কথায় আছে ‘গোরায় গোরায় যুদ্ধ হয় আর উলুখাগরার প্রাণ যায়’, আমাদের উত্তরবঙ্গবাসীদের অবস্থা অনেকটা সে রকম। কংগ্রেসের আমলে প্রস্তাবিত এইমসের ধাঁচে রায়গঞ্জে হাসপাতাল তৈরি নিয়ে বর্তমানে শাসকদলের সঙ্গে কংগ্রেসের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব যে ভাবে বিস্তার লাভ করা শুরু করেছে তাতে আগামী দিনে যে উত্তরবঙ্গবাসীদেরই তার ফল ভোগ করতে হবে, তাতে সন্দেহ নেই। অথচ গত বিধানসভা নির্বাচনে মা-মাটি-মানুষের সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিই ছিল যে তাঁরা ক্ষমতায় এলে কৃষকদের থেকে জোর করে নয়, তাঁরা রাজ্যকে স্বেচ্ছায় জমি দান করলে সরকারের তরফ থেকে সেখানে শিল্পই বলুন কিংবা এইমসের ধাঁচে সরকারি হাসপাতাল তৈরি করাই বলুনতাতে জমি নিয়ে জটিলতার প্রশ্নই আসবে না। কিন্তু রায়গঞ্জের সর্বস্তরের মানুষের মতে সেখানে যখন এইমস গড়ার স্বার্থে কৃষকরাই স্বেচ্ছায় জমি দিতে এগিয়ে আসতে চাইছেন, তখন সেখানে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আজ এত প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে কেন? এতে সমগ্র উত্তরবঙ্গবাসীরা তাঁদের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কবলে পড়ে উন্নততর চিকিত্সা থেকেই বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন। বাম শাসনে উন্নয়নে বঞ্চিত এই উত্তরবঙ্গের কথা ভেবেই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে রাজনৈতিক রংই দেখা হবে না। শুধু তাই নয়, তিনি যে ভাবে বার বার এসে এখানকার মানুষদের উত্তরবঙ্গকে ‘সুইজারল্যান্ড’ করে গড়ার স্বপ্নও দেখিয়েছেন, তাতে প্রস্তাবিত হাসপাতালটি রায়গঞ্জ থেকে সরিয়ে কল্যাণীতে সরিয়ে নিয়ে গেলে তিনি কি প্রতিশ্রুতিভঙ্গের দায়ে পড়বেন না? মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের বিনীত নিবেদন যে, উত্তরবঙ্গবাসীদের সুচিকিত্সার স্বার্থে সমস্ত রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ভুলে রায়গঞ্জবাসীর দাবির মান্যতা দিয়ে রায়গঞ্জেই প্রস্তাবিত এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিন। যাতে উত্তরবঙ্গবাসীদের সুষ্ঠু চিকিত্সার কারণেই অন্য রাজ্যে পাড়ি দিতে না হয়। যেটি আমাদের কাছেও এক লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে রাজ্য সরকারেরই ভুল সিদ্ধান্তের কারণে।
অরবিন্দ সেন। জলপাইগুড়ি
|
এমনিতে ভারতীয় রেলের খ্যাতি আছে সফরকালে কামরার জানালা দিয়ে ফ্রি-তে ‘মল’য় বাতাস পাওয়া যায় বলে। কিন্তু আজকাল ট্রেনে চাপলে আপনি পাবেন গাঁজার ধোঁয়ার গন্ধ, একদমই নিখরচায়। ভাবছেন কেমন করে? তা হলে আপনাকে শিলিগুড়ি জংশন-হলদিবাড়ি আপ ৫৫৭৪৭ প্যাসেঞ্জার ট্রেনে এক বার চড়তে হবে। বিকেল ৫-৫০ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে এই ট্রেনের ল্যাগেজ ভ্যান লাগোয়া কম্পার্টমেন্টে যদি আপনি ওঠেন, তবে ‘মল’য় বায়ুর সঙ্গে গঞ্জিকার সৌরভ বিনামূল্যে। না, এর জন্য রেল কোনও বাড়তি ভাড়া নেবে না। প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ সংরক্ষিত কামরার জানলা দিয়ে চোখ রাখলে দেখতে পাবেন নেশাখোররা কী নিশ্চিন্তে নেশা করবার জন্য বেছে নিয়েছে এই ট্রেনকে!
নিত্যযাত্রী যাঁরা এই ট্রেনে সফর করেন, তাদের অভিজ্ঞতা ভয়ানক। কামরায় বসাই দায়। ধোঁয়ায় চোখ, মুখ জ্বালা করতে থাকে। প্রতিবাদ করলে কপালে জোটে দুষ্কৃতীর হুমকি। তাই তাঁরা চুপ করে থাকতে বাধ্য হন। যাত্রীরা তাই বাধ্য হয়েই ধোঁয়াময় কামরায় বসে গলা শুকিয়ে যাতায়াতে বাধ্য হন। রেল পুলিশ কি দেখছেন না।? আমরা ‘মল’য় বাতাসের ঘ্রাণ নিতে রাজি, কিন্তু প্লিজ, গাঁজার গন্ধ থেকে রেহাই দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
সন্দীপন রাহা। জলপাইগুড়ি
|
পশুপাখিদের দুঃখকষ্ট মোচনে ১৯৬০ সালে ‘পশুক্লেশ নিবারণ আইন’ নামে একটি কেন্দ্রীয় আইন বলবত্ হয়েছে। ওই আইনের ১১ ধারা লঙ্ঘন করে কেউ যদি গবাদি পশুদের দিয়ে টানা গাড়িতে অতিরিক্ত মাল বহন করে ওই সব প্রাণীকে যন্ত্রণা দেয়, ট্রাকে-মাল গাড়িতে গাদাগাদি ভাবে পরিবহণ করে যাতনা দেয়, সাইকেলের সঙ্গে উল্টো ভাবে মুরগি বেঁধে যন্ত্রণা দিয়ে ওই সব প্রাণী পরিবহণ করে, বা অন্য কোনও ভাবে প্রাণীদের উপর নিষ্ঠুর আচরণ করেতবে অপরাধী ব্যক্তি ১০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা তিন মাস পর্যন্ত জেল বা উভয় শাস্তিতেই দণ্ডিত হতে পারে। ১৯৬০ সালে যে অপরাধের জেরে ১০০ টাকা জরিমানা ছিল, বর্তমানে সেই অঙ্কটি ২০০০ টাকা বা আরও বেশি করা প্রয়োজন। অর্থমূল্য হ্রাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরিমানার পরিমাণ বাড়ালে এক দিকে অবলা প্রাণীদের উপর কিছু অমানবিক অত্যাচার কমবে, অন্য দিকে তেমনই বর্ধিত জরিমানা আদায় করে সরকারি রাজস্ব কিছুটা হলেও বাড়বে।
ভীমনারায়ণ মিত্র। রায়গঞ্জ |