শহরে ফের অটোচালকের দৌরাত্ম্যের শিকার হলেন এক মহিলা।
অভিযোগ, খুচরো দিতে না পারায় রাস্তার উপরেই দিনেদুপুরে এক মহিলা যাত্রীকে চড় মারে এক অটোচালক। বুধবার সকাল দশটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে তারাতলা মোড়ে। গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত ওই অটোচালক। পুলিশ জানায়, ধৃত ওই ব্যক্তির নাম অখিল জানা। বাড়ি সোনারপুর এলাকার পাঁচপোতায়। ওই চালকের বিরুদ্ধে মারধর ও শ্লীলতাহানির মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে পল্লবী চট্টোপাধ্যায় নামে এক মহিলা তারাতলায় নেমে অটোচালককে পঞ্চাশ টাকার নোট দিয়ে দশ টাকা ভাড়া কাটতে বলেন। চালক খুচরো দিতে অস্বীকার করায় তার সঙ্গে ওই মহিলার বচসা বেধে যায়। মহিলার অভিযোগ, বচসা চলাকালীন হঠাৎ তাঁর গালে এবং নাকে চড়থাপ্পড় মেরে অটো নিয়ে পালিয়ে যায় অখিল। পল্লবীদেবীর নাক দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। |
পথচারীরাই এসে ওই মহিলাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। পরে নিউ আলিপুর থানায় ওই অটোচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন পল্লবীদেবী। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই সোনারপুর এলাকা থেকে ওই অটোচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার অটোটিও আটক করা হয়।
পল্লবীদেবী জানিয়েছেন, এ দিন সকালে অফিস যাওয়ার জন্য বেহালা চৌরাস্তা থেকে রাসবিহারীমুখী একটি অটোয় উঠেছিলেন তিনি। তারাতলায় নেমে পঞ্চাশ টাকার নোট দিলেই অটোচালক তাঁকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করতে থাকে। পল্লবীদেবীর অভিযোগ, “অটোচালকের কাছে টাকাটা ফেরত চাইলে তা ফেরত না দিয়ে এলোপাথাড়ি চড় মেরে পালিয়ে যায় সে। তখনই খেয়াল করি, আমার নাক দিয়ে অঝোরে রক্ত পড়ছে।”
পল্লবীদেবীর আরও অভিযোগ, এই ঘটনার পরেও রাস্তায় দাঁড়ানো কোনও ট্রাফিক পুলিশকর্মী তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। পাশাপাশি, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তারাতলা অঞ্চলে প্রায়ই অটোচালকদের দৌরাত্ম্যে যাত্রীদের হেনস্থা হতে হচ্ছে।
কলকাতা পুলিশের ডি সি (ট্রাফিক) দিলীপ আদক বলেন, “নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ পেলে তাকে ধরা তো হচ্ছেই। এ ছাড়াও, অটোর বেনিয়ম রুখতে মাঝেমধ্যেই কলকাতা পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এ দিনও অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই অটোচালককে গ্রেফতার করে এনেছে পুলিশ।” |
|
আপনার মোবাইলে QR Reader ডাউনলোড করে
এই QR কোডটি স্ক্যান করুন আর দেখে নিন আক্রান্ত মহিলার প্রতিক্রিয়া। |
|
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। তিনি বলেন, “খুবই অন্যায় কাজ করেছে। অটোর দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই ছ’হাজার অটোচালককে নিয়ে আলোচনা করেছি।” যদিও আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন এই ঘটনাকে অটোর দৌরাত্ম্য বলতে নারাজ। তাঁর কথায়, “কোনও বাসচালক বা দোকানদারও এ করম অভদ্র ব্যবহার করতে পারেন। এই ঘটনা অবশ্যই নিন্দনীয়। তবে এর সঙ্গে অটোর দৌরাত্ম্যের কোনও সম্পর্ক নেই।” ঘটনার বিরোধিতা করে ‘কলকাতা অটোরিকশা অপারেটার্স ইউনিয়ন’-এর সাধারণ সম্পাদক বাবুন ঘোষ বলেন, “এই ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের পাশে রয়েছি।” |