দশ কিলোমিটার পিচের চাদর কয়েক বছর আগেই উধাও হয়েছে। গোটা রাস্তা জুড়ে রয়েছে অসংখ্য গর্ত। মালদহের রতুয়ার কুমারগঞ্জ থেকে মহারাজনগর পর্যন্ত ওই রাস্তা এতটাই বেহাল যে যান চলাচল বন্ধ। সড়ক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনও হয়েছে। ২০১১ সালে রাস্তা সংস্কার করার উদ্যোগও নেয় পূর্ত দফতর। পিছিয়ে পড়া এলাকায় তহবিল থেকে সাড়ে ছয় কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়। রাস্তা সংস্কার করা হবে বলে সড়কের দু’পাশে পাথর ফেলা হয়েছিল। তিন বছরে রাস্তার কাজ এগোয়নি। বেহাল সড়কে যাতায়াত করতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে মালদহের রতুয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের।
চাঁচল থেকে মালদহে যাওয়ার বিকল্প হিসেবে ওই সড়কটিকে ব্যবহার করা হয়। পথ যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়লেও তার সংস্কার না হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে চূড়ান্ত ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। রাস্তা তৈরির বরাত পাওয়া সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ ছেড়ে দেওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। বেহাল রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ মালতিপুরের আরএসপি বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি। বিধায়ক বলেন, “বাম আমলেই রাস্তাটি তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু অর্থ বরাদ্দের পরও কেন রাস্তাটি হচ্ছে না তা তো পূর্ত দফতরকেই দেখতে হবে। এক জন ঠিকাদার কাজ না করলে কী আর সেই রাস্তা তৈরি হবে? দফতরের গাফিলতি এই জন্য দায়ী।” |
চাঁচল মহকুমা পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার সৌমিত্র সেন বলেন, “ওই রাস্তা সংস্কারের বরাত দেওয়া হয় কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থাকে। আচমকাই তারা কাজ বন্ধ করে দেয়। বারবার বলার পরেও তারা কাজ করেনি। ফলে ওই সংস্থাকে বাতিল করা হয়েছে। নতুন কোনও সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানো হবে। সেই প্রক্রিয়া চলছে।”
গাজলগামী ৮১ নং জাতীয় সড়কে লস্করপুর-কুমারগঞ্জ-মহারাজনগর-কোতুয়ালি হয়ে ওই সড়কটি মালদহে গিয়েছে। কিন্তু মাঝে কুমারগঞ্জ থেকে মহারাজনগর পর্যন্ত সড়কটি এতটাই বেহাল যে তা যাতায়াতের অযোগ্য। এই রাস্তাটি রতুয়া-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের যোগাযোগের অন্যতম সড়কই শুধু নয়, দূরত্ব কম হওয়ায় চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে ছোট গাড়ির অধিকাংশই ওই বিকল্প সড়ক ধরে মালদহে যাতায়াত করে। এ ছাড়া ওই সড়কের পাশেই ৫টি হাই স্কুল ও কুমারগঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। ফলে বেহাল সড়কে বিপাকে পড়তে হচ্ছে পড়ুয়া সহ রোগীদেরও। নিত্যযাত্রী সহ বাসিন্দাদের অভিযোগ, “বেহাল সড়কে যন্ত্রণা তো ছিলই। তার উপরে গত তিন বছর ধরে রাস্তার দুপাশে পাথর ফেলে রাখা হয়েছে। ওই পাথর রাস্তার উপরে চলে আসায় যাতায়াতের যন্ত্রণা বাড়ে। রতুয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেস সভাপতি তজিবুর রহমান বলেন, “প্রশাসন ও পূর্ত দফতরকে বলেছি রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার জরুরি।” |