘ওরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়ি আটকে লুঠপাট করল। আমাদের সর্বস্বান্ত করে আবার আমাদের দিয়েই রাস্তা থেকে গুঁড়িগুলো সরানোর কাজও করিয়ে নিল।” শ্মশানযাত্রীরা জানান, ওদের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র ও লাঠি। সংখ্যায় প্রায় পনেরো জন ছিল। বয়স কুড়ি থেকে তিরিশের মধ্যে। ওরা সকলেই খুব গালিগালাজ করছিল। একজন মাঝেমধ্যে ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করছিল। রাস্তার দু’পাশে গাছের মাথায় দু’জন ছিল। তারা টর্চের আলো ফেলে রাস্তার দিকে নজর রাখছিল। কন্যাযাত্রীদের একজন চিরঞ্জীব সরকার বলেন, “আমাদের গাড়িতে ৬৫ জন যাত্রীর মধ্যে ২০ জনই ছিলেন মহিলা। গাড়ির চালকের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে ওরা গয়না, মোবাইল সহ নগদ টাকা লুঠ করে। পুরুষ যাত্রীদের ব্যাপক মারধর করে।”
তবে গাড়ি থামিয়ে লুঠপাটের ঘটনা এই প্রথম নয়। মাস কয়েক আগে কৃষ্ণগঞ্জের তারকনগরের কাছে শিবনিবাস-তারকনগরের রাস্তায় বিয়ের গাড়ি থামিয়ে একই কায়দায় ছিনতাই করে দুষ্কৃতীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে সিভিক পুলিশের এক কর্মীকে ব্যাপক মারধরও করা হয়। এ বার এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় প্রায় এক ঘণ্টা ধরে দুষ্কৃতীরা যে ভাবে লুঠপাট চালাল তাতে রীতিমতো উদ্বিগ্ন এলাকার মানুষ ও নিত্যযাত্রীরা। তবে দুষ্কৃতীদের ওই দলটিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.