|
|
|
|
উদ্ধার মা-মেয়ের রক্তাক্ত দেহ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
ফ্ল্যাটের দরজা ছিল ভেজানো। ঘরের ভেতরে দরজার আই-হোলের উপরে সাঁটা ছিল চওড়া টেপ। ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো, আলমারি খোলা। আর শোওয়ার ঘরে খাটের উপর পড়ে মা-মেয়ের মৃতদেহ। তাঁদের হাত-পা-মুখ টেপ দিয়ে বাঁধা। মেয়ের গলায় ধারালো অস্ত্রের গভীর ক্ষত।
শনিবার দমদম ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন সুভাষ নগর বাই লেনের এই জোড়া খুন নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত ধন্দে তদন্তকারীরা। প্রতিবেশী এবং পুলিশের একটি অংশের সন্দেহ, ডাকাতির উদ্দেশ্যেই খুন করা হয়েছে নমিতা গুনিন (৪৫) এবং শ্রেয়সি গুনিন (১৮)-কে। যদিও তদন্তকারীদের আর এক অংশের সন্দেহ, এটা পেশাদার খুনির কাজ। আগে থেকে ছক কষে মারা হয়েছে দু’জনকে। প্রতিবেশীদের দাবি, শ্রেয়সীর মায়ের শরীরেও ধারালো অস্ত্রের ক্ষত ছিল।
সুভাষ নগর বাই লেনে একটি আবাসনের চারতলায় স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে আট-দশ বছর ধরে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মচারী সৌমেন্দ্র গুনিন। প্রতিবেশীরা জানান, সৌমেন্দ্রবাবু সারা দিন বাড়ি ছিলেন না। রাত ৮টা নাগাদ বাড়ি ফিরে তিনিই সকলকে এই ঘটনার কথা জানান।
প্রতিবেশী ডেনিস সানি বলেন, “আমার স্ত্রী রাজশ্রীকে সৌমেন্দ্রবাবু ফোন করে ডাকেন। তিনি গিয়ে ওই দৃশ্য দেখে পুলিশে খবর দেন।’’ আর এক প্রতিবেশী, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি তাপস মজুমদার বলেন, “খবর পেয়ে পাড়ার ছেলেদের নিয়ে আসি। পুলিশে খবর দিই। দেখি ঘর তছনছ হয়ে আছে।”
রাতেই সৌমেন্দ্রবাবুকে দমদম থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এডিসি (বেলঘরিয়া) বিশ্বজিৎ ঘোষ। গভীর রাত পর্যন্ত চলে জেরা। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “দু’জনকেই খুন করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।”
তবে সৌমেন্দ্রবাবুর মেয়ের মৃতদেহের গলায় গভীর ক্ষত দেখে তদন্তকারীদের একাংশের সন্দেহ, মৃত্যু নিশ্চিত করতেই ওই ভাবে গলা কাটা হয়েছে। পেশাদার খুনিরা সাধারণত এই ভাবে কাজ করে থাকে। খুনের পরে নজর ঘোরানোর জন্যই আসাবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিস এলোমেলো করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে দেহ উদ্ধারের বেশি আগে যে খুন হয়নি, সে বিষয়ে পুলিশ মোটামুটি নিশ্চিত। কারণ, মা ও মেয়ের দেহে, বিছানা এবং মেঝেতে টাটকা রক্ত লেগেছিল বলে তদন্তকারীরা জানান। ফ্ল্যাটটি আপাতত সিল করে দিয়েছেন তদন্তকারীরা। |
|
|
|
|
|