রাস্তা তৈরি পরেই পিচের মাঝে ঘাস
দীর্ঘ দিন ধরেই এলাকায় পাকা রাস্তার দাবি ছিল। এ নিয়ে চিঠি-চাপাটিও কম হয়নি। অবশেষে রাস্তায় পিচ পড়লেও বাসিন্দাদের মুখের হাসি ফুরলো এক সপ্তাহের মধ্যেই। পিচ রাস্তার বুকে যে মাথা তুলেছে কচি ঘাস! ঘটনাটি পুঞ্চার।
বাগদা থেকে গোপালপুর পর্যন্ত চার কিলোমিটার পথ মোরামের ছিল। কিন্তু দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় ওই রাস্তা খানাখন্দে ভরে উঠেছিল। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ওই রাস্তা নির্মাণের জন্য ১ কোটি ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। ২০১৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা ওই রাস্তা নির্মাণের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। সম্প্রতি সেই রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে।
কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইতিমধ্যেই রাস্তার কয়েকটি জায়গায় পিচ উঠে গিয়ে গর্ত বেরিয়ে পড়েছে। পাথর ছড়িয়ে পড়ে রাস্তার অবস্থা আগের থেকেও খারাপ হয়ে পড়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাসুডি গ্রামের কাছে রাস্তায় পিচ সরে গিয়ে ঘাস বেরিয়ে গিয়েছে। তাঁদের দাবি, রাস্তা তৈরির সময়েই তাঁরা নিম্মমানের কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। সংশ্লিষ্ট দফতরকে তাঁরা সেই সময়েই জানিয়েছইলেন। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। পর্ষদের চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার সত্যেন্দ্রনাথ সাউ দাবি করেছেন, “বাসিন্দারা ওই অভিযোগ সরাসরি আমার অফিসে জানাতে পারেন। তা হলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
ঘাস ফুটেছে। ছবিটি তুলেছেন প্রদীপ মাহাতো।
রাসুডি গ্রামের বাসিন্দা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, লাল্টু মিত্র, কাশীনাথ মিত্র জানান, তাঁদের গ্রাম থেকে গোপালপুর এবং বাগদা যাওয়ার জন্য পাকা রাস্তা ছিল না। মোরামের রাস্তার অবস্থাও খারাপ হয়ে পড়েছিল। বর্ষাকালে ওই রাস্তা প্রায় দুর্গম হয়ে উঠেছিল। জল-কাদায় ওই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে খুব দুর্ভোগে পড়তে হত বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, “প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বহু তদ্বিরের পরে যদি বা রাস্তা পাকা হল, তো এক সপ্তাহ পরেই পিচ উঠে গেল। রাস্তার মাঝখানে ঘাস জন্মেছে।”
বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ওই রাস্তায় ভারী গাড়ি যাতায়াত করে না। গাড়ির চাপে রাস্তার ক্ষতির সম্ভাবনাও তাই নেই। তার পরেও কী করে রাস্তা ভাঙল, তা নিয়ে এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণের কাজই ঠিকমতো হয়নি। পা দিয়ে ঘষাঘষি করলেই রাস্তা থেকে পিচ ও পাথর উঠে যাচ্ছে।
বাসিন্দাদের দাবি, কয়েকমাস আগে রাস্তায় নিম্নমানের উপকরণ দেওয়া হচ্ছে বলে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অফিসে তাঁরা অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। পুঞ্চার বিডিও সুপ্রতীক সিংহ বলেন, “রাস্তাটি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের টাকায় তৈরি করা হয়েছে। ফলে আমরা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারি না। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” যদিও ওই কাজের ঠিকাদার রঞ্জিৎ সাহানার দাবি, “আমি নিয়ম মেনেই কাজ করেছি। ঘাস হওয়ার কথা নয়। যাঁরা এমন অভিযোগ তুলেছেন, তারা ঠিক বলছেন না।”
খবর পৌঁচেছে মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডুর কানেও। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলের পরিকাঠামোর উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছেন। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে রাস্তা তৈরির জন্য টাকাও খরচ করা হয়েছে। তাহলে কেন নিম্মমানের কাজের অভিযোগ উঠবে? পর্ষদের মন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে আমি কথা বলব।” পশ্চিমাঞ্চল মন্ত্রীর আশ্বাস, “এমনটা হওয়ার কথা নয়। আমি বিশদে খোঁজ নিয়ে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.