নাশকতার আশঙ্কায় আজ, রবিবার প্রজাতন্ত্র দিবসে উত্তরবঙ্গ জুড়েই কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে। কারণ, প্রজাতন্ত্র দিবস ‘বয়কট’ করে রবিবার উত্তরবঙ্গ ও অসমে বন্ধের হুমকি দিয়েছে কেএলও। এই পরিস্থিতিতে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। গত ডিসেম্বর মাসে জলপাইগুড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনার পরে সে জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ বার মালদহেও এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। শনিবার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলায় বৈঠক করেছেন উত্তরবঙ্গের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা রাজ্য পুলিশের ডিজি (সশস্ত্র বাহিনী) রাজ কানোজিয়া। |
তিনি বলেন, “কেএলও-দের বন্ধের হুমকির মোকাবিলায় পুলিশ প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।” তিনি জানান, আলিপুরদুয়ার, কুমারগ্রাম বা কালচিনি এলাকায় কোনও সন্দেহজনক বস্তু পাওয়া গেলে শিলিগুড়ি থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ সরঞ্জাম ও বিশেষজ্ঞ পৌঁছতে আসতে প্রায় ৪ ঘন্টা লেগে যায়। তাই আলিপুরদুয়ারে আরেকটি বোমা নিষ্ক্রিয়করণ শাখা খোলা হবে বলে ডিজি (সশস্ত্র বাহিনী) জানান। সেই সঙ্গে ডিজির দাবি, কেএলওরা বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও চা বাগানগুলিতে থেকে যে ভাবে তোলা আদায় করছিল তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে।
জলপাইগুড়ি, মালদহের পাশাপাশি কোচবিহার, দার্জিলিং এবং দুই দিনাজপুর জেলাতেও আজ ররিবার বাড়তি সর্তকতা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছাড়া সাদা পোষাকের পুলিশকর্মীরা থাকবেন বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে জলপাইগুড়ি এবং মালদহের কিছু এলাকায় পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারিও চলবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। বাস স্ট্যান্ড এবং স্টেশনেও বাড়তি নজরদারি থাকছে বলে সূত্রের খবর। মালদহে, কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছনোর পরে হবিবপুর, বামনগোলা, গাজল ও পুরাতন মালদহে মোতায়েন করা হবে। কেএলও জঙ্গিদের তল্লাশিতে রাজ্য পুলিশের অভিযানেও কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে বলে জানানো হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এক কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী মালদহে আসবে।”
শনিবার দুপুরে আলিপুরদুয়ারে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজ কানোজিয়া, উত্তরবঙ্গের আইজি জাভেদ শামিম সহ জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপারদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর পুলিশ কর্তারা অলিপুরদুয়ার মহকুমার কুমারগ্রাম বারবিশা সংলগ্ন অসম বাংলা সীমানা ঘুরে দেখেন। আলিপুরদুয়ারে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ শাখা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। পরে কেএলও-দের গতিবিধি ঠেকাতে ডিজির কাছে বাড়তি পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের আর্জি জানানো হয়। বৈঠকে স্পেশাল আইজি সি এস লেপচা, জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল, কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল, আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া, কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত ও গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। |
ভরসা শ্যাম, ক্যালভিন
নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
দম ফেলার জো নেই শ্যাম ও ক্যালভিনের। সকাল ন’টা নাগাদ একটা ডিম এক লিটার দুধ ও এক পাউন্ড পাউরুটি খেয়ে কাজ শুরু করে ওরা। সারা দিন কাজের পর বিকেল সাড়ে পাঁচটার সময় ৩৪০গ্রাম পাঁঠার মাংস, ২৪০ গ্রাম চাল ও ১৫০ গ্রাম সবুজ সব্জি হলুদ দিয়ে ফুটিয়ে খাওয়ানো হয় ওদের। অনেক সময় বিকেলে রান্না করা খাবার খাবার সময় না থাকায় শুকনো খাবারই খায় ওরা। সপ্তাহে এ কদিন মেডিক্যাল চেক আপ ও একদিন আরপিএফের ক্যাম্পে বিস্ফোরক খোঁজার মহড়ায় অংশ নেয় রেল সুরক্ষা বাহীনির পুরুষ স্নিফার ডগ ওই দুই ল্যাব্রাডর। আজ, ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে কেএলও-সহ বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন অসম ও উত্তরবঙ্গে বন্ধ ডেকেছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে তাদের ব্যস্ততা আরও বেড়েছে। ট্রেনার শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, পালা করে একজন অসম বাংলা সীমানা ঘেষা রেলস্টেশন গুলিতে ও একজন আলিপুরদুয়ার মহকুমা তথা এলাকার রেলষ্টেশন গুলিতে নজরদারি চালায়। উত্তর পুর্ব সীমান্ত রেলে আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের সিকিউরিটি কমান্ডেন্ট বি কে অঙ্গামি বলেন, “মূলত ট্রেন, রেললাইন ও স্টেশনে বিস্ফোরক সন্ধানের জন্য দুটি স্নিফার ডগ রয়েছে আমাদের কাছে। তবে এলাকায় নাশকতা ঠেকাতেও শ্যাম ও ক্যালভিনকে নিয়ে ঘোরা হয়। নাশকতা রুখতে স্নিফার ডগ দু’টি সবসময়ই কাজ করছে।” |