রানির কোষাগারে টান! তাই ডাক পড়েছে প্রজার। রাজপ্রাসাদের দ্বার আরও অবারিত হচ্ছে তাঁদের জন্য।
দর্শনার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থে শেষকালে রাজকোষ সামাল দিতে হবে? বাকিংহাম প্যালেসের এখন কিন্তু সেই রকমই দশা।
এই নিয়ে এখন মজা করতে শুরু করেছে ব্রিটিশ দৈনিকগুলো। কেউ ঠাট্টা করছে, রানির কর্গিদের ব্র্যান্ডেড খাবার না খাইয়ে সাধারণ খাবার দেওয়া হোক। কোথাও ছাপা হচ্ছে ব্যঙ্গচিত্র: রাজপরিবারের কোনও সদস্য বাথটাবে গা ডুবিয়ে বসে। আর বাথরুমের দরজায় ভিড় দর্শনার্থীর। ঘন ঘন ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। ব্যঙ্গচিত্রের নীচে লেখা, রাজপরিবারের বাথরুমে ছবি তোলা চলবে না!
এমনিতে বছরে ৭৮ দিন সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় বাকিংহাম প্যালেস। রাজকোষের ঢু ঢু দশায় এ বার ব্রিটিশ এম পি-দের পরামর্শ: রানি যখন থাকবেন না, সেই সময়েও ঢুকতে দেওয়া হোক জনতাকে। এতে আখেরে লাভ হবে রাজপ্রাসাদেরই। কারণ সেটা সারাই করারও আশু প্রয়োজন।
কী এমন হল যে রানির বাড়ির এত করুণ দশা? ব্রিটেনের কমন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, রাজকোষে এখন মাত্র ১০ লক্ষ পাউন্ড জমা রয়েছে। রাজপরিবারের ইতিহাসে যা নজিরবিহীন। বাকিংহাম প্যালেসের এত খারাপ হালের জন্য এম পি-রা দুষছেন রানির কোষাগার উপদেষ্টাদেরই। যাঁরা এত বেশি খরচ করে ফেলেছেন যে ২০০১ সালে রাজকোষের ৩ কোটি ৫০ লক্ষ পুঁজি আজ এক ধাক্কায় নেমে এসেছে মাত্র ১০ লক্ষ পাউন্ডে। গত পাঁচ বছরে ব্রিটেনে সরকারি সব খাতে খরচ কাটছাঁট শুরু হলেও রাজপ্রাসাদ পরিচালন কর্তৃপক্ষ মাত্র ৫ শতাংশ খরচ কমাতে পেরেছেন বলে দাবি।
ওই কমিটির লেবার চেয়ারম্যান মার্গারেট হডগে সাফ বলছেন, “কোষাগারের দায়িত্বে থাকা লোকজনের উচিত রানির বাড়ির খরচাপাতি ভাল করে খতিয়ে দেখা। তাঁরা সেটা করেননি বলেই আজ এই অবস্থা।” একে ভাঁড়ে মা ভবানী! তার উপরে রাজপ্রাসাদের বিভিন্ন অংশেরও ভগ্ন দশা। সে সব মেরামতির জন্য প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। বাকিংহাম প্যালেস এবং উইন্ডসর কাস্ল নাকি দ্রুত সারানোর প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রেও রানির আর্থিক উপদেষ্টারা নজর দেননি বলে জানিয়েছেন হডগে।
পাঁচ বছর আগে যত লোক রাজাপ্রাসাদে কাজ করত, এখনও সেই সংখ্যক লোক রেখে দেওয়া হয়েছে। হডগে বলছেন, তাতে তো যথেষ্ট বেশি খরচ হচ্ছে। যেটা কমিয়ে সারাইয়ের খরচ জোগাড় করা যেত। পাশাপাশি ২০০৭ সালেও রানির আয় অনেক বেড়ে গিয়েছিল, তা সত্ত্বেও কেন এই অবস্থা? তার সদুত্তর মেলেনি। আয় বাড়াতে এখন রানির ভরসা তাই প্রজারাই। |