|
|
|
|
জোট হচ্ছে না বুঝেই রাহুলকে আক্রমণ নীতীশের
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২৮ জানুয়ারি |
কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা প্রায় নেই বুঝতে পেরেই সরাসরি রাহুল গাঁধীর প্রতি আক্রমণ শানালেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। লালুপ্রসাদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট গড়ার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। এই পরিস্থিতিতে নীতীশ আজ যে ভাবে সরব হলেন, সেটা তাঁর হতাশার বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করা হচ্ছে।
মাস ছয়েক আগে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মনোনীত হওয়ার পরেই এনডিএ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করেন নীতীশ। পরিকল্পনা ছিল, বিহারে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পাল্টা ধাক্কা দেবেন বিজেপিকে। কিন্তু কংগ্রেস এখন আরজেডি-র সঙ্গে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা শুরু করেছে। ফলে লোকসভায় নীতীশের পক্ষে একা লড়া ছাড়া উপায় নেই। প্রথমে এগিয়ে এসেও কংগ্রেস যে ভাবে শেষ মুহূর্তে লালুপ্রসাদের সঙ্গে জোট গড়তে তৎপর হয়েছে, সেটা বিশ্বাসভঙ্গের সামিল বলেই মত দলের। জোট প্রক্রিয়ায় অন্যতম ভূমিকা খোদ রাহুল গাঁধীর। আজ তাই রাহুলের বিরুদ্ধে কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন নীতীশ।
কংগ্রেসও নীতীশের চেয়ে কিছুটা দূরত্ব রাখতে চাইছে। ৩০ জানুয়ারি কিষাণগঞ্জে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের শিলান্যাস করতে আসছেন সনিয়া গাঁধী। অভিযোগ, নীতীশকে আমন্ত্রণ দূরে থাক, রাজ্যকে অনুষ্ঠান সম্পর্কে অবহিতই করেনি কেন্দ্র। ভোটের আগে নীতীশের সঙ্গে মঞ্চ ভাগাভাগি করলে মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের সামনে নীতীশের প্রচারই করা হবে বলে মনে করছে রাজ্য কংগ্রেস। অথচ ঘটনা হল, নীতীশই নিজে তৎপর হয়ে জমি-জট কাটিয়ে কিষাণগঞ্জে ২২৪ একর জমির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য বিনামূল্যে জমি বরাদ্দ করেছেন। অনুষ্ঠানে রাজ্যকে ডাকা হয়নি বলে ক্ষোভ গোপন করেননি নীতীশ। সংখ্যালঘু ভোটের কথা মাথায় রেখে লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, তাঁরা যথাবিধি নীতীশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কোথাও একটা গোলমাল হচ্ছে। গত কালই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিহারের শিক্ষামন্ত্রী পি কে শাহি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী পাল্লাম রাজুকে একটি কড়া চিঠিও দিয়েছেন।
পাশাপাশি লালু-রাহুল ঘনিষ্ঠতাকে বিঁধে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দাগি রাজনীতিকদের বাঁচাতে কেন্দ্র যে অধ্যাদেশ নিয়ে এসেছিল, রাহুল তা সকলের সামনে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু সেটা আসলে লোক দেখানো ঘটনা ছাড়া কিছু নয়।” জেডিইউয়ের যুক্তি, কংগ্রেস যদি সত্যিই স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারও সঙ্গে জোট করতে চাইত, তা হলে নীতীশের উপরে ভরসা রাখত। আরজেডির সঙ্গে হাত মেলানোর অর্থ একটাই ক্ষমতার স্বার্থে দাগিদের সঙ্গে ঘর করতে পিছপা নয় কংগ্রেস। নীতীশের কটাক্ষ, “মন ও স্বভাবে দুই দল একই রকম। সুতরাং এই জোট নিয়ে কিছু বলার নেই।”
এনডিএ ছেড়ে আসার পর থেকেই কেন্দ্র তথা কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলার কৌশল নিয়েছিলেন নীতীশ। পিছিয়ে ছিল না কংগ্রেসও। নীতীশকে পাশে পেতে বিহারের জন্য বিশেষ প্যাকেজ দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করে কেন্দ্র। গত বছর দাগি জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে একটি অধ্যাদেশ এনে প্রত্যাহার করা হয়। ফলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের শিকার হন লালুপ্রসাদ যাদব। সাংসদ পদ খোয়ান তিনি। জেডিইউয়ের এক নেতার কথায়, “লালু জেলে যাওয়ার পরে কংগ্রেস-জেডিইউ জোট সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছিল দল।” কিন্তু গত দু’মাসে সেই পরিস্থিতি পালটে যায়। |
|
|
|
|
|