আয়লার পরে সুন্দরবনে বাঁধ তৈরির জন্য জমি দিলেও এখনও কোনও পুনর্বাসন বা ক্ষতিপূরণ পাননি দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা ব্লকের বালি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতেরকনা এলাকার প্রায় ১৩৫টি কৃষিজীবী পরিবার। প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যেই তাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে ওই জমিতে বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু পুনর্বাসন না পাওয়ায় ওই পরিবারগুলি কার্যত খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ। তবে আয়লা নদী বাঁধ প্রকল্পের ওসি সুজিত সিংহ বলেন, “যাঁদের জমির কাগজপত্র নেই বা সরকারি জমিতে বসবাস করছেন তাঁদের জমির বিনিময়ে সরকার একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সেই মতো একটি মনিটরিং কমিটি তৈরি করে নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। কে কতটা জমি ভোগ করতেন তা খতিয়ে দেখে সেই মতো ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। |
সাতেরকনা এলাকায় আমলামেথি মৌজার প্রায় ৪০০ বিঘা সরকারি খাস জমিতে দীর্ঘ দিন বসবাস ও চাষ-আবাদ করছেন ১৩৫টি চাষি পরিবার। তাঁদেরই মধ্যে বনমালি মণ্ডল, গৌর বিশ্বাস বলেন, “বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকে ওই জমিতে চাষ করছি। আমরাও চাই নদী বাঁধ হোক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী বাঁধের জন্য ওই এলাকায় ঘর বাড়ি ভেঙে কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। অথচ আমরা এখনও কোনও ক্ষতিপূরণ পাইনি। ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে খোলা আকাশের তলায় বাস করতে হচ্ছে। এখন আমরা কোথায় যাব?” তাঁদের অভিযোগ, বিষয়টি প্রশাসনের সব স্তরে জানানো হলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলাকায় এসে ওই বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেন। পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান অসীমা বিশ্বাসও বলেন, “নদী বাঁধ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বলে আমরা খুশি। সরকারের তরফে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন দিয়ে তবেই জমি নেওয়া হবে বলে বলা হয়েছিল। অথচ এই পরিবারগুলির কেউই পুনর্বাসন পাননি।”
গোসাবার সেচ দফতরের এসডিও বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “মানুষের সম্মতি নিয়েই কাজ শুরু করেছিলাম। ওঁদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এমনিতেই এলাকায় বাঁধের সমস্যা রয়েছে। তাই বর্ষাকালের আগেই বাঁধের কাজ শেষ করতে হবে বলে কাজ শুরু করা হয়েছে।
ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে ওঁদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” |