|
|
|
|
চাঁইপাটে সমস্ত আসনেই প্রার্থী এসএফআইয়ের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
আগামী ২৮ জানুয়ারি দুই মেদিনীপুরের সব কলেজে নির্বাচন। বেশিরভাগ কলেজেই অবশ্য ভোট হবে না। কারণ, বিরোধী ছাত্র সংগঠন মনোনয়নই দাখিল করতে পারেনি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিশ্চিত করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। হাতে গোনা কিছু কলেজে অবশ্য লড়াই হচ্ছে। তাদেরই অন্যতম দাসপুরের চাঁইপাট কলেজ। ঘাটাল মহকুমায় একমাত্র এখানেই প্রতিদ্বন্দিতা হচ্ছে।
তৃণমূলের বরাবরের শক্ত ঘাঁটি দাসপুর- ২ ব্লকে এই চাঁইপাট কলেজ। কলেজের ১৫টি আসনেই মনোনয়ন দাখিল করেছে এসএফআই। সিপিএমের ছাত্র সংগঠন আগাম সতর্কতা হিসেবে দ্বিগুণ সংখ্যক মনোনয়ন জমা দিয়েছিল। যাতে মনোনয়ন পত্র পরীক্ষার সময় একটি-দু’টি বাদ পড়লেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। এ দিকে, এসএফআই সব আসনে প্রার্থী দেওয়ায় টিএমসিপি-র থেকেও উদ্বিগ্ন তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। দলীয় সূত্রের খবর, শক্ত ঘাঁটিতে ছাত্রভোটের এমন সমীকরণে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের লোকজন হুমকি দিয়ে, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ভোট বানচাল করতে চাইছে বলে এসফআইয়ের অভিযোগ। এসএফআইয়ের দাসপুর জোনাল সম্পাদক বিমল দাস বলেন, “বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ভোটের দিন কলেজে না আসার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রার্থীদের মেরে ফেলার ফতোয়াও দিয়েছে। কিন্তু আমরা ঠান্ডা মাথায় ভোটের জন্য প্রস্তুত।” যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের খেয়ে কাজ নেই যে মরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কলেজে আসতে নিষেধ করব! সব মিথ্যে আভিযোগ।”
দাসপুর-২ ব্লকে তৃণমূলের সংগঠন বরাবর মজবুত। বাম আমলেও তৃণমূল এই ব্লকে শক্তিশালী ছিল। দলের দুর্দিনেও দাসপুর থেকে তৃণমূল বিধানসভা আসনে জিতেছিল। পঞ্চায়েত সমিতি-সহ ব্লকের সিংহভাগ পঞ্চায়েতও তৃণমূলের দখলে। সেখানে এলাকার একমাত্র কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে এসএফআই সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। মঙ্গলবার কলেজ সংলগ্ন এলাকায় সভাও করেছে তৃণমূল। নামে ব্রিগেডের প্রস্তুতি সভা হলেও বক্তাদের কথাই চাঁইপাট কলেজ ভোটের প্রসঙ্গই বারবার উঠে আসে। এখন প্রশ্ন, জেলা জুড়ে যেখানে এসএফআই মনোনয়নই দিতে পারছে না, সেখানে তৃণমূলের শক্তঘাঁটিতে সব আসতে তারা কী করে প্রার্থী দিল? তৃণমূলের দলীয় সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রে গোষ্ঠী কোন্দল একটি কারণ। দলেরই একাংশ এসএফআইকে মদত দিচ্ছে।
মনোনয়ন পর্বে এই কলেজে অশান্তি হয়েছে। মনোনয়নপত্র পরীক্ষার দিন দু’পক্ষের মারপিট, কলেজে ভাঙচুর থেকে তালা ঝোলানো, সবই হয়েছে। পুলিশ চার টিএমসিপি সমর্থককে আটক করে থানায় নিয়ে আসায় থানা ঘেরাও পর্যন্ত করেছিল তৃণমূল। সিপিএমের দাসপুর-১ জোনাল কমিটির সম্পাদক ললিত কুমার শী বলেন, “ইতিমধ্যে আমাদের একাধিক স্থানীয় নেতা ও ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে তৃণমূল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। পুলিশকে সব জানানো হয়েছে।”
তৃণমূল নেতৃত্ব পুলিশের উপরেও ক্ষুব্ধ। মনোনয়নপত্র পরীক্ষার দিন পুলিশ চার টিএমসিপি সমর্থককে আটক করে থানায় নিয়ে আসায় ওসির বদলি চেয়ে দলের উপরমহলে অনুরোধ করা হয়েছে বলে খবর। তৃণমূল ব্লক সভাপতি তথা কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি তপন দত্ত বলেন, “পুলিশ সিপিএমের ভিত শক্ত করতে কাজ শুরু করেছে। তাই আমরা দলীয় ভাবে ওসির বদলি চেয়েছি। মঙ্গলবার সভা করেছি। ভোট মিটে গেলে ওসির বদলির দাবিতে আরও সরব হব।” এ ব্যাপারে পুলিশ কোনও মন্তব্য করেনি। আর সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা দাসপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল অধিকারী বলেন, “মানুষ সব নজর রাখছেন। ভোটের ফলেই আমরা জবাব দেব।” |
|
|
|
|
|