|
|
|
|
চাঁইপাটে মানরক্ষা এসএফআইয়ের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের চাঁইপাট কলেজে জয় পেল সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫টি কলেজের মধ্যে একমাত্র ওই কলেজেই ছাত্র সংসদ গঠন করতে চলেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এসএফআইয়ের যোগ-সাজশের অভিযোগ তুলে পুনর্গণনার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
দুই মেদিনীপুরে একমাত্র চাঁইপাট কলেজে জিতেছে এসএফআই। এটা পরাজয় না জয়? এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা বলেন, “অবশ্যই জয়। এ বার একটা কলেজ পেয়েছি। গতবার তো তা-ও পাইনি। যেখানেই ছাত্রছাত্রীরা নির্ভয়ে মত প্রকাশের সুযোগ পাবে, সেখানেই টিএমসিপি হারবে।” তাঁর কথায়, “চাঁইপাটেও আমরা সব আসনে প্রার্থী দিতে পারিনি। ১৫টি আসনের মধ্যে ১৪টিতে প্রার্থী দিয়েছিলাম। তার মধ্যে ১০টিতে আমরা জিতেছি।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্য এলাকার থেকে দাসপুর বারবারই ব্যতিক্রমী। এখানে ঘনঘন রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা তেমন ঘটে না। ক্ষমতায় যেই থাকুক, বিরোধী পক্ষের কাছেও রাজনৈতিক কর্মসূচি সংগঠিত করার সুযোগ থাকে। ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলার ২১টি আসনের মধ্যে একমাত্র দাসপুর আসনটিই পেয়েছিল তৃণমূল। গড়বেতা-কেশপুর সহ জেলার প্রায় সর্বত্র তখন সিপিএমের দাপট ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার ৬২টি জেলা পরিষদ আসনের যে ৩টি তৃণমূল পেয়েছিল তার প্রতিটিই ছিল দাসপুর ২ ব্লকের। ওই বছরই দাসপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতিতেও জেতে তৃণমূল।
তবে, এখন ক্রমশ দাসপুরে সিপিএমের সাংগঠনিক জনভিত্তি বাড়ছে বলে রাজনৈতিক মহলের মত। ভাল ফল হয়েছে পঞ্চায়েতেও। কিছু স্কুল নির্বাচনেও জিতেছে সিপিএম। এসএফআইয়ের ওই জয়ের নেপথ্যে এলাকায় সিপিএমের ভাল সংগঠন থাকা যেমন অন্যতম কারণ, তেমনি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও টিএমসিপি-র খারাপ ফলের জন্য দায়ী বলে এলাকাবাসীর অভিমত। এ ছাড়াও চাঁইপাট কলেজে আটোসাঁটো পুলিশি নিরাপত্তা, কলেজ কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষতা ওই জয়ের অন্যতম কারণ বলে ছাত্রদের একাংশের। যুক্তিগুলি মানছেন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডাও। তাঁর কথায়, “দাসপুরের মানুষ শান্তিপ্রিয়। তাঁরা প্রগতিশীল চিন্তার শরিক। পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিবেশটাও অনেক
বেশি গণতান্ত্রিক।”
চাঁইপাট কলেজ একক ভাবে দখল করেছে এসএফআই। এটা কী টিএমসিপির সাংগঠনিক ব্যর্থতা নয়? টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, “সাংগঠনিক ব্যর্থতার প্রশ্নই ওঠে না।” জেলা সভাপতির অভিযোগ, “কলেজে কর্তৃপক্ষই এসএফআইকে জিতিয়ে দিয়েছেন। বিকাল তিনটে থেকে রাত দশটা পর্যন্ত গণনাই তার প্রমাণ।” একই বক্তব্য ওই কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা ব্লক তৃণমৃল সভাপতি তপন দত্তের। তিনি বলেন, “বেশ কিছু বহিরাগত পড়ুয়াকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিছু শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী এই সুযোগ না করে দিলে টিএমসিপিই জয়ী হত। তাই আমরা পুনর্গণনার দাবি জানাচ্ছি।”
কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগ-সাজশের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অধ্যক্ষ দেবাশিস সর্দার। তিনি বলেন, “আমাদের কলেজে লোকবল খুবই কম। ২০০৭-এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের পর কলেজে এই প্রথম ছাত্রভোট হল।” তিনি মানছেন অনভিজ্ঞতার কারণে ফল প্রকাশে কিছুটা দেরি হয়েছে। পুনর্গণনা প্রসঙ্গ অধ্যক্ষ বলেন, “ওই দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|