সিপিএমের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যকে গলা কেটে খুনের অভিযোগ উঠল বালুরঘাটে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের আজমতপুরের দখলাইন এলাকায় নিজের বাড়ির সামনেই সিপিএমের একজন প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য রঞ্জিত রায়ের (৪৫) গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নিহতের পরিবারের তরফে অভিযোগ পেয়ে খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। দুষ্কৃতীদের ধরতে তদন্ত শুরু হয়েছে।” পুলিশ জানায়, অভিযোগে কোনও রাজনৈতিক দল কিংবা তাদের কর্মীদের নামের কোনও উল্লেখ নেই।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী অভিযোগ, “পঞ্চায়েত ভোটের পরে রঞ্জিতকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তিনি দলবদল না করায় ছক কষে তাঁকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার পরে নিহতের বাড়ির লোকজনও আতঙ্কে কারও নামে অভিযোগ করেননি।” তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র দাবি করেন, পুরানো শত্রুতা থেকে ওই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁরকা এলাকার কয়েকজনের মারফত্ জানতে পেরেছেন। বিপ্লববাবু বলেন, “ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরে ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে বলেই আমরা এলাকা থেকে শুনেছি। অথচ তৃণমূলকে জড়িয়ে রাজনৈতিক লাভ তোলার চেষ্টা হচ্ছে।”
অল্প পরিমাণ চাষ জমির মালিক নিহত রঞ্জিতবাবুর বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও ২ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে। দুই মেয়ে যথাক্রমে নবম ও চতুর্থ শ্রেণির। ছেলেটি দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। কিছুদিন আগে রঞ্জিতবাবু জমিতে সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়ে সেচের জল বিক্রির মাধ্যমে রোজগারের বন্দোবস্ত করেন। এলাকার এক তৃণমূল সমর্থকও কাছাকাছি জায়গায় একটি সাব মার্সিবল পাম্প বসান। তা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে চাপা রেষারেষি তৈরি হয় বলে পরিবার সূত্রের দাবি। তবে খুনের ঘটনার সঙ্গে ওই বিবাদের যোগসূত্র রয়েছে কি না সেই ব্যাপারে নিহতের পরিবারের তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
নিহতের ছেলে বিশ্বজিত্ বলেন, “রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বাবা ও আমি জমিতে থেকে বাড়ি ফিরে আসি। সে সময় শৌচকর্ম করতে বাড়ির ভিতরে চলে যাই। ফিরে এসে বাবাকে না দেখে রাত ১০টা নাগাদ খুঁজতে বার হই। বাড়ির কাছে টর্চের আলোয় দেখি, বাবার রক্তাক্ত দেহ রাস্তার পাশে পড়ে আছে।” এর পরে বাড়ির লোকজন পুলিশে খবর দেন। রাত ১১টা নাগাদ পুলিশ গিয়ে দেহ নিয়ে ময়নাতদন্তে পাঠায়। |