একটি নয়, দু’টি বৌদ্ধবিহারের সন্ধান মিলল মোগলমারিতে
কটি নয়, দু’টো। বৌদ্ধবিহার। মুখোমুখি। দু’টিই ষষ্ঠ শতকের। একটির নাম পড়া গিয়েছে। বন্দক। অন্যটির নাম পড়ার চেষ্টা চলছে। হিউয়েন সাং বা জুয়ান জ্যাং কথিত বৌদ্ধবিহারগুলির মধ্যে এই দু’টি নবতম আবিষ্কার।
পশ্চিম মেদিনীপুরের মোগলমারি প্রত্নস্থলে সম্প্রতি উৎখনন করে এই দু’টি বিহারের সন্ধান পেয়েছেন পুরাতত্ত্ববিদেরা। রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতরের উপ অধিকর্তা অমল রায় বলেন, “পুব ও পশ্চিম দিকে মুখোমুখি দু’টি বৌদ্ধ বিহার ছিল। দু’টিই সমসাময়িক।”
সম্প্রতি এই প্রত্নস্থল থেকে মোট চারটি পোড়ামাটির নামফলক পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে দু’টি প্রায় অক্ষত। অমলবাবু বলেন, “মোটামুটি অক্ষত ফলক দু’টির প্রাথমিক ভাবে পাঠোদ্ধার করা গিয়েছে। এই দু’টিতেই ষষ্ঠ শতকের ব্রাহ্মী হরফে সংস্কৃত ভাষায় লেখা রয়েছে, ‘শ্রী বন্দক মহাবিহারে আর্য ভিক্ষুসঙ্ঘঃ’। অর্থাৎ, একটি বিহারের নাম ছিল বন্দক।” অন্য বিহারটির নাম পড়ারও চেষ্টা চলছে।

মোগলমারিতে উদ্ধার হওয়া দু’টি বৌদ্ধবিহারের একটি।—নিজস্ব চিত্র।
প্রাচীন লিপি ও মুদ্রা বিশেষজ্ঞ সুরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য বলেন, “আর্য শব্দটির এখানে অর্থ সম্মানিত। অর্থাৎ বাক্যটির মানে হচ্ছে, এই মহাবিহারে সম্মানিত বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সঙ্ঘ ছিল।” দু’টি প্রায় অক্ষত নামফলকের উপরে রয়েছে ধর্মচক্রের দু’দিকে হরিণের ছবি। সুরেশবাবু জানান, বুদ্ধ প্রথম ধর্মচক্র প্রবর্তন করেছিলেন সারনাথে। যার প্রাচীন নাম ছিল মৃগদাব অর্থাৎ হরিণের উদ্যান। তাই সারনাথের এই প্রতীকী ছবিটি বৌদ্ধরা অনেক সময়েই সসম্ভ্রমে ব্যবহার করতেন। বৌদ্ধ মহাবিহারেও সেই চিত্র পাওয়া খুবই স্বাভাবিক।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গে আরও দু’টি বড় বৌদ্ধ বিহার আবিষ্কৃত হয়েছে। একটি মুর্শিদাবাদের কর্ণসুবর্ণের রক্তমৃত্তিকা, অন্যটি মালদহের জগজীবনপুরে নন্দদীর্ঘিকা বিহার। এই দু’টি বিহার থেকেই নামফলক পাওয়া গিয়েছিল। রক্তমৃত্তিকা ষষ্ঠ-সপ্তম শতকের মহাবিহার, নন্দদীর্ঘিকা নবম শতকের মাঝামাঝি সময়ের। জুয়ান জ্যাং সপ্তম শতকে জানিয়েছিলেন, তাম্রলিপ্তের আশেপাশেও বেশ কয়েকটি বৌদ্ধ বিহার রয়েছে। মোগলমারির এই বিহারটি সেই বিহারগুলিরই অন্যতম বলে মনে করছেন পুরাতত্ত্ববিদেরা। অমলবাবু বলেন, “মোগলমারির বিহারগুলিতে ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শতকের মধ্যেই তিন দফায় পুনর্গঠন হয়েছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সেক্ষেত্রে এই বিহারগুলি সে কালে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অন্তত দু’শো বছর ধরে সজীবও ছিল।”
সুরেশবাবু জানান, এই বিহার বা তার থেকে আকারে বড় মহাবিহারগুলিতে পুজার্চনা হত, লেখাপড়াও হত। পুথি নকল করা হত। সে কারণেই অনেক বৌদ্ধ ভিক্ষু সেখানে নিয়মিত থাকতেন। আসতেন অতিথিরাও। তাই রীতিমতো সম্পদশালীও ছিল এই বৌদ্ধ উপাসনা ও পাঠস্থানগুলি। মোগলমারির মহাবিহারটি থেকেও সম্প্রতি মিলেছে ধাতুমুদ্রা। সুরেশবাবু বলেন, “ওই ধাতুমুদ্রাটির গায়ের লিপি থেকে বোঝা যাচ্ছে, তা রাজা সমাচার দেবের মুদ্রা। অতিথিদের হাত ধরেই বা দান হিসেবে ওই মুদ্রা মহাবিহারে আসতে পারে।” এই প্রত্নস্থলটির সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছে মোগলমারি তরুণ সেবা সঙ্ঘ ও পাঠাগার নামে স্থানীয় একটি সংগঠনও। রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতরের পক্ষে জানানো হয়েছে, ২০০২ সাল থেকে এই প্রত্নস্থলের খননকার্য শুরু হয়েছিল। মাটি থেকে তুলে আনার পরে রোদ-হাওয়ার সংস্পর্শে এসে কিছু পুরাবস্তুর ক্ষতিও হয়েছিল। তবে তার অনেকটাই ইতিমধ্যেই সংস্কার করা হয়ে গিয়েছে।

মহিলার ঝুলন্ত দেহ নন্দীগ্রামে
গাছের সঙ্গে শাড়ি দিয়ে বাঁধা এক মহিলার দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। শনিবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে নন্দীগ্রামের সামসাবাদ এলাকার কাঞ্চননগর গ্রামে। চাষ জমির আলে একটি ইউক্যালিপটাস গাছের সঙ্গে বছর চল্লিশের অজ্ঞাতপরিচয় ওই মহিলার দেহ বাঁধা ছিল বলে জানা গিয়েছে। দু’হাত সামনের দিকে চাদর দিয়ে বাঁধা। গলায় কালো দাগ। স্থানীয় বাসিন্দারা তা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, পরনের শাড়ি দিয়েই ওই মহিলাকে শ্বাসরোধ করার পর গাছের সঙ্গে বাঁধা হয়েছে। কিন্তু মহিলার পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তাই কী উদ্দেশ্যে এই খুন, তা এখনও পরিষ্কার নয় পুলিশের কাছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.