উদ্ধারে গিয়ে পুলিশ আক্রান্ত ময়নাগুড়িতে, ধৃত ৪ গ্রামবাসী
গরুচোর সন্দেহে নিরাপত্তাকর্মীদের মার
রুচোর সন্দেহে পাওয়ার গ্রিডের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থার ৫ কর্মীকে মারধর করছিল জনতা। তাদের বাঁচাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ল পুলিশও। মঙ্গলবার ভোর ৬টা নাগাদ ময়নাগুড়ির মাধবডাঙা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জল্পেশ মন্দির লাগোয়া বড়বাড়ি এলাকার এই ঘটনায় ৭ পুলিশকর্মী-সহ ৫ জন বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মী জখম হন। জখম পুলিশকর্মীদের মধ্যে ৪ জনকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ময়নাগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই নিরাপত্তা সংস্থার ৪ কর্মীও।
জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “কিছু গ্রামবাসী গরুচোর সন্দেহে বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের মারধর করে। কর্মীদের উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশকর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন। মারধরে যুক্ত সন্দেহে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সংঘর্ষে আহত পুলিশকর্মীরা। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” পুলিশ জানিয়েছে, হামলার অভিযোগে রবি ভুইমালি, রঞ্জন রায়, উত্তম রায়প্রধান এবং বিধান রায়প্রধান নামে চার জনকে ধরা হয়। ধৃতেরা দাবি করেছেন, গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত গরু চুরি হওয়ায়, গ্রামে আসা অপরিচিত ব্যক্তিদের গরু চোর বলে সন্দেহ করছিলেন অনেকেই। মাধবডাঙা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মীরা রায় বসুনিয়া বলেন, “গত কয়েকদিন ধরেই এলাকায় বেশ কয়েকটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। তাই বাসিন্দাদের মধ্যে এক দিকে যেমন ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, অন্যদিকে ছিল আশঙ্কাও। ওই কারণেই ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ দিন গোলামাল হয়েছে।”
পুলিশ জানায়, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরেই তিস্তা নদী থেকে জলঢাকা নদী পর্যন্ত এলাকায় পাওয়ার গ্রিডের টাওয়ার তৈরি ও বিদ্যুতের তার লাগানোর কাজ চলছে। মূলত পাওয়ার গ্রিডের তার, যন্ত্রাংশ যাতে চুরি না হয় সে জন্য নজরদারি করছিলেন ওই কর্মীরা। এ দিন সকালে কুয়াশার মধ্যে কালো গাড়ি চড়ে ওই নিরাপত্তা কর্মীরা ঘুরছিলেন। এ দিকে ওই গ্রামে কয়েকদিন ধরেই গরু চুরির ঘটনা ঘটছিল বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
(বাঁ দিকে) জনতার হামলায় ভেঙেছে নিরাপত্তা সংস্থার গাড়ি। (ডান দিকে) ভাঙচুর করা
হয়েছে পুলিশের গাড়িও। মঙ্গলবার ময়নাগুড়িতে ছবি দু’টি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক।
গাড়িটি গতি কমাতেই গ্রামবাসীরা সেটি ঘিরে ধরেন। গাড়ির কর্মীরা পরিচয়পত্রও দেখান। তা সত্ত্বেও সন্দেহ দূর হয়নি বাসিন্দাদের। বরং সন্দেহের বশে গাড়ি থেকে বের করে নিরাপত্তা সংস্থার ৫ কর্মীকে মারধর শুরু করে জনতা। গাড়ি ভাঙচুরও করা হয় বলে অভিযোগ। জনতার হামলায় ওই সংস্থার নিরাপত্তা কর্মী মমিনুল হোসেন, প্রদীপকুমার রায়, প্রদীপচন্দ্র রায়, সুকুমার রায় এবং সুখমোহন রায় জখম হন। মমিনুলের অভিযোগ, “প্রথমে একটি মোটরবাইকে দু’জন যুবক এসে গাড়ি দাঁড় করায়। গরু চোর বলে আমাদের দোষারোপ করতে থাকে। পরিচয় পত্র বের করে বোঝানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। ওঁরা গরু চোর বলে চিৎকার শুরু করতেই ৫০-৬০ জনের মতো গ্রামবাসী এসে গাড়ি ঘেরাও করে মারধর শুরু করে। মাটিতে ফেলে পেটানো হয়। কোনও মতে মোবাইল থেকে থানায় ফোন করি।”
কর্মীদের উদ্ধার করতে ময়নাগুড়ি থানা থেকে পুলিশের জিপ গ্রামে যায়। সেখানে পুলিশও আক্রমণের মুখে পড়ে। ভেঙে দেওয়া হয় পুলিশের জিপ। ইট, পাথরও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সুকুমার দাস, মানস সাহা, স্বাধীন দে এবং অপূর্ব মণ্ডল নামে চার রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের কর্মী এই ঘটনায় জখম হয়েছেন। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে আরও তিনজন পুলিশ কর্মী জখম হন। জখম পুলিশ কর্মীরা জানান, ঘন কুয়াশা থাকায় কোন দিক থেকে ঢিল আসছে কিছুই ঠাহর করা যায়নি। এর পরে ময়নাগুড়ি থানা এবং জলপাইগুড়ি পুলিশ লাইন থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গ্রামে পৌঁছলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.