ভরা পৌষের কনকনে ঠাণ্ডায় মাঝরাতে তিনি বেড়িয়ে ছিলেন শব্দ শিকারে। তারপর থেকেই বেমালুম পাল্টে গিয়েছে নবদ্বীপের শব্দ চরিত্র। ডিসেম্বর-জানুয়ারি পাড়া পিকনিকের মরসুম। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত লাগাম ছাড়া মাইক শিকেয় তুলে দিত পরীক্ষার্থীর পড়াশুনা। বাড়িয়ে দিত রোগীর রক্তচাপ।
৬ জানুয়ারি মাঝরাতের পর থেকে রাতারাতি পালটে গেছে এ সব। সেদিন মাঝরাতে অতিষ্ঠ হয়ে শব্দ শাসনে পথে নেমেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা। সাফ জানিয়ে ছিলেন ‘এ শহরে এ জিনিস চলবে না’। তারপর থেকেই চোখে পড়ার মত পুলিশি তৎপরতা। পাড়ার পিকনিক বন্ধ না হলেও পাড়ার মোড়ে, ক্লাবের সামনে সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত দৈত্যাকার ডিজে বক্সের প্রাণ কাঁপানো ধমক উধাও। বদলে মোলায়েম মৃদু স্বরে বাজছে শিশু বক্স। কোথাও জোরে মাইক বাজলেই ছুটছে পুলিশ। আটক হচ্ছে মাইকের সরঞ্জাম। নবদ্বীপের আই সি তপন কুমার মিশ্রের সাফ কথা, “রাত দশটার পর কোথাও আপত্তিকর ভাবে মাইক বাজলেই তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। মন্ত্রীর কড়া নির্দেশ।”
এতে বেজায় খুশি নবদ্বীপের সর্বস্তরের মানুষ। শহরের প্রবীণ চিকিৎসক এবং আইএমএর নবদ্বীপ শাখার সহ সভাপতি কানাইলাল সাঁই বলেন, “খুবই প্রয়োজন ছিল এমন পদক্ষেপের।” গৃহবধূ সুনীতা রায় বলেন, “ছেলে এবার মাধ্যমিক দেবে। এবার মন দিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবে। পড়ুয়া থেকে শিক্ষক, ক্রেতা থেকে বিক্রেতা মাইক নিয়ন্ত্রনের সময়োচিত এই সিদ্ধান্তে সকলেই মন্ত্রীর পাশে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে বারোটা। প্রাণপণ সাইকেল চালিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র পোড়ামাতলার দিকে ছুটছেন পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর। মাইকের শব্দ আসছে যেন। যে ভাবেই হোক, মন্ত্রীর আগে পৌঁছতেই হবে।
|
প্যাঁচা কয় প্যাঁচানি। ডোমকলে বিশ্বজিৎ রাউতের তোলা ছবি। |
হেলে দুলে: রাজপথে হংস যুগল। ধর্মতলা চত্বরে প্রদীপ আদকের তোলা ছবি। |
|