বছর দু’য়েক আগে কলেজগুলিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের যে আধিপত্য দেখা যেত সেই ছবি বদলে ডানপন্থী ছাত্র সংগঠনই জেলার অধিকাংশ কলেজের ছাত্র সংসদের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায়। ২২ জানুয়ারি জেলার ১১টি কলেজ এবং ১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে। ১১টির মধ্যে ৯টি কলেজেই সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে ভোট বয়কটের ডাক দিল এসএফআই ও অন্য বামপন্থী সংগঠনগুলি। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে কোনও সংগঠন প্রার্থী দেয়নি। সন্ত্রাসের অভিযোগ তুললেও সম্প্রতি এসএফআইয়ের সাংগঠনিক শক্তিও অনেকটাই কমেছে বলেও দলের নেতারাই স্বীকার করে নিয়েছেন। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি গোস্বামী বলেন, “কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সংগঠন নেই এ কথা ঠিক। তবে, জেলার বাকি ৯টি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিস্থিতি নেই। বাইরে থেকে দুষ্কৃতী এনে হামলা হচ্ছে। ভোট বয়কটের পথে হাঁটতে হয়েছে আমাদের।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্য সংখ্যা এতটাই কমে গিয়েছে যে প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংগঠনের রাজ্য কার্জকরী সভাপতি রাহুল রায় বলেছেন, “প্রশাসনের নজরদারিতে কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। সেখানে সন্ত্রাসের কোনও বিষয়ই নেই। মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি কলেজে যদি বামেরা লড়তে পারে অন্যগুলিতে কেন লড়তে পারছে না সেটা সকলেরই বোঝা উচিত।”
আগামী ২২ জানুয়ারি কোচবিহার শহরের এবিএনশীল কলেজ, বিটি কলেজ, কোচবিহার কলেজ সহ শীতলখুচি, দেওয়ানহাট, মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা, বক্সিরহাট, তুফানগঞ্জ, দিনহাটা, হলদিবাড়ি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে। ৬ ও ৭ জানুয়ারি মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এর পরেই মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি বাদে বাকি ৯টি কলেজে ভোট বয়কটের ডাক দেয় এসইউসি’র ছাত্র সংগঠন ডিএসও সহ অন্য দলগুলি। ডিএসও’র জেলা সম্পাদক মৃণাল রায় বলেন, “আমরা মনোনয়ন পত্র তুলতে গিয়ে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের হাতে আক্রান্ত হয়েছি।” ছাত্র ব্লকের জেলা সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও বলেন, “সর্বত্র আমরা হামলার মুখে পড়ছি।”
জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “কোনও অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেব।” সম্প্রতি ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের বড় অংশ তৃণমূলে যাওয়ায় শহরের এবিএন শীল কলেজ, বিটি কলেজ, কোচবিহার কলেজের ছাত্র সংসদের দখল তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের হাতে চলে যায়। মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি দু’টি কলেজে অবশ্য সংগঠনের জোরেই বামেরা লড়াই করছে। |