দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলে কাজ করার সময়ে মই ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। গুরুতর আহত অবস্থায় তিন যুবক হাসপাতালে ভর্তি। দুর্ঘটনাটি ঘটে রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ যাদবপুর থানা এলাকার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি শপিং মলে।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম অশোক হালদার (৩২)। আহতদের নাম বিশ্বজিৎ নাইয়া (১৯), দেবব্রত হালদার (১৮) এবং ভগবান সর্দার (১৮)। তাঁরা সকলেই একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে ওই মলে কাজ করছিলেন বলে জানিয়েছেন মল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন আনোয়ার শাহ রোডের ওই শপিং মলের ভিতরে কাজ করছিলেন ওই চার জন। তাঁরা মই লাগিয়ে ৪ তলা উঁচু সিলিং-এ বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং লাগাচ্ছিলেন। পুলিশের অনুমান, সেই সময়ে কোনও ভাবে মইটি ভেঙে যায়। ফলে কাজ করতে থাকা চার জনই একতলার মেঝেতে ছিটকে পড়েন। চোখের সামনে ওই ঘটনা দেখে খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শপিং মলের কর্মী এবং ক্রেতারা। মল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকর্মীরা এসে পরিস্থিতি সামলান।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে চার জনকেই আনোয়ার শাহ রোডের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা অশোককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকি আহতদের সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, মইয়ের কিছুটা অংশ ছিটকে গিয়ে তিন তলার একটি কাপড়ের দোকানে লাগে। দোকানটির কাচ ভেঙে যায়। ভাগ্যক্রমে ঘটনার সময়ে শপিং মলে লোকজন অপেক্ষাকৃত কম ছিল, তা না হলে আরও বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাফরুল্লা আহমেদ বলেন, “আচমকা বিকট আওয়াজ শুনে তাকিয়ে দেখি, এক তলায় সবাই ছুটোছুটি করছে। মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চার জন পড়ে রয়েছে আর রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ।” তাঁর অভিযোগ, কাজ চলাকালীন কর্মীদের জন্য কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না।
শপিং মলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হতাহতদের পরিবারকে সব রকম সাহায্য করা হবে বলে শপিং মল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তবে কর্মীদের জন্য কেন নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা ছিল না এবং মলটি চলাকালীন কেন কাজ চালানো হচ্ছিল, সে বিষয়টি নিয়ে মল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, গাফিলতির অভিযোগে ওই বেসরকারি সংস্থা এবং মল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা এ দিন বলেন, “তদন্তে গাফিলতি প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |