শিক্ষকদের বেশি করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যোগ দিতে আহ্বান জানালেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। শনিবার সিপিএম প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (এবিপিটিএ) রাজ্য বার্ষিক সাধারণ সভায় এসে ওই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিপন্ন বলে আশঙ্কা করে শিক্ষকদের সভায় ‘আন্দোলন-সংগ্রামে’ সকলকে যোগ দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। বিমানবাবু বলেন, “শিক্ষায় সামগ্রিক ভাবে আক্রমণ শুরু হয়েছে। টেট পরীক্ষায় দুর্নীতি, যাঁদের যোগ্যতা নেই, তাঁদেরকেও শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে আন্দোলন করতে হবে। সেই সঙ্গে রাজ্যে সামগ্রীক গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরাতেও আপনাদের আন্দোলন করতে হবে।” বিমানবাবুর বক্তব্যের আগে এবিপিটিএ-এর সাধারণ সম্পাদক সমর চক্রবর্তীও রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে অনান্য বামপন্থী গণসংগঠনগুলির সঙ্গে শিক্ষকদেরও আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান। এ দিনের সভায় প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এবং সিপিএমের দার্জিলিং জেলার কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকারও বক্তব্য রাখেন।
শিক্ষকদের সভায় শিক্ষায় ‘দলতন্ত্র’ নিয়েও রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন বিমানবাবু। তবে বামফ্রন্ট আমলেও শিক্ষায় ‘দলতন্ত্রের’ অভিযোগ ওঠার কথা মেনে নিয়ে, শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এবিপিটিএ-এর সভায় বাম আমলেও ‘কোথাও কিছু ভুলের’ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান। তাঁর কথায়, “অতীতে শিক্ষায় দলবাজির কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়। তবে কোথাও কিছু ভুল হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তৃণমূল এখন যেমন জেলার প্রাথমিক বোর্ড থেকে শুরু করে রাজ্য পর্যায়ের সব বোর্ড, পর্ষদে নিজেদের দলের লোককে বসাচ্ছেন, তা আগে হয়নি।” বিমানবাবুর দাবি, অরাজনৈতিক ব্যক্তিরাই সেই সব শীর্ষ পদে থাকতেন, এবং তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করতেন বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। সেই প্রতিনিধিদের মধ্যে ডানপন্থীরাও থাকতেন বলে তাঁর দাবি।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীরও সমালোচনা করেন বিমানবাবু। তাঁর কটাক্ষ, “রাজ্যের সর্বত্র বিভিন্ন ভঙ্গিমায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো হয়েছে। উনি যদি এতই জনপ্রিয় তবে ওঁর এত ছবি কেন?” তাঁর অভিযোগ, “সাধারণ মানুষের টাকা এ ভাবে খরচ করার কোনও অধিকার রাজ্য সরকারের নেই।” |