ভাল বেতন ও ভাল বিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ছেলের শ্বশুরবাড়ির কিশোরী পরিচারিকাকে নিজের কাছে নিয়ে এসেছিলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এক মহিলা। রবিবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় সেই কিশোরী অভিযোগ করেছেন, সেখানে নিয়ে আসার পর গত দু’মাস ধরে
তাকে বাধ্য করা হয়েছে নানা অশ্লীল কাজকর্ম করতে। প্রতিবাদ করলে জুটেছে মারধর। শনিবার রাতে ফের মারধর শুরু হলে ওই নাবালিকা পালিয়ে বাড়ির পিছনের একটি চালাতে পরিত্যক্ত খাটের নীচে লুকিয়ে ছিল। সকালে পাঁচিল টপকে বাইরে এসে স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে থানায় যায়। মালদহের পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্ত মহিলাকে ধরতে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। কিশোরীকে হোমে রাখা হয়েছে।” ওই মহিলা অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।
ওই নাবালিকার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা থানার চাতরা কালিকাপুরে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলা প্রথম স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে মেদিনীপুরের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেছেন। তবে হরিশ্চন্দ্রপুরের বাড়িতে একাই থাকতেন। তিনি স্থানীয় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী। তাঁর প্রথম পক্ষের ছেলের কলকাতার যাদবপুরে মোবাইল ফোনের একটি দোকান রয়েছে। সেই ছেলের শ্বশুরবাড়িও ওই এলাকাতেই। সেখানেই পরিচারিকার কাজ করত ওই কিশোরী।
পুলিশ জানায়, ওই কিশোরীর বাবা পেশায় দর্জি। পাঁচ বোনের মধ্যে ওই কিশোরী তৃতীয়। বেশি মাইনে ও বিয়ের প্রলোভনে পড়ে দুঃস্থ পরিবারের ওই কিশোরী হরিশ্চন্দ্রপুরে আসতে রাজি হয়ে যায়। ওই কিশোরী জানায়, ২২ সেপ্টেম্বর তাকে হরিশ্চন্দ্রপুরে নিয়ে আসা হয়। তার অভিযোগ, “ওই মহিলা আমার ভাল বিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ভাল বেতনও দেবেন বলেছিলেন। কিন্তু হরিশ্চন্দ্রপুরে নিয়ে আসার পরে আমাকে দিয়ে জোর করে অশ্লীল ছবি তোলানো হত। অচেনা পুরুষের সঙ্গেও অশ্লীল ছবি তোলানো হত। রাজি না হলে লাঠিপেটা করা হত। ঘরে তালাবন্দি করে রাখা হত। খুন করার ভয় দেখানো হয়েছিল। শনিবার ফের মারধর করা হয়। কোনও মতে নজর এড়িয়ে বাড়ির পিছনে একটি চালাতে পরিত্যক্ত একটি খাটের নীচে লুকিয়ে ছিলাম। সকালে পাঁচিল টপকে বেরিয়ে লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে থানায় যাই।”
যদিও অভিযুক্ত মহিলা এ দিন টেলিফোনে বলেন, “ওই কিশোরীকে মেয়ের মতোই দেখতাম। আমার বিরুদ্ধে কেন এ রকম ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে জানি না। ব্যক্তিগত কাজে আমি বাইরে আছি।” |