নিত্যানন্দের জ্বালায় ব্যতিব্যস্ত পুলিশ
হরমপুরে একই পরিবারে তিন মহিলা খুনের ঘটনায় ধৃত জ্যোতিষ নিত্যানন্দ দাসকে সামলাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন জেলার দুঁদে পুলিশকর্তারাও। পুলিশ সূত্রে খবর, পুলিশ হেফাজতে সে কখনও দাঁত দিয়ে নিজের জিভ কেটে ফেলার চেষ্টা করছে। কখনও দেওয়ালে নিজের মাথা ঠুকছে। সে যাতে অঘটন না ঘটিয়ে ফেলে, তা নিশ্চিত করতে তার উপর কড়া নজর রাখছে পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স।
রবিবার নিত্যানন্দকে মুর্শিদাবাদের সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এখন সে রয়েছে বহরমপুর থানাতেই। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, “তদন্তের স্বার্থে নিত্যানন্দকে পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। রবিবার সারা রাত ধরে জেরা চলেছে।” নিত্যানন্দের স্ত্রী মমতা ওরফে মানতা দাসকেও ধরে নিয়ে এসেছিল পুলিশ। গতকাল তাঁকেও দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে। সোমবার অবশ্য মানতাদেবী বাড়ি চলে যান।
পুলিশের ধারণা, এক, নিজেকে যে কোনও ভাবে জখম করে নিত্যানন্দ পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ আনতে চাইছে। দুই, সে জখম হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে। সেক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে পালানোর মতলবও তার থাকতে পারে। ক্রমাগত পুলিশি জেরার হাত থেকে বাঁচতেও নিত্যানন্দ নিজেকে আহত করার ফিকির খুঁজছে, মনে করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিত্যানন্দকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। কিন্তু জেরায় সে কখনও ভেঙে পড়েনি। বেশ কয়েকটি বিষয়ে লেটার-সহ ভাকুড়ি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ-করা নিত্যানন্দকে এর আগেও ২০১৩ সালে ডাকাতি ও বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল বহরমপুর থানার পুলিশ। ওই ঘটনায় ২৬ দিন জেল হেফাজতে থাকার পর সে জামিনে ছাড়া পায়। তারও আগে, ২০০৫-এ বধূ নির্যাতনের অভিযোগেও সে ৫৬ দিন জেল হেফাজতে ছিল। ফলে থানা, পুলিশ, জেল, জেরা নিত্যানন্দের জীবনে এই প্রথমবার নয়। আইন কানুন সম্পর্কে তার অল্পবিস্তর ধারণাও রয়েছে। আর সেই কারণেই নিত্যানন্দ ঠাণ্ডা মাথায় ‘নাটক’ করে যাচ্ছে বলে ধারণা পুলিশের।
৬ জানুয়ারি বহরমপুরের একটি ফ্ল্যাট থেকে বৃদ্ধা প্রভা দাস, তাঁর ভাইজি মধ্য চল্লিশের বিজয়া বসু ও বিজয়াদেবীর তরুণী কন্যা আত্রেয়ী বসুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ১১ জানুয়ারি শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় ‘জ্যোতিষী’ নিত্যানন্দ দাসকে। নিত্যানন্দের মা অঞ্জলিদেবী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যে, তিনি সুতির মাঠ এলাকায় যে বাড়িতে ভাড়া থাকেন, সেই বাড়ির মালিক তাঁকে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ অবশ্য গোটা বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখা হবে বলে তাঁকে আশ্বাস দিয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “কলকাতার এক মহিলার কাছে তন্ত্রসাধনা শিখেছে বলে ওই যুবক জেরায় জানিয়েছে। সাড়ে তিন হাজার টাকায় একটা শংসাপত্রও সে জোগাড় করেছে। তার তান্ত্রিকের পরিচয়পত্রও রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন বড় শহরে এবং দিল্লি-চেন্নাইয়েও চেম্বার রয়েছে বলেও তার দাবি। কোষ্ঠী বিচারের নামে তার অন্য কোথাও কুকীর্তি রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তবে বিজয়াদেবীর পরিবারের চারটে মোবাইলের হদিশ এখনও পুলিশ পায়নি। পুলিশের কাছে মোবাইলের বিষয়ে নিত্যানন্দ বিভ্রান্তিমূলক কথা বলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.