জিতু ভিতু নয়

শুনেছি ‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ ফিল্মটা আগে প্রসেনজিত্‌ চট্টোপাধ্যায়ের করার কথা ছিল। তখন ওটার নাম ছিল ‘ভিতু’। কোন রোলটার জন্য প্রসেনজিত্‌কে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল?
আমি সেটা জানি না। ‘বিধাতার লেখা’ সিনেমাটা যখন করি তখন এক সহকর্মীর মাধ্যমে আমার আর নীরজের আলাপ হয়। সেই সময় ও টেলিভিশন থেকে এসে সদ্য সিনেমার কাজ শুরু করেছে। বেশ ভাল বন্ধুত্ব হয়ে যায় আমাদের। ও কলকাতার ছেলে। তবে এই ছবিতে ও প্রযোজকের ভূমিকায়। পরিচালক রাজেশ গঙ্গোপাধ্যায়। আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর নীরজ ভাল দিতে পারবে। ওকে ফেসটাইমে ধরছি।
(নীরজের ফোন ব্যস্ত)
আসলে নীরজ আছে বেঙ্গালুরুতে। ওর বই প্রকাশের একটা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। ‘গালিব ডেঞ্জার’ বলে একটা দারুণ বই লিখেছে। পরে ওকে আবার ফোনে ধরছি। আপনি অন্য প্রশ্ন করুন।

আপনার কি সিংহের চেয়ে বাঘ বেশি পছন্দের? ছোটবেলায় চিড়িয়াখানায় গেলে কোন খাঁচাটার সামনে সময় বেশি কাটাতেন?
(অট্টহাসি) হঠাত্‌? কেন বলুন তো?

‘চাঁদের পাহাড়’ দেখেছেন?
ব্যস্ত ছিলাম। থিয়েটারে গিয়ে দেখা না হলে ডিভিডি বেরোলে দেখব।

এর জন্যই তো মনে হল, আপনার বাঘ বেশি প্রিয়। ‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ করলেন। আর পর্দায় কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের আফ্রিকান সাফারি দেখলেন না?
(হাসি) আরে দেখার ইচ্ছে আছে। অবশ্যই দেখব। ‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ করার পেছনে আসল কারণটা হল নীরজ (পাণ্ডে) আর আমি মিলে চার পাঁচ বছর ধরে একটা বাংলা ফিল্ম ক্র্যাক করার চেষ্টা করছিলাম।

ফিল্মটার শ্যুটিংয়ের সময় প্রায় কোনও কভারেজ হয়নি। এখন যে সাঙ্ঘাতিক প্রমোশন হচ্ছে তাতে ‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ যে খুব লেজ ফুলিয়ে হুঙ্কার দিচ্ছে তা-ও নয়। আমির খানের মতো ‘লেস ইজ মোর’ স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করছেন নাকি আপনারা?
নীরজ আর আমি ঠিক করেছিলাম যে এই ভাবেই এগোব। আমাদের কনভিকশন থেকে জানি যে সিনেমাটার জন্য পঁচিশ দিনের প্রমোশনই যথেষ্ট। তা ছাড়া আমি কিন্তু ‘বচ্চন’ ফিল্মটার ক্ষেত্রেও শ্যুটিংয়ের সময় সাঙ্ঘাতিক কিছু প্রমোশন করিনি। আমির খান প্রমোশনের দিকটা দারুণ বোঝেন। উনি জানতেন যে ‘ধুম থ্রি’ ওঁকে নিজে প্রমোট করতে হবে না। তাও কী দারুণ বক্স অফিস ফিগার!

অতিরিক্ত প্রচারে ক্ষতি হওয়ার ভয়?
আজকালকার দর্শক খুব স্মার্ট। তাঁরা আঁচ করতে পারেন। কিছু ছবির ক্ষেত্রে প্রমোশন দরকার হয়। ‘বস’য়ের জন্য ষাট দিনের প্রমোশন দরকার ছিল। তবু শ্যুটিংয়ের সময় প্রচারের কোনও বাড়াবাড়ি ছিল না। ‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’য়ের কথা দর্শকদের জানাতে একুশ থেকে পঁচিশ দিনের প্রচারই যথেষ্ট। এটা অন্যান্য মেনস্ট্রিম সিনেমার থেকে আলাদা। দুই বন্ধুর গল্প। কিন্তু ‘আউট অ্যান্ড আউট’ নাচ-গানের সিনেমা নয়। তবে বিনোদন রয়েছে।
আগের সিনেমাতে দেবের বিপরীতে সিংহ। এই ছবিতে আপনার বিপরীতে কোনও নায়িকা নেই। টলিউডের তরুণ তারকাদের হল কি?
সত্যি তাই তো? ভাবছেন যে হিরোইনদের আকাল পড়েছে আমাদের জীবনে? কিন্তু না। ‘বচ্চন’য়ে তো নায়িকা রয়েছে। আমার পরের ছবিতে তো শুভশ্রী রয়েছে। তাই চিন্তার কোনও কারণ নেই। বাঘ-সিংহ নয়। হিরোইনেরাই থাকবেন। নায়িকাদের বর্জন করছি না।

এই কম গানের সিনেমা, কম প্রমোশনে ছবি মুক্তি, হিরোইন ছাড়াই ছবি এগুলো তো তারকারা বেশ পরিণত হয়ে গেলে তার পর করার কথা ভাবেন...
প্রত্যেকটা অভিনেতার জীবনের একটা প্রোজেক্ট আছে। আপনারা কেউ বলেন ‘মিড পাথ’ সিনেমা, কেউ বলেন প্যারালাল সিনেমা। আমার কাছে সিনেমা দু’ রকমের। গুড সিনেমা বা ব্যাড সিনেমা। সেই সিনেমা আমার কাছে ভাল যেখানে শিল্প আর বাণিজ্যের একটা মেলবন্ধন রয়েছে। কোনও না কোনও জায়গায় প্রত্যেকটা অভিনেতার একটা সাধারণ মনস্তত্ত্ব থাকে। সেটা হল নিজের সৃজনশীল দিকটা আবিষ্কার করার খিদে। এটা খোঁজার কোনও বয়স থাকে না। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবিতে যত বেশি দিন বেশি সংখ্যক দর্শককে একজন তারকা বিনোদন দিতে পারবে তার কাছে সেটা তত বড় আশীর্বাদ।

‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’য়ের ট্রেলরে আপনি আবির-কে বলছেন, “একটা কথা মনে রাখিস বন্ধু ফিয়ার ইজ জাস্ট আ স্টেট অব মাইন্ড।” তা নিজেকে ভিতু বলবেন, না সাহসী?
ভিতু তো নই। জিতু ভিতু নয়। সাহসীও বলতে পারব না। ওটা দর্শকদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। সময় আর ভাগ্য সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশ্বাস করি, মন দিয়ে কাজ করার কোনও অল্টারনেটিভ নেই। থিঙ্ক কন্সট্রাকটিভ অ্যান্ড দেন ইউ ক্যান অ্যাচিভ দ্যাট।

কোনও ফোবিয়া রয়েছে?
আমি ভীষণ ইমোশনাল। পর্দায় দেখুন, আমি তো অভিনেতা হিসেবে অনুভূতি বেচি। তবে এই ইন্ডাস্ট্রিতে যখন ব্যবসা করতে যাই, সেখানে আমাকে ঠিক করে নিতে হয়, কী ভাবে নিজের অনুভূতিকে কোথায় কতটা ব্যবহার করব?

তা সেটা করতে পারেন বলে কি আপনার মনে হয়?
রোজ শিখছি। ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি পরিপূরক। উইথ প্রফিট কামস ওয়েল্থ। উইথ লস কামস উইজডম।

অভিনেতারা যে অনুভূতিপ্রবণ তা অনেকের জানা। অভিনেতারা দারুণ ইনসিকিওরিটিতেও ভোগেন। আপনার কি সে রকম কোনও সমস্যা আছে?
ইনসিকিওরিটি সবার থাকে। আমারও আছে। আমি ইনসিকিওরিটি ওভারকাম করার চেষ্টা করি। আমার মনে হয়, ম্যাচিওরিটি এলে এই সব ডিল করতে মানুষ শিখে যায়। ইনসিকিওরিটি নিয়ে বসে থাকলে সময় নষ্ট। নিজের মনকে ডাইভার্ট করে দেওয়াটাই ভাল। শেষ কয়েক বছর ধরে আমি সেটাই করছি। আমার মনে হয়, যে যত ধাক্কা খাবে সে তত ভাল এই সব রপ্ত করতে শিখবে। ওই যে একটা কথা আছে না, দ্য বিগেস্ট লার্নিং কামস ফ্রম ফেলিওর।

‘জোর কা ঝটকা’ খেলে আজকে কি সেটা ‘ধীরে সে লাগে’?
মাঝে মাঝে ঝটকাটা ফিলও করি না।

তিন বছর আগে আপনার ছবি যদি ছোট করে ছাপা হত, তাহলে আপনার যতটা অভিমান হত, আজ কি সে রকমই হয়? না কি মনে হয়, সাইজে কি এসে যায়, কাজ দিয়ে উত্তর দেব?
এটা পারফর্ম্যান্স দেখানোর জায়গা। বাট পিপল আর র‌্যাশনাল। আই হ্যাভ নো গ্রাজেস। কোনও ক্ষোভ নেই।

ফিরে দেখলে, দু’টো ঘটনার কথা বলেন যেখানে আপনি ‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’য়ের মতো ঘুরে দাঁড়িয়েছেন?
প্রথমটা ‘সাথী’। পাঁচ বছর স্ট্রাগল করার পরে এ রকম হিট।
ওই পাঁচ বছর মনে হত, একটা সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ‘সাথী’ হিট করার পর বুঝতে পারলাম, সুড়ঙ্গের শেষে আলো রয়েছে। এর পরের ইনসিডেন্ট হল, ‘বস’য়ের সাফল্য। আমার কোম্পানি, গ্রাসরুট এন্টারটেনমেন্ট, হ্যাড টু প্রুভ আ পয়েন্ট। ওটায় সাফল্য না পেলে অনেকে অনেক কিছু বলতে পারত।

আপনি সিনেমা করলে সহ-প্রযোজক হন। সেটা রিলায়্যান্স হোক, বা ভায়াকম এইট্টিন, কি নীরজ পাণ্ডের প্রোডাকশন হাউজ। এটা কি স্ট্র্যাটেজি?
মডেল অব ওয়ার্কিংয়ের মধ্যে হেরফের থাকতে পারে, তবে খানিকটা কাকতালীয় ভাবেই শেষ কয়েকটা সিনেমাতে এ রকমই হয়ে এসেছে। সহ-প্রযোজকের ভূমিকাটা আমি বেশ এনজয় করছি। তবে অভিনয় করার জন্য এটা কোনও ক্রাইটিরিয়া নয়।

অনেকে বলেন কর্পোরেটরা সিনেমা করলে তাঁরা শুধু সংখ্যাটাই বোঝেন। সিনেমার প্যাশনটা বোঝেন না...
সব ইন্ডাস্ট্রিতেই এখন কর্পোরেট ঢুকে যাচ্ছে। হলিউড থেকে বলিউড, দেখুন সব জায়গাতেই এখন কর্পোরেট স্ট্রাকচারে কাজ হচ্ছে। ওটাই তো ফিউচার। যাঁরা বলছেন যে কর্পোরেটরা শুধু সংখ্যা বোঝেন, তাঁদের বলি আমার কাছে হিসাবটা খুব সহজ। সিনেমা তো শিল্প আর বাণিজ্য মিলিয়ে করা। ওঁদের যুক্তি অনুযায়ী কর্পোরেটরা সংখ্যাটা দেখুক। আমরা অন্য দিকটা দেখব।

আপনাদের মতে তারকাদের নিয়ে সিনেমা বানালে কত ইনভেস্ট করলে লাভ করা সম্ভব?
আমাদের মতো তারকা বললে ঠিক বোঝা যায় না। ধরুন, অক্ষয় কুমার। উনি ‘রাউডি রাঠোর’য়ের মতো ফিল্ম করেছেন, আবার ‘স্পেশাল ছাব্বিশ’ও করেছেন। প্রথমটার যা রিকভারি, সেটা ‘স্পেশাল ছাব্বিশ’য়ের সঙ্গে মেলে না। আমির খানের ‘ধুম থ্রি’ আর ‘তলাশ’ তো আর এক বাজেটে বানানো নয়।

টালিগঞ্জে হলের সংখ্যা তো ৩৫০-এর বেশি নয়। গ্রামের দিকে আবার টিকিটের দাম খুবই কম। সেখানে কত টাকা ইনভেস্ট করলে তারকাদের দিয়ে ছবি বানালে প্রযোজক হেসে খেলে লাভের মুখ দেখতে পাবেন?
আগে বাংলার বাইরে ছবি মুক্তি পেলে সেটা খবর হত। আজ তা হয় না। কনটেন্ট আর টার্গেট অডিয়েন্সের ওপর ডিপেন্ড করে, কত ইনভেস্ট করা হবে। এ ছাড়া কোন সময় সিনেমা রিলিজ হচ্ছে সেটাও একটা ব্যাপার। বাংলায় পুজো, জামাইষষ্ঠী, ঈদ, পয়লা বৈশাখ, ক্রিসমাসের রিলিজ ডেটগুলো ইম্পর্ট্যান্ট। তবে টপ-অব-দ্য লাইন স্টারদের নিয়ে ছবি বানালে সাত থেকে আট কোটি টাকা ইনভেস্ট করলে লাভের আশা থাকে। মার্কেট সাইজটা বাড়ছে সেটাই ভরসা। ওভারসিজ মার্কেটটা আস্তে আস্তে তৈরি হবে।

জিত্‌ ও আবির
‘আ ওয়েডনেসডে’ আর ‘স্পেশাল ছাব্বিশ’য়ের পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্তটা কি আপনার নিজেকে রি-ইনভেন্ট করার জন্যই নিলেন? হঠাত্‌ নীরজের ঘরানাতে ছবি করছেন শুনে অনেকেই ভাবছেন যে আপনিও দেব-য়ের মতোই ‘উল্টে দেখুন, পাল্টে গেছে’ গোছের কিছু করতে চাইছেন...
আমি তো সেই কবে ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ করেছি। তার পর ‘পিতৃভূমি’। এই প্রশ্নটা উঠছে কেন? একজন অভিনেতাকে তো প্রতিবার রিইনভেন্ট করতেই হবে।

তবে আপনি তো পাকাপাকি ভাবেই বাণিজ্যিক ছবিতে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাত্‌ ‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ করলেন। এতে নতুন কী করলেন?
সেটা তো ছবি মুক্তি পেলেই বুঝতে পারবেন। তবে এটুকু বলছি, আই হ্যাভ নট ডান সামথিং লাইক দিস বিফোর। এটা ক্যাপিটাল লেটারে লিখবেন।

তার মানে জিতের রিইনভেনশন?
না, আমি রিইনভেন্ট করতে যাচ্ছি না। এই ছবিটার কথা ‘আ ওয়েডনেসডে’র আগেই নীরজের মাথায় ছিল।

লুকওয়াইজ কিছু পাল্টেছেন? লম্বা দাড়ি, পাকানো গোঁফ বা সাদা চুল?
এ সব কিছুই করিনি।

‘দুই পৃথিবী’তেও আপনার সঙ্গে দেব ছিলেন। ‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’য়েও তাই। পার্থক্য এটাই যে ‘দুই পৃথিবীর’ সময়ে দেব ছিলেন শুধুমাত্র বাণিজ্যিক ছবির তারকা। আবিরের ব্র্যান্ডিং অন্য ধরনের ছবিকে ঘিরে। আবির আর আপনার মেলবন্ধন ইন্ডাস্ট্রিতে কী প্রভাব ফেলবে?
আবিরের লুক ওর চরিত্রকে জাস্টিফাই করে। ও শার্প। বুদ্ধিদীপ্ত। তাই কাজ করতে সুবিধে হয়। জানি এই ফিল্মটা একটা অন্য স্পেসে রয়েছে। চেষ্টা করছি গ্রাম আর শহরের মধ্যে অভিনব একটা যোগসূত্র তৈরি করার। যদি সাফল্য পাই, তা হলে একটা অন্য ধরনের ছবি তৈরি করার রাস্তা খুলে যাবে।

অনেকে বলেন বাণিজ্যিক ছবির তারকাদের প্যারালাল ছবিতে সাফল্য পাওয়া যতটা সহজ, উল্টোটা নাকি ততটাই কঠিন। আপনি কি একমত?
কেন? নাসিরুদ্দিন শাহ্‌ তো ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ করেও কী সাফল্য পেয়েছেন! ‘ওয়ে ওয়ে’ গানটা ভাবুন তো! সব কিছু ডিপেন্ড করে কী ভাবে কাকে প্রেজেন্ট করা হচ্ছে, তার ওপর। আমি চাইব তথাকথিত অন্য ঘরানার অভিনেতাদের সঙ্গে মূলধারার বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করতে। এটা দুর্ভাগ্য যে সিনেমা ফ্লপ করলে দোষ হয় নায়কের। হিট হলে সবাই ক্রেডিটটা ভাগাভাগি করতে চায়!

সাফল্যের সঙ্গে নিঃসঙ্গতা আসে। আপনার ক্ষেত্রে তা কি প্রযোজ্য?
বন্ধু আছে নিশ্চয়ই। তবে তার থেকেও বড় কথা হল আমার কোনও শত্রু নেই। যদি কেউ নিজে আমাকে শত্রু মনে করে, তাতে আমার কিছু এসে যায় না।
(নীরজের ফোন) কথা বলুন। আমি টুক করে একটা মিটিং সেরে আসি।

নীরজ, আপনার প্রযোজনায় জিত্‌কে দেখে অনেকের ধারণা যে জিত্‌ এমন কিছু হয়তো এই সিনেমাতে করবেন, যা অন্যান্য সিনেমায় ওঁকে করতে দেখা যায়নি...
জিত্‌ একদম অন্য ঘরানার ছবি করে থাকে। হি ইজ ইন আ ডিফারেন্ট স্পেস। কিন্তু ‘আউট অব দ্য বক্স’ কিছু করার খিদে ওর মধ্যে রয়েছে। এই সিনেমাটা সেই অর্থে খুব রিয়্যাল। কিন্তু এখানে ‘ওভার দ্য টপ’ ডায়লগ নেই। তবে ওকে দেখে মনে হবে না যে ও এখানে বিলং করে না। এটা একটা ‘অনসম্বল কাস্ট’য়ের সিনেমা। জিত্‌ কী সুন্দর ভাবে মিশে গিয়েছে সবার সঙ্গে!

অনেক তারকাদের তো ‘অনসম্বল কাস্ট’য়ে অভিনয় করার পরও ইনসিকিয়োরিটিতে ভোগেন...
হ্যাঁ। সে রকম ভুরি ভুরি গল্প আমি শুনেছি বলিউডে। আমি ভাগ্যবান যে জিত্‌ এই রকম কিছু করেনি।

‘স্পেশাল ছাব্বিশ’য়ে অক্ষয় কুমার, ‘দ্য রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’য়ে জিত্‌। দু’টো ছবিতেই কি আপনার একই পদ্ধতি এক তারকাকে দিয়ে একটা রিয়্যাল ছবি করার, যার মধ্যে বিনোদনের সব উপাদান রয়েছে?
হ্যাঁ। অক্ষয় যে ঘরানা থেকে এসে ‘স্পেশাল ছাব্বিশ’ করেছে, ঠিক একই ঘরানা থেকে জিত্‌ এসে এই ফিল্মটা করেছে। শুধু জিত্‌ কেন? আবিরের কাজ দেখেও আমার দারুণ লেগেছে।

বাংলা সিনেমা দেখেছেন? বাংলা ছবির পরিচালনায় কবে আসছেন?
হ্যাঁ, ডিভিডি-তে। জিত্‌ আমাকে ‘বস’ দেখিয়েছে। ‘জাতিস্মর’ দেখার ইচ্ছে রয়েছে। কলকাতা ছেড়েছি সেই নব্বইয়ের দশকে। বাংলাতে আবার সড়গড় হই। তার পর তো পরিচালনা!

শেষ প্রশ্ন, শুনেছিলাম এই ফিল্মটা নিয়ে প্রসেনজিতের সঙ্গে আপনার কথা হয়েছিল...
খুব ‘ন্যাসেন্ট’ স্টেজে কথা হয়েছিল। কিছু পাকা হয়নি। আবিরের রোলের জন্য ডিসকাস করেছিলাম। সেটা খবর হওয়ার মতো কিছুই ছিল না তখন।
(জিতের মিটিং শেষ)

জিত্‌: আপনাদের কথা হল?

হ্যাঁ। আচ্ছা, নীরজের প্রযোজনায় কাজ তো হল। দেব ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘বুনো হাঁস’ করলেন। টলিউডে সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অনীক দত্ত, অঞ্জন দত্ত, অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী, সুমন মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, মৈনাক ভৌমিক-দের ছবিতে আপনাকে কবে দেখা যাবে?
যে ভাবে আছি, খুব ভাল আছি। যাঁদের নাম করলেন, তাঁদের মধ্যে দু’একজনের সঙ্গে কথাও হয়েছে। কোনও কারণে প্রজেক্টটা হয়নি। ওঁদের কাজকে সম্মান করি। ভবিষ্যতে ওঁদের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে। ইটস ওয়ান লাইফটাইম অ্যান্ড আই ওয়ান্ট টু লিভ অ্যাজ মেনি লাইভস অ্যাজ পসিবল অন স্ক্রিন।

নিজের প্রোডাকশন হাউসের নাম রেখেছিলেন গ্রাসরুট এন্টারটেনমেন্ট। তৃণমূল-য়ের ছায়া পাওয়া যেত ওই নামে। এই ফিল্মে বারবার সাধারণ মানুষের শক্তির কথা বলেছেন। আপনি কি আম আদমি পার্টি-তে যোগ দেওয়ার সুপ্ত বাসনা রাখেন?
(হাসি) এটা কো-ইনসিডেন্স। অভিনয় নিয়েই ভাল আছি। রাজনীতি বুঝি না।

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.