চা বানাতে জানেনই না! কবে কিনে খেয়েছেন, তা-ও মনে পড়ে না! তবে এক মিটিং থেকে আর এক মিটিং, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসা অতিথিদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে প্রাত্যহিক ২০ থেকে ২২ কাপ লাল চায়ে চুমুক দেন। রাজনীতির দায়ে তাঁকেই এ বার চা বেচতে হল! আধ ঘণ্টায় কেটলি থেকে বিকোলেন শ’খানেক ভাঁড়। আটপৌরে ধুতি-লুঙ্গি -নয়। পাটভাঙা পা-জামা, পাঞ্জাবি, জহর কোটে ধোপদুরস্ত এই চা-বিক্রেতার দেখা মিলল মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশন লাগোয়া বাসস্ট্যান্ডে। বিক্রেতার পোশাকি পরিচয় রাহুল সিংহ! বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। চা বেচার ফাঁকে নিজে দু’টাকা দিয়ে এক ভাঁড় চা কিনেও খেলেন!
রাহুলবাবু এ দিন চা বিক্রি করেছেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর ছবি আঁকা ‘নমো টি স্টলে’ দাঁড়িয়ে। শীত-বিকেলে মাত্র দু’টাকায় ধোঁয়া-ওঠা চা বিক্রি হচ্ছে দেখে পথচলতি মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। চা কিনেছেন বিজেপি-র বেশ কিছু কর্মীও। গঙ্গাসাগর ঘুরে বাড়ি ফেরার পথে গরম চা বিক্রি হতে দেখে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন মুম্বইয়ের এক বৃদ্ধ। |
গঙ্গাসাগর ফেরত সাধু বেশে অব্বা রাও বিশাখাপত্তনমের ট্রেন ধরার আগে এক ভাঁড় চা কিনলেন। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে প্রায় তিনশো ভাঁড় চা বিক্রি হয়ে গেল কিয়স্কে। রাহুলবাবুর কথায়, “প্রথম জীবনে চা বিক্রি করেছেন মোদী। যোগ্যতা থাকলে এক জন চা-বিক্রেতাও দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। মোদীজি’র নামে তাই চা বিক্রি করে রাজ্যে ৫ ফেব্রুয়ারির ব্রিগেড সভার প্রচার করছি আমরা।”
ওই ব্রিগেডে যাতে দলমত নির্বিশেষে মোদীর বক্তব্য শুনতে আসেন মানুষ, সেই প্রত্যাশায় রাজ্য জুড়ে আগামী কয়েক দিন এমনই দোকান খুলে রাস্তায় রাস্তায় চা বিক্রি করবেন বিজেপি নেতারা। চা বিক্রির টাকা মোদীর ব্রিগেড সভার প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হবে বলে রাহুলবাবু জানান। মোদীর সভায় আসার জন্য ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার চা-বিক্রেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তাঁরা।
শুধু চা বিক্রেতাদেরই নয়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, লক্ষ্মীরতন শুক্ল, ভাইচুং ভুটিয়া, অশোক ডিন্ডা, রোহন গাওস্কর, সুভাষ ভৌমিক, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, সুব্রত দত্তের মতো রাজ্যের ক্রীড়া-ব্যক্তিত্বদেরও মোদীর সভায় আসার আমন্ত্রণ জানাবে বিজেপি। আমন্ত্রণ পাবেন অন্যান্য খেলোয়াড়, ক্রীড়া প্রশিক্ষক, ক্রীড়া প্রশাসকরাও। ব্রিগেডের প্রচারের জন্যই ২৬ জানুয়ারি সকাল ৯টায় গিরিশ পার্ক থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ‘রান ফর মোদী’র আয়োজন করছে বিজেপির ক্রীড়া বিভাগ। রাজ্যের যে কেউ সেই দৌড়ে সামিল হোন, আবেদন জানিয়েছেন রাহুলবাবু। |