ত্রিফলায় বিদ্ধ আলু, ছড়াচ্ছে ধসা রোগ
মেঘলা আকাশ, কুয়াশা আর মাঝে মধ্যে ঝিরঝিরে বৃষ্টি এই ত্রিফলায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একাধিক ব্লকে আলু চাষে ধসা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে জেলার আলু প্রধান এলাকা গোয়ালতোড়, গড়বেতা, শালবনি ও চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের একাধিক গ্রামে ওই রোগের প্রভাবে আলুর খেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন আলু চাষি থেকে রাজ্য প্রশাসন। কৃষি মন্ত্রী মলয় ঘটক পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার বিকেলে দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে ছিলেন দফতরের সচিব সুব্রত বিশ্বাস। মন্ত্রী বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের তরফে সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। আবহাওয়ার কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। রোগ প্রতিরোধে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
শালবনির সাতপাটিতে আলুর খেতে পরিচর্যা। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, ধসা রোগের প্রকোপ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই লিফলেট-সহ গ্রামে-গঞ্জে প্রচার শুরু হয়েছে। কৃষক বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জেলা কৃষি দফতরের-সহ আধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস আধিকারী বলেন, “আবহাওয়া আলু চাষের অনুকূল না হওয়ায় আলুর ধসা রোগের প্রকোপ বাড়ার সম্ভবনা থাকছেই। আমরা রোগ প্রতিরোধে যথাসম্ভব ব্যবস্থা নিচ্ছি।” ইতিমধ্যেই শালবনি, গড়বেতা-সহ বিভিন্ন ব্লকে দেড় থেকে দু’হাজার হেক্টর আলু খেতে ওই রোগের খবর এসেছে। রাজ্যে চলতি বছরে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। গত বার তিন লক্ষ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। চলতি মরসুমে জলদি জাতের আলু কম চাষ হয়েছে। কোচবিহার, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। কৃষি দফতরের কর্তাদের মতে, প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে নাবি ধসার আক্রমণ হয়েছে। একটি বহুজাতিক কোম্পানির চুক্তি চাষ এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। পাশাপাশি, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল-সহ কিছু এলাকায় চাষ শুরুর সময় খেতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়া, আলু বীজের দাম থেকে সার সব কিছুরই দর চড়া থাকায় চাষিদের উপর তার প্রভাব পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। যেমন, এক বিঘা জমিতে এ বার আলু চাষ করতে অন্তত ২০ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। যা গত বারের তুলনায় বিঘা প্রতি প্রায় ৪-৫ হাজার টাকা বেশি। তবে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ করা গিয়েছে বলে জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর (পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৮ হাজার)।
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলায় ব্যাপক ভাবে আলুর খেতে ধসার প্রকোপ শুরু হয়েছে। কোথাও বা গাছের বৃদ্ধিও কম হচ্ছে। দফতরের কর্তাদের আশঙ্কা, অন্য জেলাগুলিতেও ওই রোগের প্রকোপ দেখা গিতে পারে। কেননা, আলুর ধসা রোগ খুব দ্রুত ছড়ায়। সব দেখে উদ্বিগ্ন কৃষি দফতর। সরকারি ভাবে লিফলেট বিলির সঙ্গে রোগ থেকে আলুর খেতকে বাঁচাতে কী কী ওষুধ স্প্রে করতে হবে তার প্রচার শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও জমিতে চাষিদের নিয়মিত নজরদারি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন দফতরের কর্তারা।
লক্ষণ
আলু গাছের পাতার কোনের দিকে কালো রঙের ভেজা ভেজা ছোপ, গাছের ডাঁটা ও পাতা ঝুলে পড়া। কোনও জমিতে এই রোগ দেখা দিলে প্রথমেই প্রতিরোধ করা না গেলে গোটা জমিতেই তা এক-দু’দিনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
 
প্রতিকার
•সেচ বন্ধ করা (একান্ত দিতে হলে অল্প জল ব্যবহার)
• ডাইমিথোমর্ফ ১ গ্রাম ও ম্যানকোজেব ২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে। অথবা ২ গ্রাম করে ফেনামিডন ও ম্যানকোজেব মিশ্রন প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে
• স্প্রে করতে হবে বিকালের দিকে, ১০-১২ দিন ছাড়া ছাড়া
• বিঘা প্রতি (৩৩ শতক) ১০০-১২০ লিটার জল মিশ্রিত ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.