২৯.০১.২০১৪-র আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত ‘ভাতের পাতেই বিষের আড়ত, ভরসা মুক্তশ্রী’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে উৎপন্ন চালের প্রায় ৩০ শতাংশ আর্সেনিক-দূষণে দুষ্ট। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূষিত চালের প্রতি কেজিতে আর্সেনিক রয়েছে ৪০০-৬০০ মাইক্রোগ্রাম।
এটা কৃষি দফতরের সমীক্ষায় প্রকাশিত বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এ রকম কোনও সমীক্ষা প্রকাশিত হয়নি। এহেন ভিত্তিহীন, অসমর্থিত ও দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমাদের রাজ্যের চাল বহু দেশে রফতানি করা হয়। ওই সমস্ত দেশ পরীক্ষা করে তবেই চাল কেনে। এখনও পর্যন্ত চালের কোনও নমুনা ধরা পড়েনি, যা নির্ধারিত মানের চেয়ে খারাপ।
কোনও আপত্তিকর উপাদানের উপস্থিতির জন্য এখনও পর্যন্ত রফতানি হওয়া চালের কোনও বরাত বাতিল করা হয়নি। |
ওই প্রতিবেদন স্থানীয় ক্রেতা তো বটেই, সেই সঙ্গে বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যেও ভীতির সঞ্চার করেছে। বিশেষ করে প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ার কথা মাথায় রাখলে আন্দাজ করা যায়, ওই প্রতিবেদন আমাদের গরিব কৃষকদের কতটা ক্ষতি করবে। অথচ দেশের মধ্যে সব চেয়ে বেশি পরিমাণ চাল উৎপাদন করার কৃতিত্ব তাঁদেরই।
প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথাকথিত ‘বিজ্ঞানীদের’ দাবি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। তাই, সত্য হিসেবে জনসমক্ষে তা প্রচারিত হওয়া উচিত নয়।
সুব্রত বিশ্বাস। আইএএস, কৃষিসচিব। পশ্চিমবঙ্গ সরকার
|
এই সমাজে নারী হয়ে জন্মানোটাই যেন একটি বিরাট দুর্যোগের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি যখন ছোট ছিলাম পিসিমা, মাসিমা এবং জেঠিমাদের দেখেছি বা গল্প শুনেছি যে, তখনকার দিনে তাঁরা যে ভাবে পথেঘাটে চলাফেরা করেছেন, তখন তাঁদের একটি স্বাধীনতা ছিল। কিন্তু এখন আমাদের মেয়েরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছে, পথেঘাটে নানান কাজে বেরোচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা বাড়িতে না-ফিরছে, ততক্ষণ চিন্তায় ঘরে ছটফট করছি। মেয়ের মা হয়ে এত উদ্বেগ সহ্য করা সত্যিই কষ্টকর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু কেন তা হবে?
এর জন্য সমাজ নিজেই দায়ী। চার দিকে যে ভাবে মেয়েদের উলঙ্গ শরীর সংবাদপত্রে, টিভিতে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম এমনকী সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হচ্ছে যে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যে নানান যৌন অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ করা যাচ্ছে। কোনও গোপনীয়তা নেই। এতে যদি বিকৃত মনের জন্ম হয়, তা হলে কি শুধু ছেলেমেয়েদেরই দোষী করা যায়?
আমরা যখন ছোট ছিলাম অভিভাবিকাদের কাছে শুনেছি, সিনেমা বলুন বা যৌন কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা বলুন, সব ব্যপারে একটি মাত্রাজ্ঞান ছিল, সীমা ছিল। যেমন, নায়কনায়িকার ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত বোঝাতে দুটো ফুল জোড়া লেগে যাওয়া কিংবা দুটো পাখির ঠোঁটে ঠোঁট লাগানো দেখানো হত। এখন প্রায় পুরো যৌনক্রিয়াটি দেখিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে আজকের দিনের ছেলেমেয়েরাও এগুলো নিজেরাই করে ফেলে। পুরনো দিনে ‘ভ্যাম্প’রা শরীর দেখানো পোশাক পরত কিন্তু এখন মূল নায়িকারাই ভ্যাম্পের পোশাক পরে নাচ, গান অভিনয় করে। এর প্রভাব ছেলেমেয়েদের উপর তো পড়বেই।
আগেকার দিনে লোকেরা উলঙ্গ মেয়েদের ছবিওয়ালা বই লুকিয়ে চুরিয়ে বাড়িতে রাখত। এখন প্রকাশ্যেই সেই সব নোংরা ছবি টেবিলের উপর পড়ে থাকে। এর প্রভাব পড়ছে সমাজে। নোংরা ছবি, সিনেমা, প্রাপ্তবয়স্কদের নানান বইপত্তর দেখে উত্তেজিত হচ্ছে এবং নারী ধর্ষণের মধ্য দিয়ে তার প্রকাশ লক্ষ করা যাচ্ছে।
পোশাক-আশাক, চালচলন, সভ্য নম্র ব্যবহার ইত্যাদির মারফত সমাজকে পাল্টানো যায়। তা না-হলে দেশ-দুনিয়া আরও শেষ হয়ে যাবে।
বিরাজলক্ষ্মী। বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ |