উপ-নির্বাচনের প্রচারে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীকে ‘কড়ুই গাছে জাপ্টে বেঁধে পেটানো’র হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের নির্বাচনে হেরে মন্ত্রিত্ব খুইয়েও দাপট যে তাঁর বিশেষ কমেনি মঙ্গলবার তারই নজির রাখলেন তিনি। তিনি হুমায়ুন কবীর, রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী।
এ দিন শক্তিপুরে দলীয় সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীকে পাশে নিয়ে হুমায়ুনের তোপ, “লোকসভা নির্বাচনের পরে অধীরকে মুরগির খাপে পুরে ফেলব। তাঁকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে পালাতে হবে বাংলাদেশ।”
এখানেই অবশ্য থামেননি তিনি। খোলা মঞ্চ থেকেই একদা তাঁর ‘ঘনিষ্ট দাদা’কে মেঠো ভাষায় বেশ কিছু গালমন্দ করতেও কসুর করেননি তিনি। উত্তেজিত হুমায়ুনকে বলতে শোনা যায়, “মনে রাখবেন, একা হুমায়ুন কবীরের দাপটে অধীরের এখন দিশাহারা দশা।” |
মঞ্চে তাঁর মিনিট কুড়ির বক্তব্যে শুভেন্দুরও লক্ষ ছিলেন অধীর। নাম না করেই তাঁর কটাক্ষ, “লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলায় কংগ্রেস জিততে পারবে কিনা জানি না, তবে রেজিনগর-শক্তিপুর এলাকায় হাফপ্যান্ট মন্ত্রীর (প্রতি মন্ত্রী) কোনও সুযোগ নেই।” সমালোচনা করতে ছাড়েননি সদ্য দলত্যাগী সাংসদ সোমেন মিত্রেরও। বর্ষিয়ান সাংসদকে ‘অপবিত্র জিনিসের’ সঙ্গে তুলনা করে শুভেন্দুর মন্তব্য, “তৃণমূল গঙ্গার মতো অনেকেই এখানে পূণ্য করতে আসেন। গঙ্গা বয়ে চলে। অপবিত্র জিনিস সরে যায়।”
হুমায়ুন-শুভেন্দুর জোড়া আক্রমণের পরে মঞ্চ থেকে এ দিন হুমায়ুনের প্রশংসা করতে শোনা যায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী সুব্রত সাহাকেও। দলীয় সূত্রে জেলা রাজনীতিতে তাঁরা পরস্পরের ‘ঘোর প্রতিপক্ষ’ বলেই খবর। এ দিন অবশ্য তার উল্টো পথে হেঁটে সুব্রত দাবি করেন, “হুমায়ুন কোনও সাহায্য পায়নি এত দিন। জেলায় সে একাই লড়ছে। শুভেন্দু অধিকারীকে বলছি, ওঁকে দিল্লির টিকিট দিন। আমারা ওঁকে জিতিয়ে আনব।” |
সুব্রতর সমর্থনে হুমায়ুনকেও এর পরে দলীয় ঐক্যের কথা বলতে শোনা যায়, “জেলায় কারও সঙ্গে কোনও ভেদাভেদ রাখা চলবে না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে।
হুমায়ুনের ‘গালমন্দ’ নিয়ে অধীর অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “ওঁর কথার পাল্টা জবাব দেওয়া আমার রুচিতে বাধে।” তবে, জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “হুমায়ুনের ওই মন্তব্যের জবাব মিলবে আগামী শুক্রবার ওই ময়দানেই কংগ্রেসের জমায়েত থেকে।”
এ দিনের সভায় তাঁর পুরনো দল কংগ্রেস ও অধীরের পাশাপাশি জেলা পুলিশ-প্রশাসনের একাংশকেও হুমকি দিতে ছাড়েননি হুমায়ুন। তাঁর হুঙ্কার, “পুলিশের কিছু অংশ এখনও কংগ্রেসের তাঁবেদারি করছে। তাঁদের জঙ্গলমহলে বদলি করার জন্য শুভেন্দু অধিকারীকে বলেছি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও রিপোর্ট পাঠাব।” শক্তিপুরের নদিয়ার বেথুয়াডহরিতে এ দিন সভা করেন শুভেন্দু। সেখানেও কংগ্রেসকে প্রতারক বলে সমালোচনা করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “কংগ্রেসের কোনও স্থিরতা আছে? ভর্তুকির সিলিন্ডার এক বার ৬টা, তারপর ৯টা এখন ১২টা সিলিন্ডারের কথা বলছে। |