আদিগঙ্গা দ্রুত পরিষ্কার হোক, চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী
কেন্দ্রের আর্থিক সহযোগিতায় আদিগঙ্গার দূষণমুক্তিতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য সরকার। শনিবার নবান্নে এ বিষয়ে বৈঠক করে একটি বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, আদিগঙ্গাকে দ্রুত পরিষ্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। এই কাজে নগরোন্নয়ন ও সেচ দফতর এবং পুরসভা একযোগে কাজ করুক। নবান্নের খবর, রাজ্যের রিপোর্ট পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ‘ন্যাশনাল গঙ্গা রিভার বেসিন অথরিটি’ (এনজিআরবিএ)-র কাছে। এই সংস্থাই গঙ্গায় দূষণমূক্তির জন্য অর্থ সাহায্য করে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে ছিলেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং অন্য আধিকারিকেরা। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, দু’পাশের জনবসতির বর্জ্য কেন আদিগঙ্গায় পড়ছে? এ ব্যাপারে পুরসভার কী ভূমিকা? পলি তোলার কাজ কতদূর করেছে সেচ দফতর, তা-ও জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সেচ দফতরের তরফে তাঁকে বলা হয়, কালীঘাট থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত দু’ধারের জনবসতির বর্জ্য ৫৮টি নিকাশি নালার মাধ্যমে আদিগঙ্গায় পড়ে। পুরসভার প্রতিনিধিরা জানান, নালাগুলির মুখ বন্ধ করে তা অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজের জন্য সরকার সাড়ে ১২ কোটি টাকা দিয়েছে। খিদিরপুরের দহিঘাট থেকে সোনারপুর পর্যন্ত সাড়ে ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ আদিগঙ্গা এবং তার আশপাশের ৩২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দূষণমুক্তির দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প তৈরি করতে হবে। এর জন্য আনুমানিক প্রায় ৬০০ কোটি টাকা খরচ হবে।
নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রের বক্তব্য, “এই ঐতিহ্যশালী শাখানদী দিয়ে চৈতন্যদেব যাত্রা করেছিলেন, ধনপতির বাণিজ্যযাত্রা হয়েছে। কিন্তু প্রায় আড়াই দশকেরও বেশি সময় আগে থেকেই টালিগঞ্জ সেতুর কাছে মহাবীরতলার পর থেকে আদিগঙ্গায় আর জোয়ার-ভাটা খেলে না। তার ওপর দু’পাশের বসতির নোংরা জল নিরন্তর এসে পড়ছে এই শাখানদীতে। ফলে অবরুদ্ধ হয়ে এই শাখানদী ক্রমশ পচা খালে পরিণত হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, টালিগঞ্জ থেকে গড়িয়া পর্যন্ত মেট্রো রেলের প্রায় শ’তিনেক স্তম্ভ আদিগঙ্গার বুকে বসানোয় এই শাখানদী প্রায় লোপাট হয়ে গিয়েছে। রানিকুঠি, অথবা আশপাশের এলাকায় গেলে দেখা যাবে, স্তম্ভগুলির নীচে পচা জলের উপর বালি, সিমেন্টের বস্তা, নানা ধরনের অব্যবহৃত জিনিসপত্র, লোহার রড এবং নির্মাণ সামগ্রী ডাঁই করে ফেলে রাখা হয়েছে।
গঙ্গার দূষণমুক্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৮৬ সালে গঙ্গা অ্যাকশন প্রকল্প শুরু করে। পরবর্তী কালে এই প্রকল্পের কাজ তেমন এগোয়নি বলে ২০০০ সালে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পর ২০০৯ সালে কেন্দ্র ‘ন্যাশনাল গঙ্গা রিভার বেসিন অথরিটি’ (এনজিআরবিএ) নামে একটি সংস্থা তৈরি করে। এর তত্ত্বাবধানেই গঙ্গা ও তার সংলগ্ন এলাকার উন্নয়নের নতুন প্রকল্প শুরু করা হয়। এখন এই সংস্থার অর্থ সাহায্যেই আদিগঙ্গার দূষণমুক্তির পথে হাঁটতে চায় রাজ্য।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.