বাসস্ট্যান্ড বলে ঘোষণা করেছে প্রশাসন। বসানো হয়েছে বাসস্টপ লেখা সাইনবোর্ডও। কিন্তু, সেই স্টপে বাসই থামে না! ফলে, হেঁটে বা রিকশা ভাড়া করে ব্লক অফিসে যেতে হয় বড়জোড়ার বাসিন্দাদের। এই ঘটনায় এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ।
বড়জোড়া সদর থেকে ব্লক অফিসের দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলা শারীরিক প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি দীর্ঘদিন ধরে ব্লক অফিসের সামনে বাস থামানোর দাবি জানিয়ে এসেছে। কয়েক মাস আগে সেই দাবি মেনে বড়জোড়া ব্লক অফিসের সামনের এলাকাকে বাসস্ট্যান্ড বলে ঘোষণা করে জেলা পরিবহণ দফতর। অথচ তার পরেও বাস না থামায় সমস্যার সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি জেলাশাসকের দফতরে এ ব্যাপারে স্মারকলিপিও দেয়। সংগঠনের জেলা সভাপতি অজিত বিদ বলেন, “নানা কাজে প্রতিবন্ধীদের প্রায়ই ব্লক অফিসে আসতে হয়। বড়জোড়া শহর থেকে ব্লক অফিসটি অনেকটা দূরে হওয়ায় প্রতিবন্ধীদের যেতে অসুবিধায় পড়তে হয়।” তিনি জানান, বাস না থামায় প্রায় ৩০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে অথবা কষ্ট করে হেঁটে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ব্লক অফিসে পৌঁছতে হয়। আবার অফিস থেকে ফেরার সময়ও একই ভোগান্তি।
অজিতবাবু বলেন, “দীর্ঘ আন্দোলনের পরে প্রশাসন ব্লক অফিসের সামনের এলাকাকে বাসস্ট্যান্ড বলে ঘোষণা করল ঠিকই। কিন্তু, বাস না থামায় আসল সমস্যাই মিটল না।” তবে শুধু প্রতিবন্ধীরাই কেন, বড়জোড়ার সাধারণ মানুষও ব্লক অফিসের সামনে বাস না থামায় সমস্যায় পড়ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল, শুভজিৎ ঘোষদের ক্ষোভ, “প্রায়ই জরুরি কাজে ব্লক অফিসে যেতে হয়। হেঁটে সময় অনেক বেশি লাগে। আবার রিকশা ভাড়াও চড়া। বাসও থামতে চায় না। বয়স্ক মানুষেরা খুবই সমস্যায় পড়ছেন।” তাঁদের আরও অভিযোগ, বড়জোড়া ব্লক অফিসের সামনে বাস দাঁড়ায় না। পাশাপাশি এসবিএসটিসি-র বাসগুলি বড়জোড়া শহরের বাসস্ট্যান্ডের যাত্রীদের বাসে তোলে না। যার ফলে এসবিএসটিসি বাস ধরতে তাঁদের দুর্গাপুর সিটি সেন্টার ছুটতে হয়।
ব্লক অফিসের সামনে বাস না থামার সমস্যার কথা জানেন বড়জোড়া বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ খান। তাঁর কথায়, “বাসস্ট্যান্ড বলে ঘোষণা করা হয়েছে যখন, তখন এখানে সব ধরনের বাসের দাঁড়ানোর কথা। আরটিও দফতর থেকে বাস মালিকদেরও বাস থামাতে বলা হয়েছে। তার পরেও শুনেছি বাস থামছে না। কেন এটা হচ্ছে, খোঁজ নেব।” কেন বাস থামানো হচ্ছে না? জেলা বাসমালিক সমিতির এক কর্তার বক্তব্য, “বড়জোড়া বাসস্ট্যান্ড ও ব্লক অফিসের মধ্যে দূরত্ব খুবই কম। তা ছাড়াও নিয়ম অনুযায়ী এক্সপ্রেস বাস পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে দু’বার দাঁড়ায় না।” বাস মালিক সমিতির এই যুক্তি শুনে বড়জোড়াবাসীর কটাক্ষ, যাত্রী তোলার বেলায় যেখানে সেখানে বাস দাঁড়িয়ে পড়ে। সেটা স্টপ হোক বা না হোক। কিন্তু, নামানোর সময়েই পাঁচ কিলোমিটারের অজুহাত! বিডিও-র আশ্বাস, আরটিও-র সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তিনি ফের আলোচনায় বসবেন। পাশাপাশি, বড়জোড়া বাসস্ট্যান্ডে এসবিএসটিসি বাস থামাতেও পদক্ষেপ করবেন। |