রাজ্য জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া। গত ২০ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদে হয়েছে কলেজ ভোট। আজ, মঙ্গলবার নদিয়ার কলেজগুলিতে ভোট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। তবে জেলার ১৬ টি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কথা ছিল, কিন্তু এর মধ্যে ১৩টি কলেজেই ফলাফল ঘোষিত। সেখানে ভোট হবে না। এই কলেজগুলিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে গিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। চাপড়া বাঙ্গালঝি কলেজ ও বেতাই অম্বেডকর কলেজে ভোট হবে। সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে লড়াই এসএফআইয়ের। এ ছাড়া, হরিণঘাটা মহাবিদ্যালয়ে ৪৬টি আসনের মধ্যে ৩৯টি আসনে নির্বাচন হবে। ছাত্র পরিষদ অবশ্য একটি কলেজেও প্রার্থী দেয়নি।
নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকে জেলার বিভিন্ন কলেজগুলি, বিশেষ করে মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার দিনগুলিতে অশান্ত হয়ে উঠেছে। ঘটেছে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনাও। একাধিক কলেজে যথেচ্ছ বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। ছাড় পাননি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। বেথুয়াডহরি কলেজে অধ্যক্ষ নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে। চাপড়া বাঙ্গালঝি কলেজে বোমা ফেটে জখম হয়েছিলেন এক পথচারী। মাজদিয়া সুধীরঞ্জন লাহিড়ি মহাবিদ্যালয়ে সংঘর্ষ বেধেছিল এসএফআই ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে। সেখানে জখম হয়েছিলেন চিত্র সাংবাদিকরা। রানাঘাট ও হরিণঘাটা কলেজেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছিল।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। সেই অভিযোগ তুলেই শেষ পর্যন্ত জেলার সব কলেজ থেকেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করে ছাত্র পরিষদ। সংগঠনের জেলা নেতৃত্বের পক্ষে দিব্যেন্দু বসু বলেন, “প্রার্থী দেব কী করে? কলেজে কলেজে যে ভাবে টিএমসিপি সন্ত্রাস করেছে তাতে আমরা প্রার্থী দিলে যে কোনও সময়ে প্রাণহানির আশঙ্কা করছি। তাই আমরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এসএফআই-এর জেলা সভাপতি কৌশিক দত্ত বলেন, “চাপড়া ও বেতাই কলেজে আমরা টিএমসিপি-র সন্ত্রাসকে প্রতিহত করে প্রার্থী দিতে পেরেছি। বাকি কলেজে আমাদের ছেলেমেয়েরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে তাদের উপরে লাঠি বোমা নিয়ে চড়াও হয়েছে টিএমসিপি। তবে প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ থাকে, তাহলে ওই দু’টি কলেজে আমরাই জিতব।” অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত বলেন, “আমরা ১৩ টি কলেজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছি। ছাত্র ছাত্রীরা আমাদের বিপুল ভাবে সমর্থন করায় বিরোধীরা তাদের প্রার্থী খুঁজে পায়নি। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে বিরোধীরা।”
জেলা পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, “জেলার তিনটি কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন রয়েছে। ডিএসপি পর্যায়ের অফিসারদের পাশাপাশি আইসি-রাও কলেজ দু’টিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশও মোতায়েক করা হয়েছে।” |
প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ হয়, তাহলে যে কলেজগুলিতে নির্বাচন হচ্ছে সেখানে আমরা অবশ্যই জিতব।
কৌশিক দত্ত, জেলা সভাপতি, এসএফআই |
প্রার্থী দেব কী করে? কলেজে টিএমসিপির সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আমরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।
দিব্যেন্দু বসু, সহ সভাপতি, ছাত্র পরিষদ |
আমরা জেলার ১৩ টি কলেজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছি। ব্যর্থতা ঢাকতে মিথ্যা অভিযোগ করছে বিরোধীরা।
অয়ন দত্ত, জেলা সভাপতি, টিএমসিপি |
|