বনের গাছ কাটবে কে, বিতর্ক
ংরক্ষিত বনাঞ্চলে গাছ কাটার অধিকার কার তা নিয়ে বনবস্তিবাসীদের সঙ্গে বন দফতরের বিতর্ক দানা বেঁধেছে ডুয়ার্সে। কোচবিহার ডিভিশনের খয়েরবাড়ির জঙ্গলে বন দফতর গাছ কাটার পরিকল্পনা নিয়েছে বন বিভাগ। কিন্তু, বনববস্তি বাসীদের দাবি, কেন্দ্র সরকার যে ‘অরণ্যের অধিকার’ আইন তৈরি করেছে তা অনুযায়ী, গাছ কাটতে হলে বন বস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আলোচনা না করে বন দফতর চার দফায় গাছ কাটার চেষ্টা করেছে। সে জন্য বনবস্তি বাসীরা বাধাও দিয়েছেন। পাঁচ বাসিন্দার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বন দফতর। ফলে, বাসিন্দারা পাল্টা আন্দোলনে নেমেছেন।
বনবস্তির বাসিন্দা তথা বন জন শ্রমজীবী মঞ্চের নেতা বিপিন রাভার অভিযোগ, “অরণ্যের অধিকার আইন অনুসারে গ্রাম সভার সঙ্গে আলোচনা না করে বিনা অনুমতিতে বন দফতর গাছ কাটতে পারে না। আমরা বাধা দেওয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করা হচ্ছে।” অভিযোগ মানতে নারাজ উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল বিপিন সুদ। তিনি বলেন, “ওই গ্রামবাসীরা আইনের অপব্যখ্যা করছেন। অরণ্যের অধিকার আইন সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জন্য নয়। মঞ্চের নেতারা ভাল করে না বুঝে বন বস্তির বাসিন্দাদের খেপিয়ে তুলছেন।” আলিপুরদুয়ারের এএসপি আকাশ মেঘারিয়ার কথায়, “অভিযোগ পেয়েছি। অরণ্যের অধিকার আইনে কী বলা রয়েছে, তা দেখা হচ্ছে।”
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খয়েরবাড়ি জঙ্গলের ৩৪ হেক্টর জমির প্রায় ছয় হাজার গাছ ১৯৫৬ সালে লাগানো হয়। নিয়ম অনুসারে ওই গাছগুলি কাটার সময় পার হয়ে গিয়েছে। গাছগুলি কাটা না হলে সেগুলিতে পচন ধরতে পারে। গাছ বিক্রি করে যে টাকা আসবে, তাতে উন্নয়নের কাজ হবে। পাশাপাশি, নতুন করে ওই এলাকায় গাছ লাগিয়ে দেওয়া হবে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, “গত কয়েক কয়েকে চিলাপাতায় পুলিশ দিয়ে বন দফতর গাছ কেটেছে। কিন্তু তার পরে সেখানে গাছ লাগানো হয়নি। এতে বন্য জন্তুরা নিয়মিত লোকালয়ে ঢুকছে। খয়েরবাড়ি জঙ্গলে ২৬টি হাতির দল রয়েছে। বড় অংশ জুড়ে গাছ কেটে ফেলা হলে গ্রামে হাতির উপদ্রব বাড়বে।” অখিল ভারতীয় জঙ্গল আন্দোলন মঞ্চের কার্যকরী মটির সদস্য সৌমিত্র ঘোষ বলেন, “বন দফতর কিছুতে আইনের মর্যাদা দিতে চাইছেন না।”
রাভা জনজাতি অধ্যুষিত বনবস্তির বাসিন্দারা জানান, ৯৩টি পরিবার বংশ পরম্পরায় ওই জঙ্গলের ধারে বসবাস করছে। ব্রিটিশরা এক সময় রাভাদের দিয়ে বনের গাছ কাটা-সহ নতুন গাছ লাগাতেন। পরে গাছ কাটা কমে যাওয়ায় তাঁরা ধান, কচু চাষ ছাড়া জহ্গলের শুকনো জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেকে দিনমজুরিও করেন। বিপিন রাভার কথায়, “আমরা বলিনি গাছ কাটতে দেব না। আমাদের বক্তব্য, গ্রাম সভার বিনা অনুমতিতে গাছ কাটা যাবে না।”
অরণ্যের অধিকার আইন দেখার দায়িত্বে রয়েছে জেলার অনগ্রসর কল্যাণ দফতর দফতরের প্রকল্প আধিকারিক সুজন দত্ত। তিনি বলেন, “গাছ কাটা নিয়ে বিবাদের বিষয়টি শুনেছি। সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসে সমাধান সূত্র বার করা হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.