ত্বকের যত্ন। চুলের যত্ন। পায়ের যত্ন। কত কীই যে করে হবু বর-বউয়েরা!
পাতলা কোমর পেঁচিয়ে ওঠা বেনারসী শাড়ি, রেশম-পঞ্জাবির আড়াল থেকে উঁকি মারা বরের সুঠাম বক্ষপেশির আহ্বান যদিও একটা কথাই বলে। সব উৎসব পেরিয়ে আসলে এ তো শরীরেরই উৎসব।
বহু যুবক যুবতীই তাই জিমে এসে হামেশাই বলেন, “আমার বিয়ের আর এক মাস বাকি। জিম করে পেটটা কমানো যাবে কি?”
এক মাসে ২-৩ কেজি কমানোর লক্ষ্য ঠিক করা মানে টার্গেটটা
ছোট রেখে চেষ্টা করলে ওজন কিন্তু সত্যিই কমবে।
আপনি কি নতুন এক্সারসাইজ শুরু করছেন?
যদি নতুন হন, তা হলে শরীরকে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হবে। গোড়াতেই খুব বেশি আর খুব কঠিন এক্সারসাইজে যাবেন না। গায়ে ব্যথা ছাড়াও ছোটখাটো চোট-আঘাতও আসতে পারে। তাই অল্প অল্প করে এক্সারসাইজের সময় আর তীব্রতা বাড়ান।
কী ধরনের ওয়ার্কআউট করবেন
পুরুষ হোন বা মহিলা, শুরু করতে পারেন বডি ওয়েট এক্সারসাইজ দিয়ে। স্কোয়াট, লাঞ্জেস, পুশ আপ, হরাইজন্টাল পুল আপ এই সব এক্সারসাইজ কৌশলগুলো শিখে নিন। ৩টে করে সেট করবেন। আর প্রত্যেকটা সেট বারো বার রিপিট করবেন।
দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ডাম্বেল নিয়ে করুন স্কোয়াট, এক পায়ে ডেডলিফ্ট, চেস্ট প্রেস, প্রোন রো-র মতো ওয়ার্কআউট। একদিন শরীরের ওপরের অংশের, আর এক দিন শরীরের নীচের অংশের ওয়ার্কআউট করুন। এই ভাবে করুন চারটে সেট। আর ১০ বার অবশ্যই রিপিট করবেন। ওজন নিয়ে ওয়ার্কআউট করাটাও কিন্তু মাস্ট। ওজন নিয়ে ব্যায়াম করলে শরীর টান টান হবে। জয়েন্টের জোর বেড়ে পস্চারও ভাল হবে। |
পেটের জন্য কী করবেন
পেটের অংশ সুন্দর করতে করুন প্ল্যাঙ্ক হোল্ড, সাইড প্ল্যাঙ্ক হোল্ড, এক পায়ে ব্রিজ হোল্ড-য়ের মতো ওয়ার্কআউটগুলো। এক-একটা করুন ৩০ সেকেন্ড। ৩ বার করে রিপিট করুন। তার পর করুন ডায়নামিক কোর এক্সারসাইজ। ডায়নামিক সাইড প্ল্যাঙ্ক, রাশিয়ান ট্যুইস্ট ওয়ার্কআউটগুলোও কাজে দেবে। এ ভাবে ৩টে সেট বারো বার রিপিট করবেন।
কোর স্টেবিলিটি এক্সারসাইজ করলে পেটের আলগা ভাবটা ধীরে ধীরে কেটে যাবে। তবে সিট-আপ বা ক্রাঞ্চের মতো বাজার চলতি পেটের এক্সারসাইজ করবেন না। কোমরে ব্যথা হবে। মেদও কমবে না।
কী ধরনের দৌড়ঝাঁপ করবেন
ট্রেডমিলেই যদি ছুটতে হয়, তা হলে দু’মিনিট জোরে ছুটুন। তার পর ২ মিনিট হাঁটুন। আবার দু’মিনিট জোরে দৌড়ন। পর্যায়ক্রমে মোট ১০-১৫ মিনিট দৌড়ন আর হাঁটুন। সপ্তাহে তিন দিন করুন এ রকম ইন্টারভ্যাল কার্ডিও। তবে ওজন নিয়ে ব্যায়ামের পরেই কিন্তু ট্রেডমিলে দৌড়বেন। ওজন নিয়ে ব্যায়ামের পর ৫ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে কিছু ফ্লোর কার্ডিও করতে পারেন। ১০ মিটার দূরত্বে করতে পারেন পাশাপাশি বা সাইডওয়েজ রান। ১০ মিটার দূরত্ব বানান মার্কার দিয়ে। হাই নি, মানে হাঁটু ৯০ ডিগ্রি তুলে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যান। দৌড়ে আবার শুরুর প্রান্তে ফিরে আসুন। এ ভাবে হাই নি আর দৌড় চলুক ১-২ মিনিট। টানা দৌড় বা হাঁটার থেকে এই ধরনের কার্ডিও ভাল, কারণ এতে বিপাকের হার বাড়ে। বেশি ক্যালোরি বার্ন হয়। সপ্তাহে ৩-৪ দিন তাই এ রকম ফ্লোর কার্ডিও করুন। এক মাসের এই ট্রেনিংয়েফ্যাট তো ঝরবেই, সঙ্গে আপনার শরীরের ঔজ্জ্বল্যও বাড়বে। বিয়ের দিন আপনার চেহারার পরিবর্তন সবার নজর কাড়বেই।
|
হাল ছাড়বেন না |
• ব্রেকফাস্টে লিকার চা। সঙ্গে বিস্কুট। ছোলা ভেজানো কিংবা পাকা পেঁপেও খেতে পারেন।
• ব্রেকফাস্ট আর লাঞ্চের মাঝামাঝি সময়টায় খেতে পারেন ২টো ভেজিটেবিল স্যান্ডউইচ, ২টো সেদ্ধ ডিমের সাদা অংশ বা সেদ্ধ করা ভুট্টা।
• মধ্যাহ্নভোজে রাখুন এক বাটি ভাত বা তিনটে রুটি, মশলা ছাড়া চিকেন কারি বা রাজমা কারি। সঙ্গে ডাল আর স্যালাড তো অবশ্যই চলতে পারে।
• ৩টের সময় স্ন্যাক্সে খেতে পারেন মুড়ি, ভেজানো ছোলা, ৩-৪টে ক্রিমক্র্যাকার বিস্কুট।
• সন্ধে ৬টায় খান চা আর বিস্কুট।
• ডিনারে খেতে পারেন ২টো রুটি, সেদ্ধ সব্জি, ডাল, রায়তা। টক দইও খাওয়া যায় এই সময়।
• ভাজাভুজি, মিষ্টি, চকোলেট বাদ। ফল, সব্জি, চিকেন, ডিমের সাদা অংশ খান বেশি করে। দিনে ৬-৭ বার অল্প অল্প খান। |
|